Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বয়কটের মধ্যেই ভারতে চলছে চীনা পণ্যের রমরমা বাণিজ্য

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২০, ২:৩৩ পিএম

ভারত-চীন সংঘর্ষে লাদাখ সীমান্তে ভারতের ২০ জন সেনা নিহতের ঘটনায় ভারতের অভ্যন্তরে জ্বলছে প্রতিহিংসার আগুন। বিভিন্নমহল থেকে ডাক দেওয়া হচ্ছে চীনা পণ্য ও চীনা অ্যাপ বয়কটের। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের মানুষ রাগে গজগজ করছে আর তখনই ঝোড়ো ব্যাটিং করে নিল নামজাদা দুই চিনা ব্র্যান্ড। শাওমি এবং ওয়ানপ্লাস। চীনের আক্রমণে ভারতের জওয়ান শহিদ হলেও সে দেশে এই দুই চিনা ব্র্যান্ডের বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়েনি, তা প্রমাণ করে দিল শাওমি এবং ওয়ানপ্লাস।
গত ১৫ই জুন ওয়ানপ্লাস তাদের নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন ওয়ানপ্লাস৮ এবং ওয়ানপ্লাস৮ প্রো লঞ্চ করেছিল। সেল শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই এই দুই স্মার্টফোনেরই স্টক সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যায়। ১৫ জুনই ওয়ানপ্লাস৮-এর প্রথম ব্যাচের বিক্রি শুরু হয়েছিল। কয়েক মুহূর্তেই সব লাপাত্তা। আর তারপরে ১৮ই জুন এই স্মার্টফোনের দ্বিতীয় সেল শুরু হয়। দ্বিতীয় বারও সেই এক কাণ্ড। নিমেষে শেষ সমস্ত স্টক। সচরাচর কম দামের স্মার্টফোন অন্তত ওয়ানপ্লাস-এর মেলে না। এই দুটো স্মার্টফোনেরই দাম প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি এবং তারও একটু বেশি। কিন্তু তাতেও সেই ভারতবাসীর চিনা ওয়ানপ্লাস কেনারই হিড়িক আর একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, চিনা পণ্য বয়কট সহজ নয়!
একই অবস্থা হয়েছে শাওমির ক্ষেত্রেও। ১৮ জুনেই ভারতের বাজারে প্রথম বিক্রি শুরু হয় শাওমির মি নোটবুক ১৪ সিরিজের। অ্যামাজনের পণ্য তালিকায় দেখা যাচ্ছে ১৯ জুনেই এটি সোল্ডআউট হয়ে গেছে।
ভারতে সবথেকে বেশি বিক্রি হয় যে স্মার্টফোন, তা হল শাওমি-র। কিছুদিন আগেই এই চিনা সংস্থা ভারতের মার্কেটে তাঁদের প্রথম ল্যাপটপ লঞ্চ করে, যার সেল শুরু হয় গত ১৭ই জুন। সেই সেলে ব্যাপক হারে বিক্রি হয়েছে শাওমি-র ল্যাপটপ। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, শাওমি-র প্রথম ল্যাপটপই ভারতের বাজারে ব্যবসার নিরিখে অত্যন্ত সফল। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, খুবই তাড়াতাড়ি এই ল্যাপটপের দ্বিতীয় ব্যাচের সেল নিয়েও হাজির হতে চলেছে শাওমি ।
শুধু এ দুটি ডিভাইসই নয়, গালওয়ান উপত্যকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জেরে ভারতজুড়ে যখন চীনা পণ্য বর্জনের ডাক উঠেছে, তখন তার কোনো প্রভাবই পড়ছে চীনা মোবাইল ডিভাইসের ব্র্যান্ডগুলোতে। বরং কিছু ডিভাইসের বিক্রি বেড়ে গেছে।
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ভারতের ইকমার্স মার্কেটপ্লেসগুলোর একাধিক জ্যেষ্ঠ নির্বাহী জানিয়েছেন, চীনা স্মার্টফোন বা ইলেক্ট্রনিক পণ্য বিক্রিতে বয়কট উত্তেজনার কোনো প্রভাব পড়েনি।
যেই পশ্চিমবঙ্গে উত্তেজনার বশে চীনা প্রেসিডেন্ট ভেবে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছিল সেখানেও কিন্তু চীনা স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়ছে হু হু করে। অপো, ভিভো, রিয়েলমি, শাওমি, ওয়ান প্লাসের বিক্রিতে কোনো কমতি নেই। লকডাউনের আগে যেমন বিক্রি হতো, এখনও তেমনই।
দেশটিতে দু’আড়াই মাস লকডাউনে সব বন্ধ ছিল। লকডাউন খুলতেই সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তাছাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ফোনের চাহিদাও এখন বেশি। কারণ ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাও এখন প্রায় পুরোটাই স্মার্টফোনে চলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় জনগণের মধ্যে চীনা পণ্য বর্জনের ডাক জনপ্রিয় হলেও বা সাধারণ জনগণ সত্যি সত্যিই চীনা পণ্য বর্জন শুরু করে করলেও কিন্তু বিশেষ করে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যে ভারতের চীন নির্ভরতা এতো সহজেই মিটবে না। এক্ষেত্রে চীনা গ্যাজেটের কথা তো বলাইবাহুল্য! ফার্টপোস্ট ও আনন্দবাজার পত্রিকা অবলম্বনে

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত-চীন

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ