Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আসল অযোধ্যার খোঁজে নেপাল, পুরাতাত্ত্বিক খনন শুরু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০২০, ৩:১১ পিএম

হিন্দুদের দেবতা রামের জন্মভূমি ‘অযোধ্যা’ নেপালে বলে সম্প্রতি দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। তার এই দাবিকে কেন্দ্র করে ভারতে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। তবে অলি যে বুঝে শুনেই এই দাবি করেছিলেন তা প্রমাণে এ বার মাঠে নামছে নেপালের পুরাতত্ত্ব বিভাগ। রামের জন্মভূমি খুঁজতে নেপালের দক্ষিণে থোরিতে খননকাজ শুরু করতে চলছে তারা। একই সঙ্গে চলবে গবেষণাও।

অলির পরে রামের প্রকৃত জন্মভূমি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বার দেশটির পুরাতত্ত্ব বিভাগ ঘোষণা করল, তারা সেই গবেষণার কাজ শুরু করতে চলেছে। একইসঙ্গে থোরিতে পুরাতাত্ত্বিক খননকাজেও তারা হাত দিচ্ছে। নেপালের পুরাতত্ত্ব বিভাগের ডিজি দামোদর গৌতম বৃহস্পতিবার জানান, একটি দায়িত্ববান সংস্থা হিসেবে দেশে সাংস্কৃতিক আর ধার্মিক স্থলগুলি নিয়ে পুরাতাত্ত্বিক খনন, অনুসন্ধান এবং বিশ্লেষণ করা

হবে। গৌতম বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে কিছু।’ আর সেই কারণেই নেপালের সঙ্গে রামের সম্পর্কের ভিত্তি খুঁজে বের করতে চেষ্টা করছে নেপাল। এ বিষয়ে খুব শিগগির একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। যেখানে ইতিহাসবিদ, সাংস্কৃতিক বিশেষজ্ঞ, ধার্মিক নেতা, শিক্ষক, গবেষকরা উপস্থিত থাকবেন। এর পর খননের প্রধান স্থান নির্ধারণ করা হবে বলে জানান গৌতম।

নেপাল পুরাতত্ত্ব বিভাগ জানায়, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির দাবি অনুযায়ী, আপাতত থোরি গ্রামে খননকাজ শুরু হবে। বিগত কয়েক বছর ধরে বারা, ধৌসা আর চিতবন জেলায় খননকার্য চালানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। থোরিতে খননকাজ শুরু করার কারণ অলিই। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দাবি অনুযায়, সেখানকার বীরগঞ্জে থোরিতেই আসল অযোধ্যা অবস্থিত।

প্রসঙ্গত, নেপালি ভাষায় রামায়ণ অনুবাদ করা কবি ভানুভক্তের জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে গত সোমবার অলি দাবি করেন, সীতার জন্মস্থল যেমন নেপালের জনকপুরে (আগে নাম ছিল মিথিলা), তেমনই রামের জন্মভূমিও বীরগঞ্জের কাছে থোরিতে। সেটিই আসল অযোধ্যা। তিনি তার দাবির সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, তখন যাতায়াত ব্যবস্থা যা ছিল, তাতে ভারতের অযোধ্যা আর নেপালের জনকপুরের দূরত্বে রাম-সীতার বিয়ে হওয়া আদৌ সম্ভব? তার অভিযোগ, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনেই নেপালের হাত থেকে রাম এবং অযোধ্যাকে ছিনিয়ে নিয়েছে ভারত।

অযোধ্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গিওয়ালি। বুধবার তিনি দাবি করেন, রামায়ণ সভ্যতার কোনও ভিত্তি নেই। গিওয়ালির কথায়, ‘রামায়ণ সভ্যতা নিয়ে এখনও ভারতে ও নেপালে গবেষণা চলছে। কেবল বিশ্বাসের ভিত্তিতে সমস্ত বিষয় আমরা অনুসরণ করে চলেছি। এর মধ্যে কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছিলাম সীতার জনকপুরে জন্ম। রাম জন্মেছিলেন অযোধ্যায়। কিন্তু, যেদিন গবেষণা এর বাইরে অন্য কিছু প্রমাণ করবে, সেদিন রামায়ণের ইতিহাস নিজেই বদলে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টির সঙ্গে বহু মানুষের আবেগজড়িত। তাই এ বিষয়ে খুব বেশি কথা বলে বিতর্ক বাড়াতে চাই না।’

নেপালের প্রধানমন্ত্রীর এই দাবিতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। কারণ, তাদের রাজনীতির অন্যতম ‘অ্যাজেন্ডা’ এই রামজন্মভূমি। রামের বিষয়ে কোন ঐতিহাসিক সাক্ষ্য প্রমাণও নেই। ফলে, নেপালের গবেষণায় সত্যিই যদি কিছু পাওয়া যায়, তাহলে মোদির ক্ষমতায় থাকার মূল ভিত্তিই নড়ে যাবে। সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নেপাল

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ