Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তাজা ফল কেন খাবেন

| প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

এই সময়ে বাজার জুড়ে থাকে শুধু ফল আর ফল। এ সময়কার ফলগুলো হল তরমুজ, লিচু, আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, বেল, পানিফল, নাশপাতি ইত্যাদি। কলা, পেঁপে সারা বছরই পাওয়া যায়। গরমে প্রচুর ফল খান এবং দেহে সঞ্চয় করুন ভিটামিন ও খাদ্যশক্তি।
১) তরমুজ: প্রথমেই আসা যাক তরমুজের কথায়। গ্রীষ্মের শুরু থেকেই বাজারে এবং রাস্তার পাশে অনেক জায়গায় স্তুপাকারে সাজানো থাকে তরমুজ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তরমুজকে বলে ফলের রাজা। তরমুজে রয়েছে ত্বকে আদ্রতা জোগানোর অসীম ক্ষমতা। তরমুজ ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল। এতে রয়েছে ৯৭ ভাগ জলীয় অংশ সেজন্য গরমে তরমুজ খাওয়া ভালো। কারণ ক্রমাগত ঘাম হওয়ার জন্য যে জলীয় অংশ শরীর থেকে বেরিয়ে যায় তরমুজ তা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এ ছাড়া তরমুজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজমে সাহায্য করে ও কিডনির কাজকর্ম ঠিক রাখে।
২) কাঁঠাল: কাঁঠাল আরেকটি পুষ্টিকর ফল। বাজারে কাঁচা ও পাকা কাঁঠাল পাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল তরকারি হিসেবে উত্তম সবজি। পাকা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর শর্করা, আমিষ ভিটামিন ও খনিজ লবণ। গ্রীষ্মকালীন সময়ে গ্রামবাংলার মানুষ ভাতের পরিপূরক হিসেবে পাকা কাঁঠাল খেয়ে থাকে, কাঁঠালের বিচিও খুব পুষ্টিকর। ফাইবার বা আঁশ কাঁঠালে বেশি থাকার জন্য কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
৩) লিচু: গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে লিচু আগে বাজারে ওঠে এবং জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। খাদ্যমানের দিক থেকে লিচু একটি উৎকৃষ্ট ফল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শ্বেতসার, ভিটামিন ও খনিজ লবণ।
৪) আম: গ্রীষ্মকালের ফল বলতে সবার আগে মনে পড়ে আম। পাকা আম হল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল। ১০০ গ্রাম আমে ১০০০-১৫০০ আইইউ ভিটামিন ‘এ’ থাকে যার অভাবে অন্ধত্বসহ চোখের নানা রোগ, চুলপড়া, খসখসে চামড়া, হজমের গোলযোগ ইত্যাদি দেখা যায়। এছাড়াও আমে ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’ খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম ও প্রচুর খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়।
৫) জাম: জাম শুধু পাওয়া যায় গরম কালেই। নানা রকম খনিজ পদার্থের মধ্যে জামে আয়রন থাকে সবচেয়ে বেশি। সেজন্য বলা হয় জাম খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। এ ছাড়া সর্দি-কাশি, হজমের গন্ডগোল ও বাতের অসুখে জাম উপকারী।
৬) আনারস: এ সময়কার আরেকটি সুস্বাদু ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল হল আনারস। সর্দি-কাশিতে আনারস খেলে তা শ্লেষ্মা ও মিউকাসকে তরল করে।
৭) পেঁপে: পাকা পেঁপে আরেকটি ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল। ১০০ গ্রাম পেঁপেতে ভিটামিন ‘এ’ থকে ১১১০ ইউনিট। এ ছাড়া থাকে প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, খনিজ লবণ এবং খাদ্যশক্তি। কাঁচা পেঁপেও অন্যতম পুষ্টিকর সবজি। পেঁপের সাদা আঠায় প্যাপেইন নামক এনজাইম থাকে, যা প্রোটিন পরিপাকে সাহায্য করে। পেঁপে সহজপাচ্য। গরমে পাকা পেঁপে অথবা সেদ্ধ করা কাঁচা পেঁপে অবশ্যই খাবেন।
৮) বেল: একটি পুষ্টিকর ফল। এতে থাকে প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। গ্রীষ্মের কাঠফাটা দুপুরে এক গ্লাস বেলের শরবত খেলে কার না প্রাণ জুড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও বেলের জুড়ি নেই।
৯) পানিফল: গরমকালে পানিফল আরেকটি পুষ্টিকর ফল। এতে শতকরা ৪.৭ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায় যা আপেল, আঙুর, কলা ও পেয়ারা থেকে বেশি। এ ছাড়া রয়েছে শ্বেতসার, খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি। খাদ্যশক্তি পাওয়া যায় ১১৫ কিলোক্যালোরি।
১০) কলা: ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই খেতে পারে, অত্যন্ত পুষ্টিকর দামে তুলনামূলক সস্তা, হাতের কাছেই পাওয়া যায়, সারা বছরই পাওয়া যায় এমন একটি ফল হল- কলা। ১০০ গ্রাম কলায় থাকে ১৫৩ কিলোক্যালোরি শক্তি, শর্করা ৩৫ ভাগ, খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’ এবং পেকটিন। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি করে কলা আমাদের অবশ্যই থাকা উচিত।
আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ