Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাহুল গান্ধীকেই সভাপতি পদে চাইছে কংগ্রেসে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০২০, ৪:৫৩ পিএম

বুধবারই কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী জানিয়েছিলেন, পরিবারের বাইরের কেউ কংগ্রেস সভাপতি পদে বসলে, তার কোন আপত্তি নেই। তার ভাই ও সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীও এমনটা চান বলে জানয়েছিলেন তিনি। তবে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা যা-ই বলুন, কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, দলের সভাপতি পদে এখন রাহুল গান্ধীকেই প্রয়োজন।

যে বইয়ে প্রিয়াঙ্কার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে, সেই একই বইয়ে সাক্ষাৎকারে রাহুল বলেছেন, কংগ্রেসের হয়ে লড়াই করতে বা দলকে মজবুত করার জন্য তাঁর সভাপতি পদের প্রয়োজন নেই। বিষয়টি সামনে আসার পর মঙ্গলবার রাত থেকেই দলে জল্পনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, সত্যিই কি গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে শীর্ষনেতৃত্বে দেখা যাবে? নাকি কাউকে সভাপতি করে গান্ধী পরিবারই রিমোট কন্ট্রোল-এ দল চালাবে? ইউপিএ-আমলে মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী হলেও সনিয়া আড়াল থেকে সরকারের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।

এক বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির নৈতিক দায় নিয়ে পদত্যাগ করে রাহুল গান্ধী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বলেছিলেন, এ বার গান্ধী পরিবারের বাইরের কারও সভাপতির দায়িত্ব নেয়া উচিত। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও জানিয়েছেন, রাহুলের সঙ্গে তিনি একমত। গান্ধী পরিবারের বাইরে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো অনেক যোগ্য নেতা রয়েছেন।

কিন্তু বুধবার দুই কংগ্রেস নেতা, রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা ও শক্তিসিন গোহিল জানিয়ে দিয়েছেন, দলের নেতা-কর্মীরা রাহুলকেই সভাপতি পদে চান। ২০১৯-এ লোকসভায় হারের দায়িত্ব নিয়ে তিনি ইস্তফা দিলেও, গত এক বছরে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তার অদম্য লড়াই, করোনার বিপদ, চীনের আগ্রাসন নিয়ে তার পূর্বাভাস প্রমাণ করেছে, একমাত্র তিনিই কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। সুরজেওয়ালা-গোহিল, দু’জনেই রাহুল শিবিরের সদস্য বলে পরিচিত। দু’জনের মন্তব্যে স্পষ্ট, রাহুল-প্রিয়াঙ্কা প্রকাশ্যে যা-ই বলুন, রাহুল শিবির তাকেই সভাপতি পদে চান। এআইসিসি-র এক নেতার মন্তব্য, ‘কোনও বাধা তো নেই। অনর্থক দেরি করে শীর্ষ নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি করে রাখা হচ্ছে কেন?’ শশী তারুরের মতো নেতারা ইদানীং প্রকাশ্যে বলছিলেন, দ্রুত সভাপতি পদে নির্বাচন হোক। বুধবার এআইসিসি-র সম্পাদক ভি এম রেড্ডি রাহুলকে চিঠি লিখে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মানুষের ইচ্ছায় কান না-দেয়া আপনার স্বভাববিরোধী। দলের নেতা-কর্মীরা যখন আপনাকে সভাপতি পদে চান, তখন কি আপনার সামনে অন্য কোনও বিকল্প রয়েছে?’

কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘সনিয়াজি সভানেত্রী থাকলেও রাহুলই পিছন থেকে দলের কাজকর্ম সামলাচ্ছেন। রাজস্থানের সঙ্কটে তা ফের স্পষ্ট। কে সি বেণুগোপাল, অজয় মাকন, সুরজেওয়ালার মতো রাহুলের আস্থাভাজন নেতাদের দায়িত্ব, সক্রিয়তা, গুরুত্ব বেড়েছে। এখন রাহুল ছাড়া অন্য কারও পক্ষে দায়িত্ব নেওয়াও মুশকিল।’ রাহুল শিবিরের মতে, ‘রাহুল ছাড়া আর কারও গোটা কংগ্রেসে গ্রহণযোগ্যতা নেই।’

বিতর্কে পানি ঢেলে দলের প্রধান মুখপাত্র সুরজেওয়ালা দাবি করেন, প্রিয়াঙ্কার পুরনো সাক্ষাৎকার নিয়ে সংবাদমাধ্যমে হইচইয়ের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে। সাক্ষাৎকারটি নেয়া হয়েছিল ২০১৯-এর ১ জুলাই। এক বছর পরে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা ফের রাহুলকেই সভাপতি পদে চাইছেন। সুরজেওয়ালা বলেন, ‘গণতন্ত্রের উপর মোদি-শাহের হামলাকে চ্যালেঞ্জ জানানো ও তার বিরুদ্ধে নির্ভীক লড়াইয়ের সময় এটা। লাখ লাখ কংগ্রেস নেতা-কর্মীর সেই লড়াইয়ে রাহুল নেতৃত্ব দিয়েছেন। গোটা দেশেরই এই নির্ভীক ও অদম্য সাহসীকে প্রয়োজন।’

এআইসিসি-র মঞ্চ থেকে গোহিলও বলেন, ‘গান্ধী পরিবার কখনও পদ বা ক্ষমতা চায়নি। সেটা তাদের মহত্ব। ২০০৪ সালে সনিয়ার নেতৃত্বে দল জিতলেও তিনি প্রধানমন্ত্রী হননি। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে মনমোহন সিংহ রাহুলকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। রাহুল নেননি। ২০১৯ সালে দলের হারের নৈতিক দায় নিয়ে ছেড়েছেন পদ। রাহুল-প্রিয়াঙ্কা মনে করতেই পারেন যে, অ-গান্ধী কেউ সভাপতি হওয়া উচিত। কিন্তু সভাপতি কে হবেন, সেটা ঠিক করবে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি এবং এআইসিসি। সেই সিদ্ধান্ত সকলে মেনে নেবেন।’ সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ