মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
শুধু শরীরে আক্রমণই নয়, মানুষের জিনের তথ্যও চুরি করে নেয় করোনাভাইরাস। এরপর তার সাথে নিজেদের জিনোম যুক্ত করে হাইব্রিড জিন বানিয়ে ফেলে এই ভাইরাস। সম্প্রতি এই তথ্য জানতে পেরেছেন নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা। ‘সেল’ সায়েন্স জার্নালে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তারা।
মাউন্ট সিনাইয়ের গবেষকরা বলছেন, শুধু করোনা নয়, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, লাসা ভাইরাস যাকে বলে লাসা হেমারেজিক ফিভার, অন্যান্য সংক্রামক প্যাথোজেনেরও এমন একটা চুরির প্রবণতা থাকে। হোস্ট বা বাহক কোষে বেশিদিন বেঁচে থাকতে শুধুমাত্র নিজেদের জিনোমটুকু নিয়ে থাকলেই চলে না। বরং নিজেদের জিনোমকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করতে বাহকের জিনও দরকার হয়। তবে সব প্যাথোজেনই যে খুব উন্নত মানের চোর সেটা বলা যায়। চুরির হাত কারও বেশি, কারও বা কম। সার্স-কভ-২ যেহেতু সব ভাইরাসকেই টেক্কা দিয়ে দিয়েছে, তাই তাদের চুরিবিদ্যার কৌশল একটু বেশিই উন্নত। নিখুঁতভাবে মানুষের জিনের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের জিনের গঠন বদলে ফেলে আপ টু ডেট হয়ে যাচ্ছে এই ভাইরাস। ফলে শক্তিও বাড়ছে, টিকে থাকার সময়ও বাড়ছে। সংক্রামক ক্ষমতা বাড়িয়ে এক শরীর থেকে আরেক শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে।
মাউন্ট সিনাই স্কুল অব মেডিসিনের গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড ইমার্জিং প্যাথোজেন ইনস্টিটিউট এবং ব্রিটেনের গ্লাসগো সেন্টার এমআরসি-ইউনিভার্সিটি ফর ভাইরাস রিসার্চের বিজ্ঞানীরা তথ্য-প্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছেন কীভাবে মানুষের জিন থেকে তথ্য চুরি করে নিতে পারে ভাইরাস। সব ভাইরাসের এ ক্ষমতা নেই। সেগমেন্টেড নেগেটিভ স্ট্র্যান্ড আরএনএ ভাইরাসের জিন-চুরির এমন ক্ষমতা আছে। ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, মানুষের জিনের খবরাখবর অর্থাৎ জেনেটিক সিগন্যাল চুরি করে নিজেদের প্রোটিন তৈরি করে ভাইরাস। এমন প্রোটিনের খোঁজ আগে মেলেনি। ভাইরোলজিস্টরা এই প্রোটিনের নাম দিয়েছেন ইউএফও অর্থাৎ আপস্ট্রিম ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন ওপেন রিডিং ফ্রেম। এই ইউএফও প্রোটিন তৈরি হয় কিছুটা ভাইরাল জিনোম ও বাকিটা মানুষের জিন দিয়ে। ভাইরাল জিনোম সিকুয়েন্সের ঘাটতি পূরণের জন্য মানুষের জিন যুক্ত করে হাইব্রিড জিন তৈরি করে ভাইরাস।
মাউন্ট সিনাইয়ের মাইক্রোবায়োলজিস্ট ইভান মারাজি বলেছেন, আএনএ ভাইরাস নিজেদের প্রোটিন তৈরি করতে পারে না। মানুষের কোষে এন্ট্রি নেয়া এবং কোষের ভেতরে সংখ্যায় বাড়তে হলে তাদের হোস্ট সেল বা বাহক কোষের প্রোটিনের সাহায্য নিতেই হয়। এখন মানুষের দেহকোষ তো আর ভাইরাসের জন্য রাস্তা খুলে রাখে না, সব কোষেরই রক্ষী থাকে যারা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা প্যাথোজেন দেখলেই তাদের তাড়িয়ে দেয়। গবেষকরা বলছেন, এই কারণেই ভাইরাস সবচেয়ে আগে বাহক কোষের রিসেপটর খুঁজে নেয়, যেখান দিয়ে তারা গোপনে ঢুকতে পারবে। এরপর সংক্রমণ ছড়াতে গেলে বা মানুষের শরীরে টিকে থাকতে হলে আরও জোরালো প্রোটিনের দরকার হয়। এই প্রোটিন তারা তৈরি করে মানুষের জিনের তথ্য চুরি করেই।
গবেষকরা বলছেন, আরএনএ ভাইরাস দেহকোষের মেসেঞ্জার আরএনএ এর দিকে নজর রাখা শুরু করে। এই মেসেঞ্জার আরএনএ-র মধ্যে কোষের যাবতীয় গোপন খবর থাকে। এমআরএনএ-র একটা অংশ তারা কেটে নেয়, বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে ‘ক্যাপ-স্ন্যাচিং’। মেসেঞ্জার আরএনএ-র অংশ হাতে চলে আসা মানেই জিনের গোপন খবরও মুঠোয় চলে আসা। এরপর নিজেদের ভাইরাল সিকুয়েন্সকে ওই অংশের সঙ্গে জুড়ে নিয়ে হাইব্রিড জিন তৈরি করে ফেলে ভাইরাস।
এখানেই কাজ শেষ নয়। এরপর হোস্ট জিন সঙ্গে নিয়ে এই ভাইরাস মানুষের কোষে নিজেদের সিগন্যাল পাঠায়। একে বলে ‘স্টার্ট স্ন্যাচিং’। এভাবে নতুন হাইব্রিড-জিনের ট্রান্সলেট করে সংখ্যায় বাড়তে থাকে ভাইরাস। নতুন জিন বা নভেল জিন হয় আগের থেকেও বেশি শক্তিশালী। গবেষকরা বলছেন, ভাইরাসের ওই ইউএফও প্রোটিনকে যদি চিহ্নিত ফেলা যায় তাহলেই ভাইরাসকে ঠেকানোর উপায় পাওয়া যাবে। ভ্যাকসিন গবেষণায় যা বিশেষভাবে কাজে লাগবে। সূত্র: সায়েন্স ডেইলি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।