পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
করোনার সময়ে ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিন
করোনা মহামারীর এই বর্তমান অবস্থায় সবাই আজ ঘরবন্দি। সবার হাতে অফুরন্ত সময়। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ছুটিতে। কবে নাগাদ শেষ হবে করোনার ভয়াল থাবা, কখন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান শুরু হবে আগের মতো, তা বলা মুশকিল। এই সময়টা হেলায় না হারিয়ে, প্রয়োজন ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে নজর দেয়া, পরিস্থিতি বুঝে মেধাকে কাজে লাগানো। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস চলমান। ছুটি থাকলেও পড়াশোনায় তাদের ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও বিচ্ছিন্নভাবে ক্লাস হচ্ছে। তাছাড়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। করোনার প্রকোপ কমে আসলে সরকার খুব কম সময়ের মধ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পরই আবার খুব কম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি শুরু হবে। গত বছরগুলোর মতো এবার আর কোচিং ক্লাসে ভর্তি থেকে শুরু করে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবার জন্য, সময় নিয়ে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। সুতরাং এই সময়টা এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের হাতেও অনেক সময় নেই ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের জন্য এই সময়টা খুবই উত্তম সময় বলা চলে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়া হলেও পড়াশোনার চাপ তেমন একটা নেই। এই সময়টা বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিজেকে কাজে লাগানো যেতেই পারে। অনলাইনে সেলফ- ডেভেলপমেন্টের জন্য নানান রকম কোর্স চালু আছে। সেগুলো করা যেতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই ছবি আঁকতে পছন্দ করে। এই সময়টায় খোলা আকাশের নিচে সবুজের সমারোহে বসে ছবি আঁকা যেতেই পারে। যারা লেখালিখি করতে পছন্দ করে, তাদের জন্য এই সময়টা অনেকটা সুখকর হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন লেখা প্রতিযোগিতা, দৈনিক পত্রিকাগুলোতে লেখা পাঠানো, যাদের ইচ্ছা আগামী বই মেলায় বই প্রকাশ করাসহ নানান রকম ব্যক্তিগত উন্নয়নে অংশগ্রহণ করার জন্য এই সময়টা কাজে লাগানো দরকার। এই দীর্ঘ ছুটিতে বিসিএস, ব্যাংকজবসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি-বেসরকারি চাকরির প্রস্তুতি নেয়া যেতেই পারে। যাদের স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে গিয়ে নামি দামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা আছে, এই সময়ে তারা ঘরে বসে ইংরেজি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। যারা কৃষি নিয়ে পড়াশোনা করছে, তারা এই সময়টায় তাদের থিওরিটিক্যাল ও ব্যবহারিক বিষয়গুলো হাতে কলমে আরেকবার ঝালাই করে নিতে পারে। হতাশা নিয়ে বসে না থেকে বিশ্বায়নের যুগে সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। প্রতিযোগিতার দৌড়ে টিকে থাকতে হলে একটু সময়ও অবহেলায় কাটিয়ে দেয়া সমীচীন নয়। আমাদের মত শিক্ষার্থী, যাদের হাতে এখন অফুরন্ত সময়, তারা নিজেদের ব্যক্তিগত সামর্থ্য অর্জন, দক্ষতা বৃদ্ধিতে এই সময়টা কাজে লাগাতে পারি। যাতে করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা পিছিয়ে না পড়ে দেশ তথা নিজেদেরকে আর্থ-সামাজিক কাজে যুক্ত করতে পারি।
রেজাউল ইসলাম রেজা
শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।