মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মধ্যপ্রাচ্যয়ের দুই দেশ ইহুদিবাদি ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ‘শান্তি চুক্তি’ হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের মুখে এটি তার জন্য অনেক বড় একটি সাফল্য।
টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আজ বিরাট সাফল্য! আমাদের দুই দারুণ বন্ধু ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক সাফল্য মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরার পথ প্রশস্ত করবে।’ ট্রাম্পের টুইটের পরই ইসরায়েল এবং আমিরাত দুই দেশের পক্ষ থেকেই এই বিষয়ে নিশ্চিত করে যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপের ফলে মিশর ও জর্ডানের পর তৃতীয় আরব দেশ হিসাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চলেছে। এর ফলে সম্ভবত দুই দেশে তৈরি হবে দূতাবাস, থাকবেন দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা। স্থাপিত হবে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিমান যোগাযোগ। এদিনের যৌথ বিবৃতি অনুসারে, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েল 'আগামী সপ্তাহগুলিতে' সরাসরি বিমান যোগাযোগ, সুরক্ষা, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি, পর্যটন ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষর করবে। দুই দেশ করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলাতেও অংশীদার হবে।
নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এই বিরল কূটনৈতিক জয় ট্রাম্প-কে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। এর আগে তিনি আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধের অবসান করার চেষ্টা করেছিলেন। তার সেই প্রচেষ্টা এখনও ফলপ্রসু হয়নি। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অদূর ভবিষ্যতেও শান্তি ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। ভারত-পাকিস্তান কিংবা ভারত-চীন দ্বন্দ্ব মেটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেও সুযোগ পাননি। তাই এই বিরল জয়ের পর সাংবাদিকদের মজা করে তিনি বলেছেন, এই চুক্তিটিকে তিনি ‘ডোনাল্ড জে ট্রাম্প চুক্তি’ হিসাবে অভিহিত করতে চান।
শুধু ট্রাম্পেরই নয়, এতে করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর টলমল সরকারও হালে কিছুটা বাতাস পেল। বহু বছর ধরে নেতানিয়াহু গর্ব করেন, প্রকাশ্যে স্বীকৃত না হলেও তার সরকারের সঙ্গে আরব দেশগুলির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এই ঘটনায় তিনি সেই দাবি কিছুটা হলেও স্বীকৃতি পেল। তবে ফিলিস্তিনিদের ওয়েস্টব্যাঙ্ক ও অন্যান্য অধ্যুষিত অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন দেয়ার দাবি তাকে মানতে হয়েছে।
তবে এতে ফিলিস্তিনের জন্য লাভের চেয়ে ক্ষতিই হল বেশি। স্বায়ত্তশাসন পেলেও তারা আরব দেশগুলিকে বারবার বলেছিল, যতক্ষণ না স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি শান্তি চুক্তি হয়, ততক্ষণ যেন তারা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করে। এ বিষয়ে সিনিয়র ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা হানান আশ্রাবি বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি নেতৃত্বকে অবহিত করা হয়নি এবং এই ঘটনা সম্পূর্ণ তাদের অগোচরে ঘটেছে।’ তিনি বলেন, ‘দখলদারিত্বের শুরু থেকেই ইসরায়েল অবৈধভাবে ফিলিস্তিনের সাথে যা করেছে, তা গোপন করার জন্য তারা পুরস্কৃত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পেছনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোপন স্বার্থ রয়েছে।’
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধরত সংগঠন হামাস আমিরাতের এই চুক্তিটিকে ‘আমাদের জনগণের পিছনে ছুরিকাঘাত’ বলে অভিহিত করেছে। ইরানের অভিজাত বিপ্লবী গার্ডের সাথে মুখপত্র তাসনিম এজেন্সি চুক্তিটিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে এতদিন পর্যন্ত উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। তবে ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বাড়াচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর নেতানিয়াহু টুইট করেছেন, এক ঐতিহাসিক দিন বলে।
যুক্তরাষ্ট্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল ওতাইবা বলেছেন, এটি ওই অঞ্চলে কূটনীতির বিজয়। তিনি একে আরব-ইসরায়েল সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে বর্ণনা করে বলেন, এর ফলে উত্তেজনা কমবে এবং অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। এটি ইসরায়েলের সঙ্গে তৃতীয় কোন আরব রাষ্ট্রের শান্তি চুক্তি। এর আগে মিশর ১৯৭৯ সালে এবং জর্ডান ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে। সূত্র: ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট, আলজাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।