Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গৃহবধু আকলিমা হত্যা মামলার রহস্য উদঘটন: দুই আসামী গ্রেফতার

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২০, ৫:১৮ পিএম

নীলফামারীর সৈয়দপুরে গৃহবধু আকলিমা হত্যা মামলার রহস্য উদঘটন করেছে পুলিশ। গণধর্ষন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে আকলিমাকে অভিযুক্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৯ আগস্ট) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম পিপিএম। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ২৩ আগস্ট সৈয়দপুর থানার কামারপুকুর ইউনিয়নস্থ মৎস্য খামারের পিছনে বৈদ্যুতিক টাওয়ারের নিচে অজ্ঞাতনামা একজন মহিলার লাশ। এ বিষয়ে জানতে পেরে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে যায় সৈয়দপুর থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান করে এক পর্যায়ে জানতে পারে গৃহবধুর নাম আকলিমা আক্তার। সে কিসামত কামারপুকুর গ্রামের মৃত আবেদ আলীর মেয়ে। আকলিমার লাশের সাথে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয় এই লিখা সংবলিত একটি চিরকুট পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে আকলিমার মা আকলিমার স্বামী শরিফুল ইসলাম কে সন্দেহ করে তার নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। লাশের গলায় রশি ও জব্দকৃত আলামত পর্যালোচনা করা প্রাথমিকভাবে কোনো ধারণা করা সম্ভব হয় নি।
তিনি জানান, আকলিমার স্বামী পরকিয়া প্রেমে আসক্ত ছিলেন এবং প্রতিদিনেই আকলিমা কে মারতো। গত ২২ আগষ্ট আকলিমার স্বামী তার সন্তানদেরকে নিজের কাছে রেখে বাসা বের করে দেয়। বাবার বাড়িতেও স্থান না পেয়ে রাতে রাস্তায় অবস্থান নেয় আকলিমা। আকলিমাকে দেখে খাবার ও টাকা দিয়ে লোভ লাগিয়ে সাহায্যের কথা বলে রাতে মৎস খামারের কাছে কামারপুকুর এলাকার কাঙ্গালুপুর এলাকার আনারুল ইসলাম, মোঃ শুভ ও মোঃ হ্নদয় আকলিমাকে একেরপর এক ধর্ষন করতে থাকে।  একাধিকবার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আকলিমা বাধা দিতে থাকলে আনারুল ও শুভ  মাছ ধরার বালতির সাথে বাধানো রশি দিয়ে আকলিমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেএবং ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আনারুল তার নিজ হাতে একটি ডার্বি কোম্পানীর সিগারেটের রাংতা'য় সুইসাইড নোট লিখে তা আকলিমার কোমরে গুজে দিয়ে হত্যাকান্ডটিকে আত্মহত্যা হিসাবে চালিয়ে দেওয়ার অপকৌশল করে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, লাশের সাথে পাওয়া চিরকুটের লেখার সাথে আকলিমা ও তার স্বামীর হাতের লেখা মিলানো হলে কোনো মিল পাওয়া যায় না পরে পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে রাখালের বেশে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হয়ে ডার্বি  সিগারেট  খায় এমন প্রায় ৬০/৭০ জনকে শনাক্ত করে এবং তাদের হাতের লেখার সাথে চিরকুটের হাতের লিখা মিলায়। ঘটনার এক পর্যায়ে আনারুলের হাতের লিখার সাথে চিরকুটের হাতের লিখা মিলে যায়। এর পরই বেরিয়ে আসে গৃহবধূ আকলিমাকে নির্মমভাবে হত্যার মূল ঘটনা। এই ঘটনায় পুলিশ আসামী আনারুল ও শুভকে গ্রেফতার করেছে এবং তারা বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন । অপর আসামী মোঃ হ্নদয় কে ধরার জন্য অভিযান চলছে। এছাড়াও আকলিমার স্বামী শরিফুল ইসলাম (২৮)কে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রহস্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ