Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনা নিহতের ঘটনায় বিরোধীদের তোপে মোদি সরকার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২০, ৫:৩৩ পিএম

গত রাতে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত এবং চীনা সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে কর্নেলসহ কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন বিরোধীদল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতার সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বুধবার সকালে টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? কেন তিনি লুকিয়ে আছেন? যথেষ্ট হয়েছে! কী ঘটেছে তা আমাদের জানতে হবে। আমাদের সেনাদের হত্যা করার স্পর্ধা চীনের হয় কী করে? কোন সাহসে তারা আমাদের জমি ছিনিয়ে নেয়?’

কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা, সাবেক অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘৫ মে’র পর থেকে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নীরব। বিদেশি সেনা ভূখণ্ড দখল করে বসে রয়েছে, অথচ দেশের প্রধান চুপ, অন্য কোনও দেশে এমন হতো বলে ভাবা যায়?’ গতকাল মঙ্গলবার কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা বলেন, ‘গতরাতে আমাদের সেনারা নিহত হলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিল দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে। কিছুক্ষণ পরেই সেটি পরিবর্তন হল। এ সব কেন হল, জবাব চাই।’

কংগ্রেস বলেছে, ‘নেপাল তার মানচিত্র পরিবর্তন করে ভারতের অঞ্চল নিজেদের অধীনে দেখাচ্ছে, চীন ভারতের সীমান্ত দখলে ব্যস্ত, পাকিস্তান ভারতে সন্ত্রাসবাদ ছড়াচ্ছে। এতকিছু হওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কখন তার নীরবতা ভঙ্গ করবেন?’ কংগ্রেসের প্রশ্ন, ‘লকডাউন চলাকালীন অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি সরকারের উদাসীন মনোভাব বা ভারত সীমান্তে চলমান অচলাবস্থার সময় প্রতিটি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা দেশবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকের মতো বলে মনে হচ্ছে। এ সব বিষয় কতদিন প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন এড়িয়ে যাবেন?’

অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘সরকারের উচিত, ঠিক কী হয়েছে সে ব্যাপারে আরও দায়িত্বপূর্ণ বিবৃতি দেয়া।’ জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির টুইটার হ্যান্ডেলে তার মেয়ে ইলতিজা বলেন, চীনের সামনে ভারতের ‘ঘর মে ঘুসকে মারেঙ্গে’ (ঘরে ঢুকে মারা) রণনীতি কোথায় গেল? কেন প্রত্যাঘাতের কোনও কথা বলা হচ্ছে না, সেটা সবাই জানতে চায়। পিডিপি’র সচিব বেদ মহাজন বলেন, ‘পাল্টা মার দরকার। এটা ১৯৬২ সাল নয়, এটা ২০২০ সাল। ওই আগের কথা বলে কোনও লাভ নেই।‘

জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, সেনা কমানোর সময় যদি এরকম ঝামেলা হয়, তাহলে আসলে ঠিক কতটা গণ্ডগোল রয়েছে, সেটা ভাবুন। জম্মু-কাশ্মীরের কংগ্রেস প্রধান গুলাম আহমেদ মীর বলেন, রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা যেকোনও সরকারের কর্তব্য। সরকারের উচিত কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা। অন্যথায় সেনাকে নির্দেশ দেয়া হোক আমাদের ভূমি সুরক্ষিত করার জন্য।

এদিকে, সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশ, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে সীমান্তের পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণের। অন্যদিকে, গত সোমবার লাদাখ সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষের পরে বস্তুত চীনের অবস্থান আরও কঠোর হয়েছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্যত হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ভারত যেন একতরফা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভুল না করে। চীন শান্তি চায়। তবে চীন ভয় পায় না। পাল্টা জবাবে ভারত বলেছে, চীন চাইলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। ভারত সর্বদা নিজের সার্বভৌম ভূখণ্ডেই সীমাবদ্ধ থাকে। আমরা আশা করি, চীনও সেই নীতিই মেনে চলবে।

 



 

Show all comments
  • Zahangir ১৭ জুন, ২০২০, ৬:২৭ পিএম says : 0
    কোথায় মোদিজি'র সার্জিক্যাল স্ট্রাইক??
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ