Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিপজ্জনক অবস্থায় ভারতের অর্থনীতি, পরিকাঠামোয় ধাক্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০২০, ৫:৩৬ পিএম

করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন জারি করার আগে থেকেই কাহিল ছিল ভারতের অর্থনীতি। এপ্রিলে অবস্থা আরও খারাপ হয়। মঙ্গলবার প্রকাশিত ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, আশঙ্কা মিলিয়েই চলতি অর্থবর্ষের শুরুর দু’মাসে রাজকোষ ঘাটতি পৌঁছেছে সারা বছরের লক্ষ্যমাত্রার ৫৮.৬ শতাংশে। কারণ, লকডাউনের জেরে কেন্দ্রের কর আদায় বিপুল পরিমাণে কমে গিয়েছে। করোনা মোকাবেলায় খরচ হয়েছে তুলনায় বেশি।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একই কারণে মে মাসে প্রধান আটটি পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে এপ্রিলের মতোই উৎপাদন কমেছে। সঙ্কোচনের হার ২৩.৪ শতাংশ। ঋণ বৃদ্ধির হারও নেমেছে ৭ শতাংশে। পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল-মে মাসে রাজকোষ ঘাটতির অঙ্ক ৪.৬৬ লাখ কোটি টাকা। যেখানে গোটা অর্থবর্ষে তা হওয়ার কথা ৭.৯৬ লাখ কোটি (জিডিপি-র ৩.৫ শতাংশ)। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি, ঘাটতি হোক বা সরকারের আয়, বাজেটে বাঁধা বেশিরভাগ লক্ষ্যই করোনার আবহে বদলে ফেলা ছাড়া গতি নেই। কারণ, কর থেকে আয় বিপুল কমেছে।

তবে মোদি সরকারকে দায়ী করে অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন, অর্থনীতি দীর্ঘ দিন ধরেই ঝিমিয়ে। সরকার তা মানেনি বলেই সেই ‘রোগ’ সারেনি। করোনা তাতে খাঁড়ার ঘা বসিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এপ্রিল-মে মাসে সরকারের ব্যয়ের অঙ্ক ছুঁয়েছে, বাজেট অনুমানের ১৬.৮ শতাংশ। এক বছর আগে তার ছিল ১৮.৪ শতাংশ।

এদিকে, মে মাসে আটটি মূল পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সামগ্রিক ভাবে উৎপাদন কমে গিয়েছে ২৩.৪ শতাংশ। এপ্রিল-মে মিলিয়ে সঙ্কোচনের হার ৩০ শতাংশ। এই দুই মাসে সরকারের আয় হয়েছে ৪৪ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা। বাজেট অনুমানের ২.২ শতাংশ। অথচ মোট খরচ হয়েছে ৫.১১ লাখ কোটি। বাজেট অনুমানের ১৬.৮ শতাংশ। জানুয়ারি-মার্চে কেন্দ্রের ঋণ ৯৪.৬২ লাখ কোটি টাকা। মে মাসে ব্যাঙ্ক ঋণের বৃদ্ধির হার কমেছে ৭ শতাংশ। আইএমএফের দাবি, করোনা সংক্রমণ আরও ছড়ানোয় স্বাস্থ্য সঙ্কটকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির সামনে এটাই সব থেকে বড় ঝুঁকি। তারা আগেই চলতি অর্থবর্ষে ৪.৫ শতাংশ জিডিপি সঙ্কোচনের পূর্বাভাস দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, লকডাউনে এমন পরিস্থিতি প্রত্যাশিতই ছিল। এখন তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল, জুন থেকে লকডাউন শিথিল হওয়ার ফলে অর্থনীতি কত তাড়াতাড়ি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছে। ফের কর্মক্ষেত্রে ফিরছেন অনেকে। বিক্রিবাটা বাড়ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, লকডাউন শিথিলের পরে আর্থিক কার্যকলাপ শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরার লক্ষণ একে বলা যায় না। বরং মূল্যায়ন সংস্থাগুলি বলছে, ভারতের ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে। লকডাউনের প্রভাবে জাতীয় উৎপাদনের একাংশ স্থায়ী ভাবে মুছে গিয়েছে।

বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ, এডিবি-র দাবি, চলতি অর্থবর্ষে দেশের অর্থনীতির বহর কমতে পারে ৫-৬ শতাংশ। সঙ্কোচনের ইঙ্গিত দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। এ দিনই এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস বলেছে, দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে এতটাই ধাক্কা দিয়েছে করোনা যে, স্বল্পমেয়াদে চোট সারানো কঠিন। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ঋণ দেয়ায়। অর্থাৎ, পরোক্ষে অর্থনীতিতে। সূত্র: এবিপি।

 



 

Show all comments
  • saif ১ জুলাই, ২০২০, ৬:০৪ পিএম says : 0
    অশুবিধা নেই আমরা আছিনা, আমাদের পন্য তারা ডুকতে না দিলেও আমরা জোর করেই আমদানি করবো!!! সেই সাথে মধ্যপ্রাচ্যের আমাদের মুসলমান ভাইয়েরাতো আছেই যাদের কাছে এই ভারতীয়রা শোনায় শোহাগা কোন অসুবিধা নেই তাদের জন্যে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ