মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের সহায়তায় নির্মিত পোখারা আন্তর্জাতিক মানের একটি বিমানবন্দর রোববার উদ্বোধন করেছেন নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড। নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র পোখারায় এই বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। এদিন পোখারা রিজিয়নাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (পিআরআইএ) উদ্বোধন উপলক্ষে একটি ফলকের উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পডেল এবং শীর্ষ অন্য নেতারা। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই।
এই বিমানবন্দর থেকে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি হলো নেপাল-চায়না বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) সহযোগিতামুলক প্রকল্প। চীনের ঋণ সহায়তায় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এ বিমানবন্দরের। এ উপলক্ষে পোখারার লেক সিটি বলে পরিচিত এলাকায় বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য চীনের সঙ্গে নেপাল সরকার ২০১৬ সালের মার্চে ২১ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ডলারের একটি সহজ শর্তে ঋণচুক্তি (সফট লোন) স্বাক্ষর করে।
এর উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড বলেন, নেপালের মতো চারদিকে ভূমি দ্বারা অবরুদ্ধ একটি দেশের জন্য সবচেয়ে কার্যকর সংযুক্তি হলো আকাশপথের সংযোগ। এটি যেহেতু দেশের তৃতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, তাই এর কার্যক্রম রোববার থেকেই শুরু হলো। উদ্বোধনের মাধ্যমে পোখারার সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হলো এ সময় তিনি চীনের সঙ্গে সীমান্ত ক্রসিংগুলো খুলে দিতে চীন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে রেলওয়ে সার্ভিস ও অন্য প্রকল্পগুলো নির্মাণে চীনের সহায়তা প্রত্যাশা করেন।
প্রচণ্ড বলেন, গন্ধকী প্রদেশ থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর আমি প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। এখানকার জনগণ আমাকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাদের সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এ জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি আরও বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার, সুশাসন এবং জনগণের সমৃদ্ধির জন্য তার নেতৃত্বে তার সরকার কাজ করবে। প্রচণ্ড বলেন, প্রথমদিকে আমি একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র গড়ে তুলতে নেতৃ স্থানীয় ভূমিকায় কাজ করেছি। এখন দেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
এদিন নেপালে চীনা দূতাবাসের চার্জ দা অ্যাফেয়ার্স ওয়াং সিন বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, এই বিমানবন্দরটি ডিজাইন এবং নির্মাণ হয়েছে চীনা মান অনুযায়ী। এতে চীনা প্রকৌশলীদের উচ্চ মান ফুটে উঠেছে। সঙ্গে সঙ্গে নেপালের জাতীয় সম্মানের একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে এই বিমানবন্দর। তিনি আরও বলেন, চীন ও নেপালের নেতাদের কাছে উচ্চ মূল্য আছে পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। অভিন্ন উন্নতি এবং সমৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করার নতুন একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠবে এই বিমানবন্দর। নেপাল এরই মধ্যে তার ‘ট্যুরিজম ডিকেড ২০২৩-২০৩৩’ ঘোষণা করেছে। তাই চীনা পর্যটকরা নেপালের পর্যটনখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের নির্দেশনার অধীনে আমরা যৌথভাবে নির্মাণ করব ‘হিমালয়ান মাল্টি-ডাইমেনশনাল কানেকটিভিটি নেটওয়ার্ক’ এবং বিআরআই সহযোগিতাকে ফলপ্রসূ করে তুলবো। কেরাং/রাসুওয়াগাধি সীমান্ত দিয়ে উভমুখী চলাচল শুরু হয়েছে। বিশেষ করে এই সীমান্ত দিয়ে আবার চীনে নেপালি পণ্য রপ্তানি শুরু হয়েছে। পুলান/ইয়ারি বন্দর দিয়ে উভমুখী বাণিজ্য শুরু হবে এ বছরের শুরুর দিকেই। তখন নেপালি অধিক পণ্য রপ্তানি করা যাবে চীনে। চায়না-নেপাল ক্রস-বর্ডার রেলওয়ের উপযোগিতা পর্যালোচনা ও সার্ভে করতে সম্প্রতি একদল বিশেষজ্ঞ পৌঁছেছেন নেপালে। এর মধ্য দিয়ে এরকম ‘স্কাই রোড’ নির্মাণে এটিই হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। চূড়ান্তভাবে নেপাল ‘চারদিকে ভূমি দ্বারা অবরুদ্ধ দেশ’ থেকে একটি ‘ভূমি-সংযুক্ত দেশ’ হওয়ার স্বপ্ন দেখে। তা চূড়ান্ত রূপ পাবে।
ওদিকে নেপালের গন্ধকী প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কৃষ্ণ চন্দ্র পোখরেল চীন সরকারের কাছে আরও একটু আবদার করেছেন। তিনি দাবি তুলেছেন- নেপালকে চীন সরকার যে ঋণ দিয়েছে পোখারা বিমানবন্দর নির্মাণে তাকে অনুদান হিসেবে অনুমোদনের জন্য। তার ভাষায়, চীনা দূতাবাসের মাধ্যমে চীন সরকারের প্রতি আমি আহ্বান জানাই তারা যে ঋণ দিয়েছে তার মধ্যে শতকরা ৭৫ ভাগকে অনুদান হিসেবে অনুমোদন করতে।
এই বিমানবন্দরটি প্রথম দফায় দক্ষিণ এশিয়ার যাত্রীদের সেবা দেবে। তারপর দ্বিতীয় দফায় পশ্চিমাঞ্চলীয় যাত্রীদের জন্য খুলে দেয়া হবে। কৃষ্ণ চন্দ্র পোখরেল আরও আশা করেন, আন্তর্জাতিক মানের এই বিমানবন্দরটি চালু হওয়ায় দেশে পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।