মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট মাদুরোর পর দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তি মনে করা হয় যাকে, সেই ডিওসডাডো ক্যাবেলো ২৮ মার্চ তার নিজের সাপ্তাহিক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ভয়ংকর কিছু তথ্য ফাঁস করলেন। কলম্বিয়ায় নির্বাসিত ভেনেজুয়েলানদের ক্যাম্পগুলোর কিছু তথ্য তুলে ধরলেন, সেখানে ছিল ষড়যন্ত্রে যুক্ত তিন আমেরিকানের নাম। পুরো ষড়যন্ত্রটি উন্মোচিত হয়ে গেল। তবে ততদিনে এই ক্যাম্পগুলোতে যেসব লোক ছিলেন, তারা সেখান থেকে অন্যত্র সরে গেছেন। তারা একটি প্রত্যন্ত উপক‚লীয় এলাকা গুয়াজিরে এমন এক জায়গায় গেলেন, যার সঙ্গে আছে ভেনেজুয়েলার সীমান্ত। নিকোলাস মাদুরোর সরকার যে এই ষড়যন্ত্রের কথা জেনে গেছে, সেটা কি তারা টের পেয়েছিলেন? ভেনেজুয়েলার লোকজন নিজেদের মধ্যে খুব ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখে। তবে এই ক্যাম্পে কেবল দায়িত্বে থাকা লোকদের কাছেই মোবাইল ফোন ছিল। একটি সূত্র বলছে, অধিনায়ক আন্তনিও সেকুই জানতেন ক্যাবেলোর টেলিভিশন অনুষ্ঠানে সব ফাঁস করে দেয়া হয়েছে। নিকোলাস মাদুরোর সরকারের মন্ত্রীরা এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে যেসব মন্তব্য করেছিলেন, সেসবও তিনি জানতেন। তবে এরপরও এই বলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তার সমর্থকদের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছিলেন যে, সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আছে। এই অভিযান যে এখন বানচাল হওয়ার ঝুঁকিতে আছে, সেটা জর্ডান গাউড্রু কি জানতেন? সেটা স্পষ্ট নয়। তিন আমেরিকানের একজনও স্প্যানিশ ভাষা জানতো না। একটি সূত্র বলছে, কলম্বিয়ায় লুক ডেনম্যান এবং আইরান বেরির কাছে একটি স্যাটেলাইট ফোন ছিল। তারা গাউড্রুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো। জর্ডান গাউড্রু তাদের বলতো, আরও অনেক সাবেক মার্কিন সেনা এই অভিযানে অংশ নিতে আসবে। আর জর্ডান গাউড্রু যদি সত্যিই জেনে গিয়ে থাকে যে নিকোলাস মাদুরোর সরকার তাদের ষড়যন্ত্রের খবর পেয়ে গেছে, হয়তো সেটি তিনি তার বন্ধুদের বলেননি। সূত্র বলছে, আর্থিক সঙ্কটের কারণে তার মনোযোগ বিক্ষিপ্ত ছিল। কলম্বিয়ায় যে অস্ত্রের চালানটি ধরা পড়ে গিয়েছিল, সেটির জন্য তখনো তার ৩০,০০০ ডলার দেনা ছিল। এপ্রিলের শেষে তার আইনজীবীরা হুয়ান গুয়াইদোর কমিশনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে ১৫ লাখ ডলার ফি পরিশোধের দাবি জানায়। ঘটনা যেরকমই হোক, ‘অপারেশন গিডিওনে’র বিস্তারিত যে নিকোলাস মাদুরোর সরকারের হাতে পৌঁছে গেছে, সেটা বিদ্রোহীরা জানুক বা না জানুক, এই অভিযানটি যে একেবারেই লাগামহীন তা স্পষ্ট। অভিযানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কিছু সূত্রের মতে, বিদ্রোহীরা উভচর তরীতে করে ভেনেজুয়েলার উপক‚লে গিয়ে নামার পর কয়েকদিন কিছু গোপন আস্তানায় থাকার কথা ছিল। এরপর তারা রাজধানী কারাকাসের দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা। রাজধানীতেও তারা কয়েকদিন ঘাপটি মেরে থাকবে। এরপর লক্ষ্যে হামলা চালাবে। তাদের টার্গেট: প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, সামরিক বন্দীশালা এবং ভেনেজুয়েলার গোয়েন্দা সংস্থার সদর দফতর। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এবং তার ঘনিষ্ঠ শীর্ষ ব্যক্তিদের আটক করা তাদের লক্ষ্য। এখানে ভুল হওয়ার কোন কি সুযোগ আছে? দেখা গেল, সব হিসেব-নিকেশই আসলে ভুল ছিল। ১ মে শুক্রবার সন্ধ্যে ছয়টায় ১১ জনকে বহনকারী একটি নৌকা কলম্বিয়ার উপক‚ল থেকে ভেনেজুয়েলার দিকে যাত্রা শুরু করলো। তাদের কাছে ছিল আটটি রাইফেল। দশ মিনিট পর দ্বিতীয় একটি নৌকা ছাড়লো। এটিতে ছিল ৪৭ জন। আর ছিল দুটি রাইফেল। ক্যারিবিয়ান সাগর ধরে এক ঘন্টা চলার পরই একটি নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেল। অথচ তখনো বহু ঘণ্টার পথ বাকী। সমুদ্র অশান্ত। অনেকে এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে গেছে। ভেনেজুয়েলার উপক‚লীয় শহর মাকাটোতে তখন নিকোলাস মাদুরোর সশস্ত্র বাহিনী অপেক্ষা আছে। ৩রা মে, রোববার ভোরে যখন আটজনকে বহনকারী একটি নৌকা সেখানে পৌঁছালো, তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল ভয়াবহ পরিণতি। দ্বিতীয় নৌকাটি ছিল অনেক পেছনে। তখন এটির জ্বালানি প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। সিদ্ধান্ত নেয়া হলো বেশিরভাগ লোককে তীরে নামিয়ে দেয়া হবে যাতে তারা পালাতে পারে। অধিনায়ক আন্তনিও সেকুই, দুই আমেরিকান এবং অন্য কজন নৌকায় থেকে গেল। তারা শিগগিরই ধরা পড়লো। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।