নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সাড়ে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর মেয়াদ শেষে আইসিসির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন শশাঙ্ক মনোহর। নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের আগ পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করবেন সংস্থাটির ডেপুটি চেয়ারম্যান ইমরান খাজা। গতপরশুর বোর্ড মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে আইসিসি। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রক্রিয়া আগামী সপ্তাহের মধ্যে আইসিসির বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হবে। সেখানে জোরেসোরে শোনা যাচ্ছেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ও ভারতীয় বোর্ডের বর্তমান প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলির নাম।
যেন কেবল এই সময়টির অপেক্ষাতেই ছিলেন এন শ্রীনিবাসন। আইসিসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছাড়ার পরই মনোহরকে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করলেন শ্রীনি। আইসিসির সাবেক এই চেয়ারম্যানের মতে, মনোহর একজন ভারত-বিরোধী এবং ভারতীয় ক্রিকেটের বিশাল ক্ষতি করেছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া তার বক্তব্যমতে, বাস্তবতা বুঝেই পালিয়ে গেছেন মনোহর, ‘বিসিসিআইয়ে নতৃন নেতৃত্ব (সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে বর্তমান বোর্ড) আসার পরই শশাঙ্ক বুঝে গেছে, সে আর ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে না। এই সুযোগই সে কাজে লাগিয়েছে। সে জানত যে তার দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার উপায় নেই, এজন্যই ভেগে গেছে।’
২০১৪ সালের জুনে আইসিসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন শ্রীনিবাসন। ২০১৫ সালের নভেম্বরে নাটকীয় এক পালাবদলে তাকে সরানোর পর দায়িত্ব পান মনোহর। তার প্রতি শ্রীনিবাসনের প্রবল ক্ষোভ স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠছে কথাতেই। তার মতে, মনোহর কখনোই ভারতের স্বার্থ দেখেননি, ‘আমার ব্যক্তিগত মত হলো, শশাঙ্ক ভারতীয় ক্রিকেটের এতটাই ক্ষতি করেছে যে তার বিদায়ে ভারতের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তি দারুণ খুশি হবে। আর্থিকভাবে ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষতি করেছে সে, আইসিসি ভারতের সুযোগের বড় ক্ষতি করেছে সে। সে চ‚ড়ান্ত ভারত বিরোধী এবং বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে। সে এখন পালিয়ে যাচ্ছে, কারণ সে জানে, ভারতীয় বোর্ডের এখনকার নেতৃত্বের কাছ থেকে কোনো সম্মান সে পাবে না। সে বিশাল ক্ষতি করেছে ভারতের।’
মনোহর ভারতীয় হয়েও বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের একচ্ছত্র আধিপত্য কমাতে কাজ করেছেন। ভারতের ক্রিকেট কর্তাদের সঙ্গে তার মনোমালিন্য তাই লেগেই ছিল। শ্রীনিবাসন তাই মনোহরকে বলছেন কুচক্রী, ‘তার বিদায় ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য স্বস্তির। শশাঙ্ক কখনোই লড়াইয়ে টিকে থাকার লোক নয়। ২০১৫ সালে সে ভারতীয় বোর্ড ছেড়েছে চরম দুর্যোগের সময়। এখন মহামারীর মধ্যে আইসিসি ছেড়ে পালাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুশি যে এমন লোক আর আইসিসিতে নেই।’
বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের গুরুত্ব কমানো নিয়ে মনোহরের প্রতি শ্রীনিবাসনের যে ক্ষোভ, সেই একই কারণে মনোহরের প্রতি ক্রিকেট বিশ্বের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা ফুটে উঠেছে নানা সময়ে। শ্রীনিবাসন আইসিসির দায়িত্ব নেওয়ার পর মূলত তার ভাবনা ও উদ্যোগ থেকেই জন্ম হয়েছিল ‘বিগ থ্রি’ ধারণার। যেটি নিয়ে সে সময় আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল তুমুল। ভারতের সঙ্গে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বোর্ড মিলে বিশ্ব ক্রিকেটে ছড়ি ঘোরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আইসিসির রাজস্বের একটা বড় অংশ এই তিন বোর্ড মিলে ভাগাভাগি করে নেওয়ার ছক করা হয়েছিল। আর্থিক দাপটের পাশাপাশি বিশ্ব ক্রিকেটের সার্বিক কতৃত্বও থাকত তাদের হাতে। অন্য দেশের বোর্ডগুলো ছিল অস্তিত্বের সঙ্কটে। সব সমালোচনা উপেক্ষা করে শ্রীনিবাসন তার ভাবনা কার্যকর করেছিলেন। তবে সেটি দীর্ঘায়িত হয়নি মনোহরের কারণে। দৃশ্যপটে মনোহরের আবির্ভাবেই মূলত ভেস্তে যায় ‘বিগ থ্রি’।
শ্রীনিবাসনকে ঘিরে বিতর্ক আছে আরও। আইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। জুয়াড়িদের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে তার জামাতাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার মালিকানাধীন ফ্র্যাঞ্চাইজি চেন্নাই সুপার কিংসও নিষিদ্ধ ছিল আইপিএলে। ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠার পরই ভারতের সুপ্রীম কোর্টের আদেশে ২০১৪ সালে ভারতীয় বোর্ডের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় শ্রীনিবাসনকে। ক্রিকেটের বাইরেও এই শিল্পপতির বিরুদ্ধে নানা সময়ে অভিযোগ উঠেছে দুর্নীতির। যা প্রকাশ্যে এসেছিল মনোহরের আমলেই। এবার এক সুযোগে সব হিসেব চুকিয়ে দিলেন সুযোগসন্ধানী শ্রীনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।