বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আমার ৪২ বছরের সাংবাদিকতার জীবনে এবারই প্রথম সব শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্যে ভিন্নমাত্রার ঈদের আমেজ, উৎসাহ-উদ্দীপনা, উচ্ছ্বাস, আনন্দ প্রত্যক্ষ করলাম। এটি নতুন এক অভিজ্ঞতা। শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়টাতে নয়, সেই ছোট বেলা দেখে আসছি ঈদের আগে, ঈদের দিন ও পরের কয়েকদিনের অতি পরিচিত চিরাচায়িত নিয়ম। চিরচেনা দৃশ্য। ওলোট পালট হয়ে গেছে যেন সবকিছু। সময় ও পরিস্থিতির তালে একাকার হয়ে গেছে। এমন ঈদ পালন কল্পনাতীত। ‘বাবার জন্মেও দেখিনি এমন পরিস্থিতি-বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, টাকা কড়ি, হীরা জহরতে মোড়া অনেক জীবন মুহূর্তে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। টাকার পিছনে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে জীবনের শেষ সময়ে সেই টাকা কোন কাজে আসছে না। এটি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল করোনা’।
এবারের ঈদে বাজার ঘাটের ভিন্ন চিত্র। ঈদের মার্কেটের ছবিসহ রিপোর্ট করে থাকেন সাংবাদিকরা। এবার তার ব্যতয় ঘটেছে। চাঁদ রাত পর্যন্ত হাাপিয়ে উঠেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই। দোকান পাটে কেনাকাটার ধুম নেই ঈদ উপলক্ষে। স্বপ্নকে সত্যি করে তুলতে মনের মতন সন্তানাদির পছন্দসই কেনাকাটা নেই। বিশ্বাসীদের মুখে বেশ জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে, মহান রাব্বুল আলামিন মুহূর্তে সবকিছুই থামিয়ে দিতে পারেন করোনা একটি উদাহরণ মাত্র। বিশ্বের সমস্ত শক্তিকে রাতারাতি নাড়িয়ে দিল। করোনায় সুখদর্শনে নিরন্তর তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ানো মানসিকতার কিছুটা হলেও পরিবর্তন ঘটেছে। এমন ঈদপালন আসলেই কেউ কোনদিন ধারণাও করতে পারেননি।
সাধারণত ঈদের আগে যেমন দেখা যায়, কর্মস্থল যেখানেই থাকুক না কেন, ঈদে কমবেশী সবাই চায় তার জন্মস্থানের মাটি স্পর্শ করতে। বাড়ি ফিরতে লেগে যায় প্রচন্ত ভিড়, চরম ভোগান্তি। বাস ও ট্রেনের টিকিট নেই, পরিবার-পরিজন নিয়ে তবুও বাড়ি ফিরতেই হবে। তাই কাউন্টারে ঘন্টার পর ঘন্টা উপচেপড়া ভিড় থাকে ঈদের আগে। ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ দুর্গতির শেষ থাকে না। সেই চিত্র কোথাও নেই। সড়ক ও মহাসড়ক একরকম ফাঁকা। রোববার সকাল থেকে যে শহরে বেড়ে ওঠা সেই যশোর শহরে ঘুরলাম। কোথাও ঈদের আগের দিন (চাঁদ রাত) মনে হয়নি। সবখানেই ফাঁকা ও সুনশান নিরাবতা।
ঈদগাহ ময়দানে কোথাও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার তোড়জোড় চোখে পড়েনি। বিত্তশালীদের বাড়ির সামনে যাকাতের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়নি গরীব, দুঃস্থ ও অভাবী লোকজনকে। অবশ্য রমজানের শেষদিকে পাড়া ও মহল¬ায় দানশীল অর্থবিত্তশালী লোকজন ব্যক্তিক দুরত্ব বজায় রেখে দান খয়রাত করেছেন। করোনাকালের ঈদ ঘরে বসে সবাই পালন করছেন। মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। তার প্রস্ততি চলছে। অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে হলেও পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরবন্দি মানুষ ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন ঈদে।
যশোর নতুন খয়েরতলার শাহেদ রহমান রমির কথা ‘ভিন্নমাত্রার ঈদ উৎসব পালন করছি। ঘরে ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে যে ধরণের উৎসবে মাতোয়ারা থাকতাম। এটি হচ্ছে না’। পুরাতনকসবা মানিকতলার বাসিন্দা ব্যাংক অফিসার ওয়ালিউল হাসনাত রকি বললেন ‘এবারের মতো এমন ঈদ আমার জীবনে দেখিনি। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি এক ধরণের ঈদ-এবার তার ভিন্ন। কোন আনন্দ নেই’। প্রায় একই ধরণের কথা বললেন, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ইসলামপুর ব্রজবাকশা গ্রামের ব্যাংকার আবুল কালাম আজাদ (ম্যাক)। এবার করোনাকালের ঈদে কোন আনন্দ আমেজ নেই। সবাই সিয়াম সাধনার মাসটিতে আল্লাহ রহমানুর রহিমের কাছে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের প্রার্থনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।