Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইনকিলাবের অগ্রযাত্রা ঠেকানো যাবে না

বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ জুলাই, ২০২০, ১২:০২ এএম

দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন ও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দৈনিক ইনকিলাবের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার তাদের ’৭৫-এর চরিত্রকে প্রকাশ করেছে। ’৭৫ সালে মাত্র ৪টি পত্রিকা বাদে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। মামলার মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দৈনিক ইনকিলাবের অগ্রযাত্রা ঠেকানো যাবে না। তারা অবিলম্বে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার এবং উল্লেখিত কালাকানুনটি বাতিলের দাবি জানান।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সভাপতি, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মুফতি মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী, মহাসচিব মুফতি শেখ মুজিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ড. মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মুফতি আতাউর রহমান খাঁন, ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি আবু সাঈদ প্রমূখ একযুক্ত বিবৃতিতে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা ও হুমকি-ধমকি দিয়ে দৈনিক ইনকিলাবের নির্ভীক সংবাদ পরিবেশনা ও অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত যাবে না। তারা অনতিবিলম্বে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যহারের দাবি জানান।
এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার : জাতীয় কলামিস্ট ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকার দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রতিহিংসামূলক মামলা সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করেছে। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের খুশী রাখার জন্যই এ ধরনের মামলা রুজু হচ্ছে যা বিচার বিভাগের জুডিশিয়াল নোটিশে নেয়া অত্যাবশ্যক। তিনি ডিজিটাল আইনের মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।

জাতীয় শিক্ষক ফোরাম : জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এবিএম জাকারিয়া গতকাল বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ইনকিলাবের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার তাদের ’৭৫-এর চরিত্রকে প্রকাশ করেছে। ’৭৫ সালে মাত্র ৪টি পত্রিকা বাদে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলো তৎকালীন সরকার। নেতৃদ্বয় বলেন, মামলা দায়েরের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দৈনিক ইনকিলাবের অগ্রযাত্রা ঠেকানো যাবে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে তথাকথিত কালাকানুনটি প্রণয়ন করা হয়েছে মত প্রকাশের পথরুদ্ধ করতেই। গণমাধ্যম ও নাগরিকদের বিরুদ্ধে কথায় কথায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার মেনে নেয়া যায় না। তারা অবিলম্বে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার এবং উল্লেখিত কালাকানুনটি বাতিলের দাবি জানান। ষড়যন্ত্র করে সত্য প্রকাশে নির্ভীক দৈনিক ইনকিলাবের কন্ঠরোধ যাবে না বলেও তারা উল্লেখ করেন।

ইসলামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট : সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী ইসলামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক ড. মাওলানা শহীদুল ইসলাম ফারুকী ইনকিলাবের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ইনকিলাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সততা ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে এদেশের আলেম সমাজসহ কোটি কোটি সাধারণ পাঠকের আস্থা, ভালোবাসা ও সুখ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। একটি গোষ্ঠী ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করতেই ইনকিলাব সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে। আমরা এ মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা মনে করি এই মিথ্যা মামলা দায়রের প্রকৃত উদ্দেশ্য সরকারকে বিব্রত করা এবং ইনকিলাবের মত বহুল প্রচারিত একটি দৈনিকের শ্বাসরুদ্ধ করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। স্বাধীন সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং দুর্নীতিবাজ অপরাধচক্রের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। দেশবাসী এ ধরনের পদক্ষেপ কোনো দিন মেনে নেবে না। এতে সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ করবে বলেও আমরা মনে করি। অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি হয়রানিমূলক এ আইনে গ্রেফতারকৃত সকল সাংবাদিকের মুক্তি দাবি জানান।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বাংলাদেশ : আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান আল্লামা মো. ওবায়দুল হক নঈমী, মহাসচিব পীরে তরিকত আল্লামা মো. মছিউদ্দৌলা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদি ইনকিলাবের বিরুদ্ধে মামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, জামাতে ইসলামীর মদদপুষ্ট তাদের অর্থ বিত্তে কাকতালীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত ল²ীপুর-২ আসনের এমপি পাপুল কুয়েতে মানবপাচার ও অবৈধ বাণিজ্যে লিপ্ত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে দেশের ভাবমর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় দেশের বহুল প্রচারিত জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাব এ বিষয়ে সত্য-সাহসী তথ্যভিত্তিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রচলিত নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে সরাসরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রজু করেছে যা আইনের অপপ্রয়োগ। তারা বলেন, এই আইনটি প্রণয়নের সময়ে প্রশ্ন ওঠায় সরকার বলেছিল অপপ্রয়োগ বা অযথা কাউকে হয়রানি করা হবে না। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।

 



 

Show all comments
  • * শওকত আকবর * ৩ জুলাই, ২০২০, ১০:১৫ এএম says : 0
    বস্তুনিস্ঠ সংবাদ প্রকাশে ইনকিলাবের বিকল্প নাই।এ এম এম বাহাউদ্দিন একজন সত্যপ্রকাশের ধারক ও বাহক।তার বিরুদ্ধে মিথ্যামামলা প্রত্যাহার করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইনকিলাব

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ