বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ কামালের মক্কার মসজিদ সংস্কারের ১৫ বছর পরে, সৌদি সরকার তাকে মদীনার পবিত্র মসজিদে অনুরূপ মার্বেল স্থাপন করতে বলে। এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ কামাল বলেন, যখন বাদশাহ আমাকে নবীজির মসজিদটিকেও একই মার্বেল দিয়ে ঢাকতে বললেন, তখন আমি খুব বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম, কারণ এই ধরণের মার্বেল পাওয়ার জন্য পৃথিবীতে কেবলমাত্র একটি জায়গা ছিল। এটি ছিল গ্রীস এবং আমি এরইমধ্যে তার অর্ধেক কিনে নিয়েছি।
এরপর তিনি গ্রিসের একই সংস্থায় গিয়ে সিইওর সাথে দেখা করেছিলেন এবং তার প্রয়োজনের পরিমাণ সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। সিইও বলেছিলেন যে, ১৫ বছর আগে তিনি চলে যাবার পরে এটি বিক্রি করা হয়ে গিয়েছিল। এতে কামাল খুব মন খারাপ করেন। তিনি সভা ছেড়ে চলে গেলেন এবং অফিস থেকে বেরোনোর সময় তিনি অফিস সেক্রেটারির সাথে দেখা করলেন এবং তাকে অনুরোধ করলেন বাকি পরিমাণ মার্বেল কিনেছেন তার অবস্থান সম্পর্কে জানাতে। জবাবে ওই ব্যক্তি বলেছিলেন যে এত পুরানো রেকর্ড থেকে জানা কঠিন হবে। তবুও কামালের অনুরোধে তিনি পুরানো রেকর্ড অনুসন্ধান করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। কামাল তাকে হোটেলের ঠিকানা ও নম্বর দিয়েছিলেন এবং পরের দিন তার সাথে আবার দেখা করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। অফিস ছাড়ার সময় তিনি ভাবছিলেন; আমি কেন জানতে চেয়েছি কে কিনেছে? নিজেকে তিনি নিজেই বলছিলেন, আল্লাহ দারুণ কিছু করবেন। পরদিন, বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে, কামাল একটি ফোন কল পেয়েছিলেন যাতে বলা হচ্ছিল যে তিনি ক্রেতার ঠিকানা পেয়েছেন। কামাল বহু বছর পেরিয়ে যাওয়ায় ক্রেতার ঠিকানা নিয়ে কী করবেন ভেবে ধীর গতিতে তাদের অফিসে গেলেন। কামাল অফিসে পৌঁছাতেই সেই সেক্রেটারি তাকে সেই সংস্থার ঠিকানা দিলেন যারা বাকি মার্বেল কিনেছিল। মুহ‚র্তেই তার হৃদয় চঞ্চল হয়ে পড়ল যখন তিনি জানতে পারেন মার্বেল কেনা সংস্থাটি সৌদি একটি সংস্থা।
কামাল সেইদিনই সৌদি আরব চলে গেলেন। সৌদি পৌঁছে তিনি সরাসরি মার্বেল কেনার সংস্থার অফিসে গিয়ে ডিরেক্টর অ্যাডমিনের সাথে দেখা করলেন। তার কাছে বহু বছর আগে গ্রীস থেকে যে মার্বেল কিনেছিলেন তা দিয়ে কি করেছিলেন তা জানতে চান। তিনি বললেন, আমার মনে নেই। তিনি সংস্থাটির স্টক রুমে গ্রিসের সাদা মার্বেল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে তারা তাকে বলেছিলেন যে সমস্ত পরিমাণ রয়ে গেছে, কখনো ব্যবহার হয়নি। কামাল শিশুর মতো কাঁদতে শুরু করলেন। এরপর পুরো গল্পটি ওই সংস্থার মালিককে শোনালেন। কামাল ওই সংস্থার মালিককে একটি ফাঁকা চেক দিয়ে তিনি যত দাম চান তা লিখতে বললেন। মালিক যখন জানতে পারলেন যে, মার্বেলটি মহানবী (সা.) এর মসজিদটির জন্য, তখন তিনি বলেছিলেন আমি একটি রিয়ালও গ্রহণ করব না। আল্লাহ আমাকে এই মার্বেল পাথর আমদানি করে ভুলে যেতে এবং এ পাথর তাঁর প্রিয় নবীজির মসজিদে লাগাতেই সৃষ্টি করেছেন। এখানে সবই অলৌকিক ইশারায় হচ্ছে। অতএব, এর কোনো বিনিময় বা প্রফিট নেয়া আমার জন্য চরম অন্যায় বলে আমি মনে করি। এটি আমি কেবল আমার আল্লাহ কে খুশি করার জন্যই করব। নবীজি সা. এর মসজিদে এ পাথর ব্যবহৃত হবে, এটাই আমার জীবনের বড় পাওয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।