Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বামীর ঘাতক স্ত্রী নিজেই

চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

অবৈধ মেলামেশা করতে না পাড়ায় মাদকাসক্তকে স্বামীকে হত্যার পর গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে নড়াইল জেলার কালিয়ার ফুলদহ গ্রামে। নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইবাদুল ইসলাম ওরফে ইবাদ শেখ (৩৬)। চাঞ্চল্যকর এই খুনের রহস্য উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগ্রেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার করা হয়েছে আমেনাকে।
জানা গেছে, গত মাসের ৯ তারিখ দিবাগত রাতে নড়াইল জেলার কালিয়া ফুলদহ গ্রামের সবুর শেখের ছেলে ভ্যান চালক মো. ইবাদুল ইসলাম ইবাদ শেখ এর শ্বশুর বাড়ির পাশর্^ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় গত ১৯ মে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। পরে পিবিআই যশোর জেলা টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর বিষয়ে কিছু অসংগতি শনাক্ত হয়। পরে এই মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা অব্যহত রাখে পিবিআই।
পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা জানান, পিবিআই যশোর জেলা ভিকটিম ইবাদুল ইসলামের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পারিবারিক কলহের বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করে তদন্ত করতে থাকে। ভিকটিমের স্ত্রী আমেনা বেগমসহ (৩০) ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নিহতের স্বামী আমেনা বেগম হত্যাকান্ডের সহিত সে একাই জড়িত বলে স্বীকার করে। এরপর পিবিআই তাকে গ্রেফতার করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিবিআই’র এক কর্মকর্তা জানান, নিহত ইবাদের স্ত্রী আমেনা দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। যা পিবিআইয়ের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বীকারোক্তি এবং তার মোবাইল ফোনের কথোপকথন থেকে সত্যতা পাওয়া গেছে।
সূত্রটি জানায়, ঘটনার রাত্রে তার স্ত্রীর কাছে ২ জন খরিদ্দার আসার জন্য যোগাযোগ করে। কিন্তু নিহত ইবাদ শেখ শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করায় খদ্দের আসতে পারছিল না। আর নিহত ইবাদ শেখ সেই দিন রাতে অতিরিক্ত মাদকাসক্ত ছিল। আর খদ্দের দু’জনই দুধের সাথে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করেছিল। এক পর্যায়ে নিহতের স্ত্রী আমেনা ইবাদকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে ঘরের বাহিরে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে নিহত ইবাদ শেখ মাটিতে পড়ে যায়। এরপরও নিহতের স্ত্রী তাকে ওই বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য জোরপূর্বক ধাক্কা দেয়। এতে ইবাদ শেখের সুপারি গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পিবিআই জানায়, ইবাদ শেখ অতিরিক্ত মাদক সেবনের কারণে শারীরিকভাবেও অনেক দুর্বল ছিল। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। আমেনা তার স্বামীর কোমরে থাকা গামছা দিয়ে তার গলা বেঁধে একাই টেনে সুপারি গাছের সাথে বাধা বাঁশের সাথে লাশটি ঝুলিয়ে রাখে। এরপর গত ১০ মে সকালে স্থানীয় লোকজন ইবাদকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কালিয়া থানা পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। গ্রেফতারকৃত আমেনার স্বীকারোক্তি এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তির পর কালিয়া থানায় গতকাল হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ