মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দুই বছর আগে রাশিয়ার সাথে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ত্যাগ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার তিনি ‘ওপেন স্কাইস ট্রিটি’ নামের আরেকটি আন্তর্জাতিক সামরিক চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে রাশিয়া। জার্মানিও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে।
‘ওপেন স্কাইস ট্রিটি’ চুক্তির আওতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলি একে অপরের আকাশসীমার মধ্যে নিরস্ত্র বিমান পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণ চালাতে পারে। স্বচ্ছতা ও পারস্পরিক আস্থা মজবুত করাই প্রায় তিন দশক আগে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির লক্ষ্য। আমেরিকা ও রাশিয়াসহ মোট ৩৪টি দেশ এই কাঠামোর অংশ।
কিন্তু ট্রাম্পের যুক্তি, রাশিয়া এই চুক্তি লঙ্ঘন করায় আমেরিকাও আর এই কাঠামোর অংশ থাকতে চায় না।
উল্লেখ্য, মার্কিন কর্মকর্তাদের অভিযোগ অনুযায়ী রাশিয়া কালিনিনগ্রাড এলাকা, জর্জিয়া সীমান্তসহ কিছু এলাকা এবং রুশ সামরিক মহড়ার সময় আকাশসীমা বন্ধ রেখে ‘ওপেন স্কাইস ট্রিটি’ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ট্রাম্প বলেন, সে দেশ এই চুক্তি না মানলে তিনিও সেটি বর্জন করবেন। তবে রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে ভবিষ্যতে বোঝাপড়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না ট্রাম্প। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ওয়াশিংটন শুক্রবারই চুক্তি ত্যাগের নোটিশ পেশ করতে চলেছে। ছয় মাস পর আমেরিকার সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
গোটা বিশ্বে করোনা সংকটের মাঝে যুদ্ধ নিয়ে ভাবার সময় থাকার কথা নয়। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে এমন এক আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে চলেছেন, যার ফলে এখনই কোনো যুদ্ধ শুরু না হলেও এই সিদ্ধান্তের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচলিত আন্তর্জাতিক সামরিক চুক্তি উপেক্ষা করে রাশিয়া ও চীনের মতো দেশের সঙ্গে সরাসরি বোঝাপড়ার ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প বিপজ্জনক পথে অগ্রসর হচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এই প্রসঙ্গে শীতল যুদ্ধের সময়কার ‘সেকেলে’ বোঝাপড়া সম্পর্কে অবজ্ঞা দেখিয়েছেন। তাদের মতে, অন্যরা এমন সব চুক্তি না মানায় আমেরিকার জাতীয় স্বার্থ আর রক্ষা করা যাচ্ছে না। তাই চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের নতুন কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। একমাত্র এভাবেই গোটা বিশ্বকে নিরাপদ রাখা সম্ভব।
রাশিয়া অ্যামেরিকার এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে। মস্কোর মতে, ‘ভিত্তিহীন’ কারণ দেখিয়ে ওয়াশিংটন এমন বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান ভ্লাদিমির ইয়েরমাকাভ বলেন, তাঁর দেশ মোটেই এই চুক্তি লঙ্ঘন করেনি। তার মতে, অ্যামেরিকা এর আগেও রাশিয়া সম্পর্কে মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ত্যাগ করেছে।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস-ও ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এই চুক্তি ইউরোপের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি গোটা উত্তর গোলার্ধে নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করতে অবদান রেখে চলেছে। মাস বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে রাশিয়ায় এই চুক্তির বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে বটে, কিন্তু সেই কারণ চুক্তি ত্যাগ করার জন্য যথেষ্ট নয়। তিনি রাশিয়ার উদ্দেশ্যে এই চুক্তি পুরোপুরি কার্যকর করার আহ্বান জানান। সূত্র: ডিপিএ, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।