গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীতে আজ শুক্রবার রাজধানীসহ সারাদেশে মসজিদগুলোতে জুমার নামাজে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে। জুমার নামাজের দু’ঘন্টা আগ থেকেই বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের প্রত্যেক প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক বুথ স্থাপন করা হয়। অনেক মসজিদে জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় মুসল্লিরা রাস্তার ওপর জুমার নামাজ আদায় করেন। নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুমার নামাজে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিববুল্লাহ হিল বাকি নদভী বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। করোনা রোগী হলেই তার সেবাশুশ্রুষা আমরা বাদ দিয়ে দিচ্ছি। তিনি বলেন, হাদীসে আছে যতক্ষণ একজন ব্যক্তি রোগীর সেবা করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করতে থাকবে। কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে।
পেশ ইমাম বলেন, যতগুলো লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তাদের সেবা করতে গিয়ে শতকরা কত ভাগ লোক আক্রান্ত হয়েছে ? বরং সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা খুবই কম। আক্রান্ত হবার শঙ্কায় এসব রোগীর সেবা বাদ দেয়া একেবারেই অমানবিক। তিনি বলেন, সুস্থ থাকতে আপনি যদি কোনো রোগীর সেবা থেকে দূরে সরে থাকেন আপনি আক্রান্ত হলে অন্যরাও আপনার সেবা থেকে দূরে থাকবে।
পেশ ইমাম বলেন, করোনায় মারা গেলে তার প্রতি কোনো খারাপ ধারণার পরিবর্তে উনি যে শহীদি মর্যাদা পেয়েছেন তার জন্য তার প্রতি সম্মানবোধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, করোনায় মারা গেলে তার দাফন কাপনের সহযোগিতা থেকেও দূরে থাকছে কতিপয় আত্নীয় স্বজন। এ ধরণের কাজ মোটেই উচিত হবে না। অনেক জায়গায় শোনা যাচ্ছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন কাফনে বাধা দেয়া হচ্ছে। অথচ করোনায় মৃত ব্যক্তির ৩ ঘন্টা পরে তার জীবাণুর অস্তিত্ব থাকে না বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্বীকৃত।
নগরীর সেগুনবাগিচাস্থ মসজিদে নূর এর খতীব মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম সুবহানী খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে মুমিনের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহর দিকে ধাবিত হওয়া। মহান আল্লাহ তার বান্দাদের পরিপূর্ণ মুমিন হিসেবে দেখতে চান। এ জন্য কখনো কখনো লাইলাতুল কদরের মতো মহাসুযোগ দান করেন। আবার নেতিবাচক পন্থায়ও আল্লাহর দিকে ধাবিত হওয়ার অবস্থা তৈরি করেন। তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে সর্বপরি রসূল (সা.) এর সুন্নতের ওপর বেশি বেশি আমল করতে হবে। চলমান সঙ্কটে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রসূল (সা.) এর সুন্নতের কোনো বিকল্প নেই বলেও খতীব উল্লেখ করেন।
চকবাজারের ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতীব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি আজ খুৎবার বয়ানে বলেন, মুমিনকে যে কোনো পরিস্তিতিতে ঈমানের ওপর অবিচল থাকতে হবে। ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ধৈর্য্য ও সংযমের মাধ্যমে ঈমানী গুণ অর্জন করতে হবে। সক্ষমদেরকে অক্ষমদের পাশে থাকতে হবে। মাওলানা আফেন্দি বলেন, সকল ধরণের অমানবিক আচরণ বন্ধ করতে হবে। অনাচারের পথ ছেড়ে আল্লাহ ও তার রসূলের (সা.) পূর্ণ অনুগত হতে হবে। তা’হলেই আল্লাহর রহমত মুমিনের ওপর বর্ষিত হবে।
কামরাঙ্গীরচর হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) মসজিদের খতিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী খুৎবার বয়ানে বলেন, আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে অসংখ্যা নেয়ামত দান করেছেন। বান্দার উচিৎ সেসব নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা এবং অধিকহারে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত বন্দেগিতে লিপ্ত থাকা। আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত সমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে তাওহিদ অথাৎ ঈমানের নেয়ামত। মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করার জন্য চতুরমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। আল্লাহ প্রদত্ত দ্বিতীয় নেয়ামত হচ্ছে এলেম। এলেম যাতে মুসলমানদের সন্তানরা শিখতে না পারে এ জন্য হাটহাজারী মাদরাসাসহ দ্বীনি মাদরাসগুলোর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। যে কোনো মূল্যে মুসলমানদের ঈমান ও আমলের হেফাজত করতে হবে। মাওলানা মিয়াজী মরণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে হেফাজতের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।