নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
করোনাকালে দেশের সব খেলাধুলা বন্ধ থাকলেও তা চালু করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন। তবে সরকারী নির্দেশনা হলো- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনমুতি ছাড়া শুরু হবে না দেশের খেলাধুলা। বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্তই নেয়া হয়। সভায় বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা শেষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল জানান,স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তথা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মতামত সাপেক্ষে দেশের খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পুনরায় চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমন রোধে গত মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে স্থগিত হয় দেশের সব খেলাধুলা। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে অলিখিত লকডাউনে চলে যায় পুরো দেশ। তবে জুন মাসের শুরুতে সাধারণ ছুটি শেষে খুলে দেওয়া হয় অফিস-আদালত। কিন্তু অফিস-আদালত চললেও দেশে এখনো পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে ইউরোপের চারটি দেশের ফুটবল লিগ মাঠে গড়িয়েছে। গত বুধবার থেকে মাঠে গড়িয়েছে ক্রিকেটও। গত মাসে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছিলেন, জুলাইয়ে ক্রীড়াঙ্গনের লকডাউন খুলে দেওয়া হতে পারে। বিশেষ করে ইনডোর গেমসের খেলাগুলো শুরুর পরিকল্পনা ছিল তার। সেটা মাথায় নিয়েই বৃহস্পতিবার বন্ধ হওয়া ক্রীড়া কার্যক্রম পূনরায় চালু করার লক্ষ্যে করনীয় বিষয়ে কয়েকটি ফেডারেশনের সঙ্গে জরুরী সভায় বসেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। সভা শেষে রাসেল বলেন, ‘যেসব ঘরোয়া খেলাধুলায় বডি কন্ট্রাক্ট (শারীরিক যুক্ততা) নেই, সে খেলাগুলো আমরা পূনরায় শুরু করতে চাই। তবে তা অবশ্যই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মতামত সাপেক্ষে। আমরা খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। আগামী সপ্তাহে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে কথা বলব আমরা। তাদের মতামত সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এছাড়াও আগামী বছর আরচ্যারি ও শ্যুটিংয়ের খেলোয়াড়রা অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবেন। স্বাস্থ্য বিধি মেনে কিভাবে তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা যায় সেটিও আমরা ভাবছি।’ সভায় যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেন এবং সাঁতার, শ্যুটিং, ভলিবল, ভারোত্তোলন, হ্যান্ডবল, কারাতে আরচ্যারি, তায়কোয়ানডো ফেডারেশন ও মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়ও ভিডিও কনফারেন্সে এই সভায় যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
এদিকে খেলা মাঠে না গড়ালেও নিজেদের দাফতরিক কার্যক্রম ঠিকই চালু রেখেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ফুটবলারদের জন্য মেডিক্যাল গাইডলাইন প্রস্তুত করেছে তারা। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বকে সামনে রেখে ফুটবল কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে ইতোমধ্যে মেডিক্যাল গাইডলাইন তৈরির কাজ শেষ করেছে বাফুফে। ফিফার গাইডলাইন মেনে বাফুফের মেডিক্যাল কমিটি গাইডলাইনটি তৈরি করেছে। এতে করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের মাঠে ফেরার প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।
অনুশীলন ক্যাম্পে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাফুফের মেডিক্যাল কমিটির উপ-চেয়ারম্যান ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) এলিট প্যানেলের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আলী ইমরান ইতোমধ্যে গাইডলাইন জমা দিয়েছেন। আগামী ৮ অক্টোবর বাছাইয়ের ম্যাচে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজরা। তাই আগস্টের শেষদিকে প্রস্তুতি শুরু করার কথা ব্রিটিশ কোচ জেমি ডের শিষ্যদের। গাইডলাইন প্রসঙ্গে ডা. ইমরান বলেন, ‘যদি আমরা চারপাশের নেতিবাচক প্রভাবগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি এবং খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দ‚রত্ব মেনে চলা ও ভিড়ের মধ্যে না যাওয়ার মতো নির্দেশনাগুলো মেনে চলেন, তবে কোভিড-১৯ মুক্ত পরিবেশ পাওয়া সম্ভব।’
সব ফুটবলার, কোচ, কর্মকর্তা ও সাপোর্ট স্টাফের পাশাপাশি ক্যাটারিং সার্ভিস, স্টেডিয়াম ও ডরমেটরির স্টাফদের প্রত্যেকের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানোর সুপারিশও করেছে বাফুফের মেডিক্যাল কমিটি।
খেলোয়াড়দের বহনকারী যানবাহনের চালক ও সহযোগীদের করোনা পরীক্ষা করানোর প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন ডা. ইমরান। তার কথায়, ‘কোনো আক্রান্ত ফুটবলার কিংবা কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি জাতীয় দলের সঙ্গে থাকলে প্রশিক্ষণ পুনরায় শুরু করার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি আরো জানান, ফিফা তাদের নিজস্ব গাইডলাইন চ‚ড়ান্ত করার আগে ছয়টি কনফেডারেশন, মেডিক্যাল অফিশিয়াল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। ফুটবলের শীর্ষ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি স্পষ্টভাবে বলেছে যে, নিজ নিজ দেশের মহামারি পরিস্থিতি ও বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবার ভিত্তিতে ফেডারেশনগুলো তাদের গাইডলাইন প্রণয়ন করবে। পুরো দলের একসঙ্গে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানোর পরিবর্তে অনুশীলন ক্যাম্প শুরুর কমপক্ষে ৭২ ঘন্টা আগে ছোট ছোট দলে ভাগ করে খেলোয়াড়দের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন ডা. ইমরান। যেখানে অনুশীলন হবে সেখানে ভ্রমণ করার আগে ফুটবলারদেরকে আইসোলেশনে রাখার পক্ষপাতী তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।