Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

ভারতের দাদাগিরি মানছে না নেপাল, সংসদে নতুন মানচিত্র পেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২০, ৩:৪৫ পিএম

কিছুদিন আগেই ভারতের সাথে বিতর্কিত এলাকা নিয়ে মানচিত্র প্রকাশ করেছিল নেপাল। এ বিষয়ে নিয়ে ভারতের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও এ বার সেই মানচিত্রে সরকারি সিলমোহর দেয়ার পথে আরও এক ধাপ এগলো নেপাল। ভারতের সাথে সংঘাতের আশঙ্কা থাকলেও রোববার নেপালের সংসদে পেশ হল ‘ম্যাপ আপডেট বিল’।

নতুন মানচিত্রে ভারত-নেপাল সীমান্তের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ-কে নেপালের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে বিরোধীরাও এই বিলে সমর্থনের বার্তা দিয়েছে। ফলে বিল পাশ হয়ে যাওয়া এখন কার্যত সময়ের অপেক্ষা। আর সেটা হলে অবধারিত ভাবেই নয়াদিল্লি-কাঠামান্ডু সংঘাত আরও তীব্র হবে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিকদের একাংশ।

বিল পেশ হওয়ার কথা ছিল বুধবার। কিন্তু সংবিধান সংশোধনী বিলে দুই তৃতীয়াংশ সাংসদের সমর্থন দরকার হয়। তাই সব দিক মেপে এগোতে চাইছিল কেপি শর্মা ওলি সরকার। সেই কারণেই বিল পেশের সময় পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু শনিবার নেপালের প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর ম্যাপ আপডেট বিলকে সমর্থনের বার্তা দেয়। তার পরেই রোববার সংসদের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ এই বিল পেশ করেছেন নেপালের আইনমন্ত্রী শিব মায়া তুম্বাহাম্ফি। নেপালি কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়ায় ‘সমাজবাদী জনতা পার্টি নেপাল’ এবং ‘রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টি নেপাল’-এর বিরোধিতা সত্ত্বেও বিল পাশ করাতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মত কূটনৈতিক শিবিরের। একই ভাবে নেপালের সংসদের উচ্চকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতেও পাশ হয়ে যাবে এই ম্যাপ আপডেট বিল।

লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ নিয়ে ভারত-নেপাল বিবাদ দীর্ঘদিনের। ভারতের দাবি, এই তিনটিই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পিথোরাগড় জেলার অন্তর্ভূক্ত। উল্টোদিকে নেপালও তাদের অংশ বলে দাবি করে আসছে। কিন্তু সেই বিবাদ চরমে ওঠে সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের গাটিয়াবর্গ থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তার আনুষ্ঠানিক সূচনা করার পর। নেপাল দাবি করে, এই রাস্তার অংশ নেপালের ভূখণ্ডের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। ভারত অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দেয়।

ওই রাস্তা খুলে যাওয়ার কয়েক দিন পরেই নেপালের ভূমি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় দেশের সংশোধিত নতুন ম্যাপ প্রকাশ করে। ম্যাপ প্রকাশের পরেই তীব্র বিরোধিতা করে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দেয়, ‘এই একপাক্ষিক কার্যক্রম ঐতিহাসিক ঘটনা ও প্রমাণসাপেক্ষ নয়। কৃত্রিম ভাবে দেশের সীমান্ত এ ভাবে বাড়িয়ে দেয়াকে ভারত কোনও ভাবেই মেনে নেবে না। ম্যাপ আপডেট বিল নেপালের সংসদে পেশের জল্পনার মধ্যেও বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’

কিন্তু শক্তিশালী প্রতিবেশী ভারতের দাদাগিরি এখন আর কেন মানছে না ক্ষুদ্র নেপাল? কেন বিতর্কিত এলাকাগুলো ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করতে মরিয়া নেপালের ওলি সরকার? কূটনৈতিকদের ব্যাখ্যা, এর পিছনে রয়েছে চীনের সমর্থন। ভারতও তাই মনে করছে। আবার ভারত-নেপাল পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে তা স্থগিত রয়েছে। করোনার প্রকোপ কমলে সেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক যখন হবে, তখন এ নিয়ে দু’দেশের সংঘাত চরমে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সূত্র: টিওআই।



 

Show all comments
  • Engr Amirul Islam ৩১ মে, ২০২০, ৪:৫৭ পিএম says : 0
    Bravo Nepal ..............
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নেপাল

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ