মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত ১৫ জুলাই ম্যানহাটনে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে নৃশংসভাবে খুন হন তরুণ উদ্যোক্তা ও পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ। এখনো গ্রেফতার করতে না পারলেও নিউইয়র্ক পুলিশ তার হত্যাকারীকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। যে কোন সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে শুধু জানানো হয়েছে, ফাহিম সালেহকে খুন করা হয়েছে। বড় ধরনের কোনো ব্যবসায়িক লেনদেনের জেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে। তবে তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাবে না।
ফাহিম সালেহর পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকসহ সব মহলের প্রতি তাদের এ কঠিন সময়ে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বুধবার ফাহিমের পরিবারের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে হয়েছে, ফাহিমের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আসা সংবাদ শিরোনাম এখনো আমাদের অনুধাবনের বাইরে। ফাহিম সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে, তিনি তার চেয়েও বেশি ছিলেন। ফাহিমকে মেধাবী এবং সৃষ্টিশীল উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ফাহিম খুব অল্প বয়সেই সাফল্য পেয়েছিলেন এবং অন্যের উপকারে কাজ করে গেছেন। তিনি যাই করুন না কেন, বৃহত্তর ভালো এবং তার পরিবারের কথা ভেবে তিনি তা করতেন।
সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমে ফলাও হয়ে প্রচারিত ফাহিম সালেহর হত্যাকাণ্ড নিউইয়র্ক পুলিশের জন্য হাইপ্রোফাইল মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে কয়েকটি বিষয় নিয়ে মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। ফাহিম সালেহকে খুন করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। পেশাদার খুনি শুরু থেকে বলা হলেও খুনি কাজটি পেশাদারের মতো শেষ করতে পারেননি। ফাহিম সালেহর সঙ্গে লিফটে ওঠা ব্যক্তিকে ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টেই ঢুকতে দেখা গেছে। অ্যাপার্টমেন্টের দরজা দিয়ে লিফটে করে নেমে আসার কোনো ভিডিও চিত্র পাওয়া যায়নি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফাহিমের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় তার এক প্রতিবেশী অস্বাভাবিক শব্দ শুনেছেন এবং ফাহিমের বোনকে তা ফোনে জানিয়েছেন বলে এখন জানা গেছে। হত্যার পর ইলেকট্রিক করাত দিয়ে ফাহিমের দেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। ব্লিচ দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ নির্মাণকাজে ব্যবহার করা ভারী প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরার সময় লবি থেকে বা বাইরে থেকে কেউ ফাহিমের খোঁজ করতে আসেন। এ কারণে, পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকারী তার কাজ শেষ করতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তকাজে জড়িত এনওইয়াইপিডির একজনের মতে, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে দুটি লক্ষ্য থাকে। একটি হচ্ছে, মাফিয়া স্টাইলে অন্যদের ভয়াবহতার বার্তা দেয়া। অন্যটি হচ্ছে, ব্যক্তিকে একদম শেষ করে দেয়া। শেষের যুক্তিটিই এখানে প্রাধান্য পাচ্ছে। হত্যাকারী ফাহিমের লাশ টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভর্তি করে। পাশাপাশি, ধুয়ে মুছে রক্ত পরিষ্কার করে। ঘটনাস্থলে তেমন রক্ত পাওয়া যায়নি। কেউ আসছে বা দরজায় বেল দিচ্ছে, এমন ঘটনার পর হত্যাকারী সাত তলা অ্যাপার্টমেন্টের পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নেমে যায়। এ জন্য তাকে চাবি ব্যবহার করতে হয়েছে। ফলে এ ধরনের এক্সিট পরিকল্পনা আগে থেকেই নেয়া ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
এর মধ্যে ইলেকট্রিক করাতে ও অন্যত্র আঙুলের ছাপ পেয়েছে পুলিশ। পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নামলেও নিউইয়র্ক নগরী সর্বত্র এখন সিসি ক্যামেরার আওতায়। এসব ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও চিত্র দেখে হত্যাকারীকে চিহ্নিত করা গেছে। অনেকটা করোনাভাইরাসের কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মতো হত্যাকারীকে ধরে ফেলতে পারবে বলে নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে আভাস দেয়া হয়েছে। ফাহিম সালেহর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে কিছু খোয়া যায়নি। ঘরের মালামাল পরিপাটি ছিল। কোনো তছনছের চিহ্নও পায়নি পুলিশ। তাই শুরু থেকেই এ ঘটনা যে নিছক ডাকাতি, তা মনে করা হচ্ছে না। নিহত ফাহিম সালেহর পরিবারের পক্ষ থেকে নিউইয়র্ক পুলিশের কাছে এ অপরাধের তদন্তের গভীরে যাওয়া এবং ফাহিমের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সূত্র: সূত্র: ডেইলি বিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।