Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফাহিমের লাশ টুকরা করছিল হত্যাকারী

বোন তখন ভবনে প্রবেশ করছিলেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তরুণ উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ (৩৩) হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেফতার করেছে নিউইয়র্কের পুলিশ। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফাহিম হত্যাকান্ডের অভিযোগ আনা হচ্ছে। গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, ফাহিম সালেহর বোন যখন ওই বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করছিলেন, হত্যাকারী তখন লাশ টুকরা করছিল। মার্কিন দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমস দুজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম টেরেস ডেভোন হাসপিল। ২১ বছরের এ তরুণের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ড ও অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ আনা হচ্ছে। গ্রেফতার ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে এ গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানোর কথা রয়েছে। ম্যানহাটানে নিজের কেনা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ফাহিম সালেহর লাশ উদ্ধার করা হয়। ইলেকট্রিক করাত দিয়ে তার লাশ টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকে ব্যাগে ভরানো ছিল।
গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, ফাহিম সালেহর ব্যক্তিগত সহকারী টেরেস তার কয়েক লাখ ডলার চুরি করেছেন। তারপরও সালেহ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি। ডলার ফেরত দিলে তিনি কিছু ডলার তাঁকে (টেরেস) দিয়ে দেয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন।
গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, ফাহিম সালেহকে স্থানীয় সময় সোমবার কোনো এক সময়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী ওই দিন চলে যাওয়ার পরদিন মঙ্গলবার আবার ওই অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসেন। এরপর ইলেকট্রিক করাত দিয়ে লাশ টুকরো করে বড় আকারের ব্যাগে ভরে ফেলেন। হত্যার আলামত মুছে ফেলারও চেষ্টা করেন।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফাহিম সালেহকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কোপানোর আগে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করে তাঁকে অচেতন করা হয়েছিল। হত্যাকারী কালো রঙের স্যুট, সাদা শার্ট ও টাই এবং কালো মাস্ক পরে ফাহিম সালেহর পেছন পেছন ওই অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকেছিলেন। এ সময় হত্যাকারীর হাতে একটি ব্যাগও ছিল। লিফটের ভেতর থেকে সংগৃহীত সিকিউরিটি ক্যামেরা থেকে সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হত্যাকারী নিজের উপস্থিতি এড়ানোর জন্য বিশেষ কৌশলে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করেন।
এর আগে নিউইয়র্ক সিটির সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানান, ফাহিম সালেহর গলা ও ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। এতে তার মৃত্যু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এ হত্যাকান্ডকে ‘পেশাদার খুনির মতো কাজ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকারী যখন ফাহিম সালেহর শরীর টুকরা টুকরা করে ব্যাগে ভরছিলেন, তখন তার বোন ওই অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকছিলেন। অ্যাপার্টমেন্টের লবিতে পৌঁছালে হত্যাকারী বিষয়টি টের পান, তখন অ্যাপার্টমেন্টের পেছনের দরজা ও সিঁড়ি দিয়ে হত্যাকারী বেরিয়ে যান।
ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালে। তার বাবা সালেহ উদ্দিন চট্টগ্রামের, আর মা নোয়াখালীর মানুষ। ফাহিম পড়াশোনা করেছেন আমেরিকার বেন্টলি ইউনিভার্সিটিতে ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে। তিনি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের অন্যতম উদ্যোক্তা। ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় গিয়ে পাঠাও চালু করে নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন তিনি। ফাহিম নাইজেরিয়া ও কলম্বিয়ায় এমন আরও দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানির মালিক। ইন্দোনেশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশেও তিনি ব্যবসা বিস্তৃত করেছিলেন। সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যাকারী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ