Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা বন্যা থামাতে পারেনি ঈদ আনন্দ কোরবানি

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২০, ১১:৩৫ এএম | আপডেট : ২:৪৬ পিএম, ২ আগস্ট, ২০২০

মহামারি করোনা ও উজানের পানিতে সৃষ্ট বন্যা কোনরূপ থামাতে পারেনি ঈদ আনন্দ কোরবানি। ধারণার থেকে আশঙ্কা ছিল করোনা ও বন্যার কারণে মানুষের মনে শান্তি নেই আর্থিক অবস্থাও ভালো নয় তাই ঈদ আনন্দ কোরবানি তেমন হবে না। কিন্তু বাস্তবে সবকিছু ছাপিয়ে করোনার ভয়কে জয় করে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপিত হয়েছে। কোরবানি মোটেও কম হয়নি। কোরবানিকে ঘিরে অর্থনৈতিক লেনদেন বেড়ে যায় বহুমাত্রায়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ আব্দুল জব্বার শিকদার রোববার (২আগস্ট) জানান, করোনা ও বন্যার কারণে এবারই প্রথম কোরবানির পশুহাট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পর্যন্ত মিটিং হয়েছে। এর আগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে মিটিং হতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেছেন। পশুহাটে মেডিকেল টিম ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিক দুরত্ব বজায় রেখে কোরবানির পশুহাটে বেচাকেনা হয়েছে। কোরবানির পশুহাটে জনসমাগম এড়াতে অনলাইন বেচাকেনার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি বললেন ইনশাআল্লাহ আমরা সফল হয়েছি। ভালোভাবে পার করতে পেরেছি কোরবানি। আমি বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে দেখেছি এবার সবখানেই ভালো মতো কোরবানি হয়েছে। এবার অনেকেই মাদরাসা এতিমখানায় গরু ও ছাগল কোরবানি দিয়ে সম্পুর্ণই তাদের মাঝে বিতরণ করেছে।

তার কথা, সারাদেশে ১ কোটি ১৮লাখ ৯৩হাজার গরু ও ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তত রাখা হয়েছিল। গতবার এর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৬ লাখ গরু ও ছাগল। এবার তুলনামূলক বেশি হয়েছে। কোরবানির আগের রাতে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে বেচাকেনা হয়। শেষদিকে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় গাজীপুরসহ ঢাকার নিকটবর্তী স্থান থেকে গরু ও ছাগল আমদানি করা হয়। প্রাথমিক তথ্যমতে, সব গরু ও ছাগলই বিক্রি হয়েছে মাঠপর্যায়ের প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান।

সাদেশের চিত্র, শহর ও গ্রামে ছিল ইতিহাসে এই প্রথম ভিন্ন কোরবানি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিক দুরত্ব বজায় রেখে ঈদগাহের বদলে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে। মসজিদের বাইরেও শহরের বড় বড় ফ্লাটে এবং গ্রামের ফাঁকা ময়দানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ঈদের জামাত হয়েছে। সে এক অভূতপুর্ব ব্যতিক্রম দৃশ্য।

ঈদের আনন্দে কোলাকুলি ও হাত মিলানো হয়নি ঠিকই কিন্তু নির্মল আড্ডা আনন্দঘন পরিবেশে মানুষের কেটেছে ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন ও পরদিন। টানা তিনদিন পুরোমাত্রায় আনন্দের ফোয়ারা ছোটে ঈদকে ঘিরে। একইভাবে কোরবানির পশু জবাই ও গোশত বিতরণ কম হবার যে আশঙ্কা ছিল। তাও মিথ্যা করে দিয়ে সতর্ককতার সাথে শহর ও গ্রামে সমানতালে গরু ও ছাগল কোরবানি হয়েছে। উপরন্তু আগের চেয়ে দান খয়রাতের মাত্রা বেড়ে যায়। এসব কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।

দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো থেকে পাঠানো চিত্রে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উল আযহা উদযাপিত হয়েছে। দারুণ মানসিক শক্তি নিয়ে যে যার সাধ্যমতো গরু ও ছাগল কোরবানি দিয়েছেন। কোথাও কোন সমস্যা কিংবা কো সংকট হয়নি। গরীব দুস্থরা কোরবানির গোশত নেওয়ার জন্য সাধারণত অপেক্ষা করে থাকেন। করোনার মধ্যেও প্রচুর কোরবানির গোশত বিলি হয়েছে।

চট্টগ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উল আযহা উদযাপন
চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, করোনাকালেও উৎসবমুখর পরিবেশে বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদ উল আযহা উপযাপিত হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঈদের জামাত শেষে চাটগাঁবাসী মহান আল্লাহর সন্তোষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি দেন। এরপর গরীব, মিসকিন অসহায় মানুষের মাঝে কোরবানির গোশত বিলি বণ্টন করেন তারা। আত্মীয় স্বজন পাড়া-প্রতিবেশিদের মাঝেও গোশত বিতরন করেন নগরবাসী। চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী পরিবারে একাধিক পশু কোরবানি এবং আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে কোরবানির পশু উপহার পাঠানোর রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। এবারও তার ব্যতিক্রম ছিলো না।

এবার কোরবানি ঈদের অনেক থেকেই মহল বিশেষ নেতিবাচক ধারণা দিতে থাকে। তারা প্রচার করে এবার কোরবানি কম হবে। কিছু মিডিয়াও এতে সুর মিলায়। এর প্রভাবে পশুরহাটে শেষ দিকে গবাদি পশুর সঙ্কট দেখা দেয়। তবে গ্রামের হাট থেকে এ সঙ্কট পূরণ করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বারের চেয়ে এবার আরো বেশি পশু কোরবানি হয়েছে। করোনা মহামারিতে ভিন্ন এক পরিবেশ-পরিস্থিতিতে চট্ট্গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা একাধিক গরু কোরবানি দিয়ে গোশত দরিদ্রদের মাঝে বিলি বণ্টন করেছেন। কোরবানি উপলক্ষ্যে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক ইনকিলাবকে বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বেশি পশু কোরবানি হয়েছে। গতবার সাত লাখ ৩৫ হাজার গরু, ছাগল ও মহিষ কোরবানি হয়। এবার এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি ছিলো। আগামী দুই একদিনের মধ্যে কত পশু কোরবানি হয়েছে তার হিসাব চূড়ান্ত করা যাবে।
তিনি বলেন, এবার চট্টগ্রামের কৃষক ও খামারিদের কাছে প্রায় পৌনে সাত লাখ গবাদি পশু মজুদ ছিলো। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও বিপুল সংখ্যক গবাদি পশু এসেছে। তবে শেষদিন নগরীর পশুরহাটে কিছুটা সঙ্কট দেখা দিলেও গ্রামের হাটে পশুর ঘাটতি ছিলো না।

অনেকে গ্রামের হাট থেকে গরু কিনে এনে কোরবানি দিয়েছেন। জানা গেছে করোনা সংক্রমণের কারণে এবার অনেকে গ্রামের বাড়ি যাননি। তারা নগরীতেই পশু কোরবানি দিয়েছেন। ফলে অন্য বছরের চেয়ে এবার বেশি পশু কোরবানি হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ ও জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে এবার স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত বিশেষ করে ভিড় জটলা এড়াতে গ্রামে ব্যাপকহারে পশুর হাট বসানো হয়। জেলা এবং মহানগরীতে এবার স্থায়ী অস্থায়ী মিলে ২৩৩টি পশুর হাট বসে। এসব হাটে ব্যাপক হারে গবাদি পশু বিক্রি হয়েছে। দামও ছিলো ভাল। এতে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ে খুশি হয়েছে।

ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে ব্যাপক হার গরু পালন শুরু হয়। চট্টগ্রামের প্রায় ৫ হাজার ছোট বড় খামারের পাশাপাশি কৃষকের বাড়িতেও গরু লালন পালন শুরু হয়। আবার করোনার কারণে গত কয়েক মাস মেজবান, বিয়ে-শাদিসহ সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় গরু জবাইও বন্ধ রয়েছে। ফলে কোরবানিতে গরুর ঘাটতি ছিলো না। তবে অপ্রচার আর অব্যস্থাপনার কারণে পশুরহাটে শেষ দিকে গরুর সঙ্কট দেখা দেয়। এতে বিপাকে পড়েন অনেক কোরবানিদাতা।

রাজশাহীতে ঈদুল আযহা
রাজশাহী ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা রেজাউল করিম রাজু জানান, রাজশাহীতে ধর্মীয় উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ নামাজ আদায় ও স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে কোরবানীও করেছে।

কোরবানী গোশত নেয়ার জন্য দু:স্থ্য মুনষেরা এবাড়ি ওবাড়ি ছুটোেছুটি করে। বরাবরের মত এবারও বিকেলে নগরীর বাসটার্মিনাল, রেলস্টেশন, কামরুজ্জামান চত্তর রেলভবনের সামনে বসেছিল কোরবানীর মাংশের বাজার। ভীড়ও মন্দ ছিলনা। নি¤œবিত্তরা সংগৃহিত মাংশ নিজেদের জন্য খানিকটা রেখে বাকিটা বিক্রি করে এসব স্থানে। অনেক ক্রেতা ছিল পাচমিশালি মাংশের স্বাদ নেয়ার জন্য এসব কিনে। এছাড়াও বিকেলে মানুষ ঘুরতে বেড়ায় পদ্মার তীর, পার্কে ভীড় জমায়।

যশোর অঞ্চলে করোনার ভয়কে জয় করে শহর গ্রামে কোরবানি
যশোর ব্যুরো থেকে স্টাফ রিপোর্টার শাহেদ রহমান জানান : করোনাভাইরাস ঈদের আনান্দ থামাতে পারেনি। বরং এবার কোরবানিতে শহর ও গ্রামে ছিল ভিন্ন দৃশ্য। আনান্দঘন পরিবেশে প্রত্যেকেই সতর্কতা অবলম্বন করে কোরবানি দেন। ঈদের নামাজ আদায়েও ছিল চিরচেনা দৃশ্যের অনেকটাই উল্টোটা। ঈদগাহর বদলে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় হলেও সেটি ছিল অন্যরকম। কল্পনাতীত উপস্থিতি এবং সুন্দর পরিবেশে দুরত্ব বজায় রাখেন।

করোনা মানুষের সচেতনতা বাড়িয়ে দিয়েছে।কোরবানি ঈদের চিরচেনা রূপবদল ঘটালো করোনা। চারিদিকে ভিন্নধারার জীবনযাত্রা দেখা গেল। কোরবানি উপলক্ষে গরু ছাগল ক্রয় বিক্রয়, গোশত তৈরী, চামড়া বিক্রিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আর্থিক লেনদেন অনেক বেড়ে যায়। প্রচুর নগদ অর্থের লেনদেন হয়েছে বলে এমএম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান প্রফেসর সেলিম রেজা জানান।

যশোর নতুন খয়েরতলা জামে মসজিদের ইমাম মুফতি ওসমান গণি হাবিবী বললেন, করোনার ভয় মানুষের আবেগ অনুভূতিকে থামাতে পারেনি। ঈদের জামাত মসজিদে হলেও আনান্দ ছিল না মোটেও কমতি। কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রেও বরং তুলনামূলক বেশি হয়েছে। যশোর আমিনিয়া আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা নূরুল ইসলাম জানান, করোনা মানুষের মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়েছে। গতবারের চেয়ে দান খয়রাতের মাত্রা বেড়ে যায়। বিত্তবান অথচ দান করতেন না, তাদের অনেকেই এবার প্রাণখুলে দান খয়রাত করেছেন।

ঝিনাইদহ চরমুরারীদহ গ্রামের এড. মুজিবুর রহমান বাদশা, যশোর পুরাতন কসবার ওয়ালিইল হাসনাত, সাতক্ষীরা কলারোয়ার ইসলামপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ম্যাক জানালেন, লোকজন দুরে দুরে গরু ও ছাগল কোরবানি দেন। করছেন দুরত্ব বজায় রেখে গোশত কাটিকাটি। যারা গোশত সংগ্রহের জন্য এসেছে তারা দুরে বসে আছেন কখন বিতরণে ডাক পড়বে। আবার চামড়া সংগ্রহকারীরাও দুরত্ব বজায় রেখে কখন কী দামে চামড়া বিক্রি হবে তা শুনছেন। করোনা আসলে অনেককিছু শিখিয়ে দিলো। তার প্রমাণ পাওয়া গেল শহর ও গ্রামের কয়েকটি জায়গায় ঘুরে।

শহর ও গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, করোনার কারণে এবার ভিন্নমাত্রার কোরবানির ঈদ হয়। আগের চিত্রের অনেটাই পরিবর্তন ঘটে।

নোয়াখালি অঞ্চলে ঈদ আনন্দ ও কোরবানি
নোয়াখালী ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা আনোয়ারুল হক আনোয়ার জানান: করোনাভীতি উপেক্ষা করে বিপূল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্য পরিবেশে নোয়াখালীতে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিটি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এবারের ঈদে জেলার বাহিরে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করে। তবে করানার কারনে প্রবাসীরা বাড়িতে আসতে পারেনি। উল্লেখ্য, অন্যান্য বিগত বছরগুলোতে ঈদের সময় লক্ষাধিক প্রবাসী দেশ পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতো।

নোয়াখালীতে এবার কোরবানীর পশুর হাটে হাজার হাজার দেশীয় গবাদিপশুর বিক্রি হয়েছে। বিশেষ করে এখানকার খামারীরা স্থানীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম হন। অন্যদিকে পাশ^বর্তী দেশের গরুর তেমন একটা চাহিদা দেখা যায়নি। স্থানীয় গবাদিপশুর চাহিদাও বাজারমূল্যও ছিল নাগালের বাহিরে। ফলে বিভিন্ন আয়ের লোকজন বেজায় খুশী।

এবারের ঈদে প্রবাসীদের অর্থ প্রেরণ কমে গেছে। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের কারনে বহু দেশে লাখ লাখ প্রবাসী গত কয়েকমাস বেকার থাকায় আশানুরুপ রেমিটেন্স আসেনি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রেমিটেন্স বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

দক্ষিণাঞ্চলে ঈদকে ঘিরে অর্থনীতি চাঙ্গা
বরিশাল ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা নাছিম উল আলম জানান, ঈদ উল আজহাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলের
সার্বিক
অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শেষ মুহুর্তে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। কোরবানির পশুর হাট
থেকে শুরু করে বেশকিছু ব্যবসা-বানিজ্যেও কিছুটা গতি ফিরে আসে।

গতবছরের চেয়ে কোরবানির হার অন্তত ৪০ শতাংশ হ্রাস পাবার আশংকা করা হলেও শেষ দিকে অনেকেই
আবার কোরবানি করার উদ্যোগ নেয়ায়
পশুর হাটে বেচা কেনায় গতি ফিরে আসে। এমনকি সপ্তাহ যুড়ে ক্রেতার
অপেক্ষায় বিক্রতার অনিশ্চিত প্রতিক্ষা চোখে পড়লেও শুক্রবার ক্রেতার
চেয়ে পশুর সংখ্যা কম থাকায় দামও ছিল আগের কয়েকদিনের প্রায় দেড়গুন।
তার পরেও কোরবানি আদায়ের লক্ষে সব কিছু মেনে নিয়েই পশু কিনেছেন
বেশীরভাগ মানুষ।

এবারের কোরবানিতে দেশের পশ্চিমাঞ্চল থেকে
দক্ষিণাঞ্চলে খুব বেশী পশু আমদানী করেননি বেপারিরা।
পরিবহন খাতেও গতি সৃষ্টি হয় শেষ মূহুর্তে সড়ক ও
নৌপথে আশাতীত যাত্রী সমাগমে। তবে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের
সংক্ষিপ্ত সড়ক পথের মাওয়া সেক্টরে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘরমুখি
বিপুল সংখ্যক মানুষ চরম দূর্ভোগের শিকার হন। রাজধানীর সাথে
দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে বৃহস্পতি ও শুক্রবার আশংকার চেয়ে বেশী
যাত্রী চলাচল করায় নৌযান মালিকরা লোকশান কাটিয়ে উঠেতে
পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

তবে তৈরী পোশাক থেকে শুরু করে মুদি মনিহারি দোকান সমুহে
বেচাকেনা তেমন না থাকলেও অন্যসব ব্যবসা-বানিজ্যে পরিস্থিতি
শেষ কয়দিনে আশংকার চেয়ে যথেষ্ঠ উন্নতি লক্ষ করা

করোনার মধ্যেও স্বাভাবিক ঈদ বগুড়ায়
বগুড়া ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা মহসিন রাজু জানান, করোনার ভয়কে উপেক্ষা করেই বগুড়ায় অন্যান্য বছরের মতই স্বাভাবিকভাবে উদযাপিত হল পবিত্র ঈদ উল আজহা ।

সরকারি নির্দেশনার কারণে এবার নির্ধারিত ঈদগাহ সমুহের পরিবর্তে প্রত্যেকপাড়া মহল্লার মসজিদ গুলোতে অনুষ্টিত হয় ঈদ জামাত । মুসল্লিদের ব্যাপক ও প্রাণবন্ত উপস্তিতির কারণে মসজিদগুলোতে ২/৩ এমনকি কোনো স্থানে ৪টি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় ।

প্রথম দিকে কোরবানির পশুর হাট কোথায় বসবে, কিভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে কোরবানির পশু কেনাবেচা হবে তা’ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ধর্মিয় চেতনা ও আবেগ এবং মানবিধ বোধ থেকে মানুষ এবার প্রচুর সংখ্যক পশু ( গরু,ছাগল, ভেড়া ) কোরবানি দিয়েছেন।

শুরুর দিকে কোরবানির পশুর দাম সস্তা থাকলেও শেষের দিকে মানুষ যখন কোরবানির হাটে একেবারে হামলে পড়ে তার ফলে দাম কিছুটা বাড়তি হলেও সেটা সাধারন মানুষের আয়ত্বের বাইরে চলে যায়নি ।
প্রচুর পশু কোরবানি হওয়ার এটাও একটা কারণ বলেছেন , কোরবানি দাতারা ।
ময়মনসিংহে করোনাকালের ঈদুর আযহা উদযাপিত

ময়মনসিংহে ঈদ উৎসব
ময়মনসিংহ ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা শামসুল আলমস খান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়েই নামাজ আদায় ও পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ এ উৎসব পালন করা হয়েছে।


সকাল থেকেই মাস্ক পরে মুসল্লিরা দলে দলে আঞ্জুমান ঈদগাহ মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নেয়ার জন্য যোগ দেয়। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তিন তলা বিশিষ্ট মসজিদের ভিতরে নামাজ আদায়ের কথা থাকলেও প্রচুর ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আগমনের ফলে মসজিদ পূর্ণ হয়ে ঈদগাহ মাঠের প্রায় অর্ধেকাংশ জুড়ে নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, করোনা প্রতিরোধে প্রতিটি মসজিদে সবাইকে সতর্ক থেকে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য এক কাতার ফাঁকা রেখে শারীরিক দূরুত্ব বজায় রাখার নিয়ম মানার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো।

ঈদ জামাত শেষে শুরু হয় পশু কোরবানির তোড়জোড়। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এবার পশু জবাইয়ের জন্য সব মিলিয়ে ৩৩৬টি স্থান নির্ধারণ করে দেয়। তবে সকাল থেকে নগরীর রাস্তা ও অলিগলিতে পশু জবাইয়ের দৃশ্য দেখা গেছে বরাবরের মতই।

এদিকে, কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু। সে লক্ষ্যেই শনিবার দুপুর থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণের কাজে নেমে পড়েন সিটি করপোরেশনের প্রায় ৬০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী। একই সঙ্গে বর্জ্য অপসারণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ৪০ টিরও বেশি ছোট-বড় গাড়ি। ওয়ার্ড কমিশনারদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন ওয়ার্ডের আওতাধীন পাড়া-মহল্লার অলিগলি থেকে রাজপথ সর্বত্র চষে বেড়াচ্ছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। ফলে বিকেলের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে দৃশ্যমান চিত্র চোখে পড়ে।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কোরবানীর আমেজ হারেনি সিলেটে
সিলেট ব্যুরো থেকে সিনিয়র রিপোর্টার ফয়সল আমীন জানান. করোনার অকল্পনীয় বিপর্যকর ধাক্কাও, দমাতে পারেনি সিলেটে পবিত্র ঈদ-উল- আযহার উৎসব। প্রবাসী অধ্যূষিত সিলেটের গ্রাম-শহরে ছিল পুরোদমে আমেজ। পশু কোরবানী নিয়ে মানুষের ছিল পূর্ব প্রস্তুতি।

ঈদের জামাতগুলোতে ভিড় ছিল মুসল্লীদের। শহরের মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায়ে দৃশ্য দেখা গেল্ওে গ্রামঞ্চলে পরিবেশ পরিস্থিতি ছিল পূর্বেকার মতো। নির্লিপ্তভাবে নামাজে অংশ নিয়েছেন মুসল্লীরা। আবহ্ওায়া নেতিবাচক হ্ওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও ঝড়োবৃষ্টির হয়নি। দিনভর রোদ্দুর ছিল পরিবেশ। ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকায় ঘাম ঝরেছে মানুষের শরীরে। ঈদের নামাজে করোনার পরিস্থিতি উত্তরনে মোনাজাত করেছেন ইমাম ও খতিবরা। আ-মীন আ-মীন বলে সাড়া দিয়েছেন মুসল্লীরা।

গত ঈদ-উল ফিতরে করোনা নিয়ে যে ভয় শংকা ছিল, এবার সেই লক্ষণ তেমন দেখা যায়নি। সকলের মধ্যে ছিল যেন করোনা জয়ের মনোবলে। তবে ঈদ উপলক্ষ্যে নতুন জামা কাপড়ের সাজসজ্জা পূর্বেকার মতো ছিল না। পরিস্থিতি সর্তকর্তায় হয়তো জামা কাপড় ক্রয়ে মানুষের উপস্থিতি বা অংশগ্রহন ছিল সীমিত। এদিকে, পশু কোরবানী নিয়ে চলমান অর্থনীতিক মন্ধাভাবে অনেকে ছিলেন শংকিত। তব্ওু খোদার রাহে পশু কোরবানীর ইবাদতির সুযোগ থেকে নিজদের বঞ্চিত করতে চায়নি ধর্মপ্রাণ সামর্থ্যবান মুসলমান। সেকারনে পশু কোরবানী নিয়ে লক্ষণীয় প্রাণবন্ততায় উজ্জীবিত দেখা গেছে মুসলমানদের।

অন্যান্যবারের মতো যত্রতত্র বা মৌসুমী পশু ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ছিল না। করোনা ও পর পর ৩ বারের বন্যার কারনে এখাতে বিনিয়োগ নিয়ে আগ্রহে ভাটা পড়েছিল। সীমিত সংখ্যাক পশু হাট যেমন ছিল তেমন ছিল ব্যবসায়ীদের অংশ গ্রহন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পশু নিয়ে সংকটের আংশকা বিরাজ করেছিল। একারনে দরদাম নিয়ে অস্থিরতায় ভূগছিলেন ক্রেতারা। কিন্তু তারপর পশু বিক্রি হয়েছে, সামর্থ্যবানরা সর্ব্বোচভাবে চেষ্টা করেছেন কোরবানীতে শরিক হতে। কোরবানীর গোস্ত বন্টনে উদার ছিল তাদের হাত। অসহায় গরীবে লোকদের ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছেন কোরবানীর জবাইকৃত পশুর অংশ। অনেকে একাধিক পশু জবেহ করেছেন, কেবল মাত্র প্রতিবেশিদের অধিকারের চিন্তা মাথায় রেখে।

এছাড়া সিলেটজুড়ে জীবিকার তাগিদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের বাস রয়েছে। সেই মানুষগুলো কোরবানীতে অংশিদার হয়ে উঠে সিলেটের সমাজে। তাদের আপনজনের মতোই বন্টনের হিস্যায় শরিক করেন কোরবানীর গোস্ত। তবে সিলেটে পশু কোরবানীর পেছনে রয়েছে প্রবাসীদের বিরাট ভূমিকা। কষ্টার্জিত অর্থ দেশের আপনজনদের কথা ভেবে পাঠিছেন কোরবানীর উদ্দেশে। সেই টাকা সংগ্রহে ব্যাংকগুলোতে যথেষ্ট ভিড় ছিল। আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক জিন্দাবাজার শাখার ফাস্ট এসিস্ট্যোন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাজ্জেম হোসেন বলেন, মনে হয়নি করোনার পরিস্থিতির মধ্যেও কর্মহীন ছিল আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধা তথা প্রবাসীরা। কারন তারা এ সময়েও যথেষ্ট অর্থ পাঠিয়েছে এবারও কোরবাণী ঈদকে সামনে রেখে। অপরদিকে, শহরগ্রাম জুড়ে পশুর চামড়া সংগ্রহে বিশেষ করে কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের ছুটাছুটি দেখা যায়নি।

করোনা পরিস্থিতি ্ও চামড়া বাজার ধস এর কারন বলে অনেকের অভিমত। গেল বছর কোরবানির পশুর চামড়ার দামে যেভাবে ধস নেমেছিল, এবারও সেই একই অবস্থা। বেশি দামে বিক্রির আশায় যারা শহর, নগর, গ্রাম, গঞ্জ থেকে চামড়া সংগ্রহ করেছেন, তাদেরকে পুড়তে হচ্ছে হতাশার খরতাপে। কারণ, চামড়ার দাম একেবারেই কম। গরুর একেকটি চামড়া ২০ টাকা দামেও বিক্রি হচ্ছে! বড় আকারের গরুর চামড়ার দাম সর্বোচ্চ ওঠছে ১০০ টাকা! এদিকে, পবিত্র ঈদ উপভোগে শহরের মানুষ চলে এসেছেন গ্রামে। সেকারনে ঈদের ছুটিতে সিলেট শহর পুরো ফাঁকা। শহরের রাস্তা জুড়ে নেই যানজট আর কোটি মানুষের আনোগোনা। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরেছেন নগরবাসী। সিলেটের অধিকাংশ সড়কই একই অবস্থা।

খুলনায় ঈদ উদযাপন
খুলনা ব্যুরো থেকে ব্যুরো চিফ আবু হেনা মুক্তি জানান, খুলনায় যথাযগ্যে মর্যাদায় পবিত্র ঈদুল আজাহা উদযাপিত হয়েছে। এবার খুলনায় অতীতের তুলনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পশু কোরবানী হয়েছে। করোনার কারণে এবার পশু কোরবানী অর্ধেকে নেমে আশার আশংকা করেছিল পর্যাবেক্ষক মহল। কিন্তু পশুর দাম কম থাকার কারণে এ অঞ্চলের ধর্ম প্রান মানুষ পর্যাপ্ত সংখ্যাক পশু কোরবানী করে। যা এ মহামারী করোনার সংকটকালীন মুহুর্তে রেকর্ড সংখ্যক বটে। গতকাল মানুষের মাঝে ব্যাপক উসাহ উদ্দিপনা লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে, করোনাভাইসার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকাল আটটায় খুলনা টাউন জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন টাউন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোহম্মদ সালেহ। এছাড়া কোর্ট জামে মসজিদে সকাল সাড়ে আটটায় একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ উপলক্ষে জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক বাংলা ও আরবি খচিত ব্যানার দ্বারা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ, সড়কদ্বীপ ও সার্কিট হাউজ সজ্জিত করা হয়।
নগরীতে টাউন জামে মসজিদে দ্বিতীয় ও শেষ জামাত সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসা জামে মসজিদ, নিউমার্কেট বায়তুন নূর জামে মসজিদ, রূপসা বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা (২য় ফেজ) বায়তুল্লাহ জামে মসজিদসহ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন মসজিদে নিজেদের সময় অনুযায়ী ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া জেলার সকল মসজিদে ঈদ-উল- আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

কক্সবাজারে ও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদুল আযহা উদযাপন
কক্সবাজার ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা শাসুল হক শারেক জানান, করোনাকালীন সময়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে কক্সবাজার জেলায় ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যে উদযাপিত হয়েছে মহিমান্বিত ঈদুল আযহা।

কক্সবাজার শহরের প্রধান প্রধান মসজিদ ও উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ মসজিদগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল আজহার জামায়াত।

কোন কোন মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় একাধিক ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবছর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ সহ বড় বড় ময়দানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হলেও করোনাকালীন এই সময়ে হয়েছে তার ব্যতিক্রম।

কক্সবাজার শহরের প্রধান ঈদের জামাাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান জামে মসজিদ। সকাল আটটায় অনুষ্ঠিত এই জামায়াতে ইমামতি করেন কক্সবাজারের বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন প্রিন্সিপাল আল্লামা মাহমুদুল হক।

ঈদের খুতবায় আল্লামা মাহমুদুল হক বলেন, ঈদুল আযহা হচ্ছে মুসলমানদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমা, এক বড় উৎসব। মুসলমানদের জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম তাঁর প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে আল্লাহর পথে কোরবানি দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

মহান আল্লাহতালা মুসলিম উম্মাহর জন্য সেই ত্যাগের স্মরণে প্রতিবছর ঈদুল আযহায় কোরবানীর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সামর্থ্যবানদের কোরবানীর মাধয়মে সম্প্রীতি ও উদাহরণ সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন করোনার এই দুর্যোগে ও মুসলিম উম্মাহ পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের জামাত উদযাপন করে কোরবানির মাধ্যমে সমাজে শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার এই নজির অনন্য।

এই জামাতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফাসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

একইভাবে সকাল আটটায় ঈদুল আযহার জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে কক্সবাজার শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জামে মসজিদ বদরমোকাম জামে মসজিদ, বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, বড় বাজার জামে মসজিদ ও বাহারছরা জামে মসজিদে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ আনন্দ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ