Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে চীনা সেনা অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করল ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২০, ২:১০ পিএম

অবশেষে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং স্বীকার করেছেন, পূর্ব লাদাখে চীনের বিপুল সেনার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ ১৮ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন স্বীকারোক্তি দেন তিনি। লাদাখে চীনা বাহিনীর অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ লুকোচুরির পর এ স্বীকারোক্তি দিলেন তিনি।

মঙ্গলবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় মন্ত্রী বলেন, ‘এটা সত্য যে এলএসিতে চীনা সেনা আছে। সীমান্ত কোথায় তা নিয়ে দুই পক্ষেরই মতপার্থক্য রয়েছে। আর সেখানে বিপুল সংখ্যক চীনা সৈন্য পৌঁছে গেছে।’ ‘এমন পরিস্থিতিতে যা করা দরকার ভারত তা করছে’ বললেও ঠিক কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তা জানাননি রাজনাথ সিং।

তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লি যাবতীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন রাজনাথ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন।

রাজনাথ সিংয়ের দাবি, চীন ওই এলাকাকে নিজেদের দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ভারতীয় ভূখন্ড। তিনি আরো জানান, আগামী ৬ জুন চীন ও ভারতীয় বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে মিলিত হবেন। তবে নিজের অবস্থান থেকে কোনোভাবেই পিছু হটবে না দিল্লি। তিনি আরো বলেন, ভারতের যা করা উচিত ছিল, তা-ই করেছে। সমস্যা সমাধানের জন্য চীনকে পরিস্থিতি গভীরভাবে বিবেচনার পরামর্শ দেন ভারতীয় মন্ত্রী।
মাসখানেক ধরে পূর্ব লাদাখের পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে চীনা ও ভারতীয় বাহিনী। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা হলেও সমাধান মেলেনি।

সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, সীমান্তে চীনের সেনা সমাবেশের জবাবে উত্তরাঞ্চলীয় লাদাখের গালোয়ান উপত্যকা ও মধ্যাঞ্চলীয় লাদাখের প্যানগং লেকের কাছে বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। ওই অঞ্চলে অন্তত পাঁচ হাজার পিএলএ সেনা জড়ো করা হয়েছে এবং নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে তারা রাস্তা ও কংক্রিটের বাঙ্কার তৈরি করছে। তবে চীনা বাহিনীর ওপর কোনও ধরনের আক্রমণ বা উস্কানি দিয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করতে নিষেধ করা হয়েছে ভারতীয় সেনাদের।

ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিশ্বাস, ২০১৭ সালে ডোকলাম সীমান্তে সৃষ্ট উত্তেজনার মতো এবারও দুই দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা এবং নয়া দিল্লি-বেইজিংয়ের মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই সংকটের সমাধান সম্ভব।
রাজনাথ সিং বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর মধ্যে আলোচনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী ৬ জুন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে (ভারতীয়) সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে।’

দুই দেশই পূর্ব লাদাখে অতিরিক্ত বাহিনী, সামরিক যান ও প্রচুর অস্ত্রসম্ভার পাঠিয়েছে। এর মধ্যেই গত ৫ মে সন্ধ্যায় প্রায় ২৫০ ভারতীয় ও চীনা সেনা সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়ে। পরে গত ৯ মে উত্তর সিকিমেও একই রকম ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার জেরে ভারতে শুরু হয়েছে ‘বয়কট চায়না’ ক্যাম্পেইন। এর আওতায় নিজেদের মোবাইল থেকে বিভিন্ন চীনা অ্যাপ আনইনস্টল করছে ভারতীয়রা। সূত্র: এনডিটিভি, নিউজ ১৮, দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমস



 

Show all comments
  • Rasel Ahammed ৩ জুন, ২০২০, ৮:০০ পিএম says : 0
    এত মহাশক্তিধর গরুর ... খাওয়া ভারতীয় সৈনিকদের মেরে চীন কিভাবে ভিতরে ঢুকলো, ...প্রতিহত করতে পারলো না,
    Total Reply(0) Reply
  • Ah Shipon ৩ জুন, ২০২০, ৮:০১ পিএম says : 0
    এখন গুলি কর তোমাদের গুলি কি শুধু বাংলাদেশ বর্ডারে চলে,,চিন সিমান্তে চলে না
    Total Reply(0) Reply
  • আমি প্রবাস থেকে বলছি ৩ জুন, ২০২০, ৮:০১ পিএম says : 0
    ভারতের কোন দোষ নেই তারা সব সময় ব্যস্ত আছে তার দেশের মুসলমানদেরকে নির্যাতন করার জন্য বাংলাদেশ পুতুলসরকার বসিয়ে রেখে তাদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য পাকিস্তানের সাথে কাতুকুতু খেলা খেলে সস্তা জনপ্রিয়তা কামাই নিয়ে এর মধ্যে যে চিন এরকম কান্ড ঘটিয়ে বসবে সেটা তাদের জন্য ছিল না তাদের প্রস্তুতি ছিল না যেহেতু তাদের কোনো প্রস্তুতি নেই সেহেতু এই মুহূর্তে চীনের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া ভারতের বিকল্প কিছু নেই?
    Total Reply(0) Reply
  • Rajib Khan ৩ জুন, ২০২০, ৮:০২ পিএম says : 0
    ভারত কেন এখানেও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করছে না?
    Total Reply(0) Reply
  • Raqeeb Chowdhury ৪ জুন, ২০২০, ৬:৪৪ পিএম says : 0
    ইন্ডিয়া এখন চিন কে মানবতা দেখাচ্ছে। এর কারণ একটাই সেটা হল বহির্বিশ্বের সাপোর্ট অর্জন করা কেননা চীন যে কাজটি করছে তা পেশী শক্তির বলে করছে। ভারত সেই ভুল করবেনা এজন্য যে সারা বিশ্বে এখন চীনের সাপোর্টিং রাস্ট্র খুবই নগণ্য যেটা চীনের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে আর করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী যেভাবে বিস্তার লাভ করছে এমতাবস্থায় প্রত্যেক দেশের ই অর্থনৈতিক সংকট প্রবল আকার ধারণ করেছে যা যেকোনো দেশের জন্যই শুভ নয় এজন্য ভারত মাথা গরম করছে না তাই নিন্দুকদের বলতে চাই ইন্ডিয়া বর্তমানে বহির্বিশ্বে সাপোটিং এর ক্ষেত্রে প্রবল শক্তিধর দেশ যা কূটনৈতিকভাবে প্রমাণিত যারা কূটনীতি বোঝে তারা আমার কথাগুলো অনুধাবন করবে মাথা গরম করে কখনো ভালো ফল লাভ করা যায় না আর ইন্ডিয়া হল বিশ্বের সবচেয়ে বেস্ট গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এখানে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে অনেক বুঝে শুনে কাজ করে সরকার। ভাই যে যায় মন্তব্য করুন ডিপ্লোম্যাটিক সিস্টেম বুঝতে হবে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন ভারত কেন মাথা গরম করছে না? ভারতের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় শক্তিধর দেশ মিলিত হয়ে চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তা আপনারা বুঝতে পারবেন পত্রপত্রিকা পড়লে। মনে রাখবেন চীনের মতো মাথামোটা বুদ্ধি নিয়ে ভারত চলে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ