Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পেয়ারার পুষ্টিগুণের নেই শেষ

| প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০২০, ১২:০২ এএম

পেয়ারা একটি পুষ্টিকর ফল। দাম কম ও সহজলভ্য। এখন প্রায় সারা বছরই এটি পাওয়া যায়। পেয়ারায় প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি আছে। ১০০ গ্রাম পেয়ারায় ১৮০ মিলি গ্রাম ভিটামিন সি আছে। বলা হয়, পুষ্টিগুনে তিনটা আপেলের সমান পুষ্টি আছে একটি পেয়ারায়। আমলকি বাদে অন্য কোন ফলে এত ভিটামিন সি নেই। যা পেয়ারায় আছে।

পেয়ারায় কমলার চেয়ে চার গুন বেশি ভিটামিন সি আছে। অথচ কমলাকে বলা হয় ভিটামিন সি এর পাওয়ার হাউজ। ভিটামিন সি মুখগহব্বর, দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে। বিপাক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।

বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে পেয়ারা কাজ করে। যাদের ঠান্ডা, কাশি, ফুসফুসে সংক্রমণ, গলা ব্যথা তারা পেয়ারা খেলে উপকার পাবেন। পেয়ারার ভিটামিন এ দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সহায়ক। ডায়বেটিস, ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার এর মতো রোগ প্রতিরোধে পেয়ারা কাজ করে। ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারা ভুমিকা রাখে। কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি গুড়া করে এক চা চামচ এক কাপ গরম পানিতে রেখে পরে ছেকে পান করলে ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ উপকার হয়। থাইরয়েড-এর সমস্যায় পেয়ারা কাজ করে। পেয়ারার কপার থাইরয়েডে গ্রন্থির সমস্যা দুর করে। থাইরয়েড গ্রন্থি কার্যকর রাখে।

পেয়ারায় ডায়াটারি ফাইবার বেশী আছে। ফলে পেয়ারা ওজন কমাতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে। ক্যালরি কম, সহজে হজমও হয়। পেয়ারা এলডিএল বা মন্দ কোলেস্টরেল মাত্রা কমায়। এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টরেল এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। গবেষনায় দেখা গেছে, যে নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্তচাপ ও রক্তের লিপিড কমে আসে।

মধ্য দুপুরে কিংবা বিকালে পেয়ারা নাস্তা হিসাবে চমৎকার। কিডনি সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদেরও পেয়ারা খেতে বাধা নেই। কারণ পেয়ারায় পটাশিয়ামের পরিমান কম। ১০০ গ্রাম পেয়ারায় আছে ক্যালরি ৬৮, চর্বি ১ গ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৭ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেড ১৪ গ্রাম, প্ররােটিন ২.৬ গ্রাম, ভিটামিন এ ১২%, ভিটামিন বি৬ ৫%, ভিটামিন সি ৫%, ভিটামিন সি ৩৮০%, ম্যাগনেশিয়াম ৫%, ক্যালসিয়াম ১%। সামান্য আয়রন ও আছে।

পেয়ারা দিয়ে জ্যাম, জেলি, মোরব্বা তৈরী হয়। বিভিন্ন কোম্পানী পেয়ারার জেলি বাজারজাত করে। বাসায় গৃহিনীরা পেয়ারার জেলি তৈরী করেন। রুটিতে জেলি লাগিয়ে খেতে বাচ্চারা পছন্দ করে। পেয়ারার ফেভার দেয়া আইসক্রিমও বাজারে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায়ই পেয়ারা গাছ হয়। তবে পিরোজপুরের সরূপকাঠীর আটঘর, কুড়িয়ানা, ঝালকাঠীর ভীমরুলিতে দেশী পেয়ারার প্রায় ৬০ শতাংশ হয়। এখানকার পেয়ারা সবচে সুস্বাদু।

আষাঢ় থেকে ভাদ্র দেশী পেয়ারার মৌসুম। আকারে বড় হয় কাজী পেয়ারা, থাই পেয়ারা। এগুলো ড্রামে লাগালেও হয়। ছাদ কিংবা বেলকনিতে রাখলে ফল দিয়ে থাকে। খুব বেশি যত্ন আত্তি লাগে না। এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের পেয়ারা খেতে সুস্বাদু। বাংলাদেশের প্রায় ৮৮ ভাগ মানুষ ভিটামিন এ, ৯০ ভাগ মানুষ ভিটামিন সি, ৯৩ ভাগ মানুষ ক্যালসিয়ামের অভাবে ভোগে। এই প্রেক্ষাপটে পেয়ারা খেয়ে ভিটামিনের চাহিদা মিটানো সম্ভব। এ জন্য নাস্তা হিসাবে পেয়ারা বেছে নিতে হবে। অবশ্যই পেয়ারা ছোলাসহ খেতে হবে। তবে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা প্রকট, তারা পেয়ারার বিচি ছাড়া অংশ খেলে ভালো করবেন।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
ফ্রি ল্যান্স সাংবাদিক,
মুনালয়, গ্রাম-দক্ষিন নাজিরপুর,
বানারীপাড়া, বরিশাল-৮৫৩০
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেয়ারা
আরও পড়ুন