Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মোদির ‘দোলনা নীতি’ : উত্তাল ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২০, ১১:০৫ এএম

সীমান্তে হত্যা নিয়ে ভারতের রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। প্রায় সব কটি রাজনৈতিক দল প্রধানমন্ত্রী তীব্র সমালোচনায় মেতেছেন। তাদের দাবী মোদীর কারণেই সীমান্তে এতোবড় বিপর্যয় হয়েছে দেশের।
মাত্র আট মাস আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাবরমতীর কাছে দোলনায় দুলেছিলেন চীনের প্রবল প্রতাপশালী প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে। ২০১৮ সালে উহানের মনোরম হ্রদের ধারে কূটনৈতিক আড্ডায় মেতেছিলেন এই চীনা সর্বাধিনায়কের সঙ্গেই। মাত্র আট মাস আগে মমল্লপুরমের ঐতিহাসিক আবহে নদীবক্ষে আলোচনা হয়েছিল মোদি-শি-র।

এদিকে পূর্ব লাদাখে গত দু’মাস ধরে চীনের নিরবচ্ছিন্ন চাপের মুখে বিরোধীরা ধারাবাহিক ভাবেই প্রশ্ন তুলছিলেন, এত করে লাভটা কী হল? আর আজ অন্তত ২০ জন সেনার মৃত্যুর পরে (সাড়ে চার দশক পরে চীনের সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু) ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতে প্রশ্নটা আরও বাড়ছে।

এমন অভিযোগও উঠছে, যতটা গর্জে ওঠার কথা ছিল ‘ছাপান্ন ইঞ্চি’ খ্যাত প্রধানমন্ত্রীর, তার ধার-কাছ দিয়েও গেল না তার সরকার। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের প্রশ্ন, ‘‘৫ মে-র পর থেকে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নীরব। বিদেশি সেনা ভূখণ্ড দখল করে বসে রয়েছে, অথচ দেশের প্রধান চুপ, অন্য কোনো দেশে এমন হত বলে ভাবা যায়?’’ শুধু তাই নয়, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীসহ বিরোধীরা যখন ৫ মে-র পর থেকে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন, চীন ভারতের ভূখণ্ড কতটা দখল করেছে, সরকার টুঁ শব্দ করেনি। বরং এক গুরুত্বপূর্ণ, বর্ষীয়ান মন্ত্রী বেফাঁস কিছু বলে ফেলে আবার তা প্রত্যাহার করেন।
অথচ আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, চীন নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে। তা হলে এত দিন কেন তা স্বীকার করা হয়নি?

বিরোধীরা এ প্রশ্নও তুলেছেন, এত জন সেনার মৃত্যুর পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেন প্রায় ২০ ঘণ্টা বাদে প্রথম বিবৃতি দিল এবং তাও সাংবাদিকদের অবিরল প্রশ্নের পর! যে বিবৃতিতে বলা হল, ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার স্থিতাবস্থার পরিবর্তন করার লক্ষ্যে চীন সচেষ্ট হয় ১৫ জুন রাতে। তার ফলাফল, মারাত্মক সংঘর্ষ।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী, সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি সবাই চীনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে ভারতকে আরও আগ্রাসী ভূমিকায় দেখতে চেয়ে মুখ খুলেছেন।

তবে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সম্মিলিত মত, পাকিস্তানের সীমান্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যে ভাবে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে প্রত্যাঘাতের রাস্তায় যাওয়া হয়, ভারতের চীন নীতি যে তার থেকে বহুগুণ নরম, তা আজকের ঘটনা স্পষ্ট করে দিয়েছে। পুলওয়ামা হামলার প্রত্যাঘাতে বালাকোট অভিযানের পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ঘরে ঢুকে মেরে আসাই তাদের নীতি। এবার তো চীন ঘরে ঢুকে মেরে গেল! সূত্র: আনন্দবাজার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ