Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রামমন্দির উদ্বোধনে বিশেষ সতর্কতা, নির্দেশনা জারি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০২০, ৫:৪৩ পিএম

আগামী ৫ অগাস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হবে। মূল অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি সেখানে ২২ কেজি ৬০০ গ্রামের রুপার ইট স্থাপন করবেন। এই অনুষ্ঠান বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। জারি করেছে একাধিক নির্দেশনা।

মোট নয়টি ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে বা নিয়ম পালন করতে হবে। আলোচনা, বিতর্ক বন্ধ ঘরে করতে হবে। বাইরে করা যাবে না। করোনার সময় বাইরে ক্যামেরা ঘিরে লোক জমে গেলে মুশকিল হবে। শুধু যে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বকে ডাকা যাবে না, তাই নয়, কোনও ধর্ম, সম্প্রদায়, ব্যক্তি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা যাবে না। কোথায় অনুষ্ঠান করা হবে, তা আগাম প্রশাসনকে জানাতে হবে।

অযোধ্যায় সেই অনুষ্ঠান স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্ব পাবে ভারতের সব টিভি চ্যানেলে। কিন্তু সেদিন টিভি চ্যানেলে রামমন্দির নিয়ে আলোচনার সময় কী করতে হবে, তার রূপরেখা তৈরি করে দিল উত্তর প্রদেশ প্রশাসন। অযোধ্যা জেলা প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে, যে সব টিভি চ্যানেল ওই দিন অযোধ্যা থেকে খবর দেখাতে চায়, আলোচনা করতে চায়, তাদের আগাম অনুমতি নিতে হবে এবং একটি হলফনামা দিতে হবে। সেখানে বলা থাকবে, কোনও বিতর্কিত ব্যক্তিকে, মোকদ্দমাকারীকে বিতর্কে ডাকা যাবে না। হলফনামায় টিভির কর্তাকে বলতে হবে, ‘আইন ও শৃঙ্খলায় যদি কোনওরকম সমস্যা হয়, তা হলে ব্যক্তিগতভাবে আমি দায়ী থাকব।’

তথ্য বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর মুরলীধর সিং বলেছেন, ‘রামমন্দিরের ভূমিপুজো অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার ক্ষেত্রে মিডিয়ার কোনও অসুবিধা হবে না। সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মিডিয়া সেন্টার থাকবে। লাইভ দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু করোনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ঠিক হয়েছে, চ্যানেলগুলিকে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে। তাদের দেখতে হবে, জনসমাবেশ যাতে না হয়, কোনো বিতর্কিত কথা যেন বলা না হয়। সকলে যেন প্রটোকল মেনে চলেন।’

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে কাকে বিতর্কে ডাকা যাবে, বিতর্কে কী বলা যাবে, কী বলা যাবে না, সেই সব ঠিক করে দেয়ার মানে কি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়? তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ ও আইনজীবী সুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, ‘এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। মত প্রকাশের অধিকার হলো মৌলিক অধিকার। ভারতীয় দণ্ডবিধিতেই বলা আছে, উত্তেজনা ছড়ানো যাবে না, দাঙ্গা-হাঙ্গামা করা যাবে না। তার জন্য প্রশাসন আগাম সতর্কতা নিতে পারে। সকলকে সতর্ক করে দিতে পারে। কিন্তু টিভির বিতর্কে কী বলতে হবে., কাকে ডাকা যাবে না, সেটা প্রশাসন ঠিক করার কে? আমাকে টিভি বিতর্কে ডাকা হলে আমি কী বলব, তা টিভির লোক বা অ্যাঙ্কার কী করে জানবে?’

ভিন্নমত হওয়াটা তো অপরাধ নয়। যতক্ষণ উস্কানিমূলক কোনো কথা বলা না হচ্ছে, ততক্ষণ তো কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। সুখেন্দু শেখর যেমন মনে করছেন, ‘জরুরি অবস্থার সময় আইন করে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। এখন আইন ছাড়াই করা হচ্ছে।’

প্রশ্ন উঠছে যে, তা হলে কি শুধু বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের লোকেদেরই টিভির আলোচনায় দেখা যাবে? বিজেপি নেতারা অবশ্য বলছেন, অযোধ্যায় রামমন্দিরের বিষয়টি এতটাই স্পর্শকাতর যে সামান্য ফুলকিতে উত্তজনা ছড়াতে পারে এবং হাঙ্গামা হতে পারে। সে জন্যই প্রশাসন অত্যন্ত সতর্ক। তারা এ নিয়ে কোনোরকম গন্ডগোল চায় না বলেই নীতিনির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তা মেনে চললে সকলেরই মঙ্গল। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ