Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শরণখোলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তিন গ্রাম প্লাবিত, কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত

শরণখোলা (বাগেরহাট) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০২০, ৯:৪৯ পিএম

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালীতে দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ উপজেলার চারটি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত এবং অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে। তিনশত একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত ও চারশত ৫০ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। সাউথখালী, রায়েন্দা ও রাজৈর এলাকায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় এক হাজার পরিবার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শ করে দুর্গত মানুষের মাঝে প্রাথমিকভাবে ত্রাণ ও ঢেউটিন বিতরণ করেছেন।
এদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডঃ আমিরুল আলম মিলন সাউথখালীর বাঁধভাঙ্গা এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি দ্রুত নতুন বাঁধ নির্মানে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।
সরেজমিন সাউথখালীর বগী ও গাবতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধের প্রায় ৯০ভাগ ভেঙে নদীর সঙ্গে মিশে গেছে। তখনও ভাঙা বাঁধদিয়ে বলেশ্বরের পানি ঢুকছে। চরম দুর্ভোগে রয়েছে পানিবন্দী মানুষ। তাদের বসতঘরের মধ্যে হাঁটু পানি। আশপাশ এলাকায় পানি থৈ থৈ করছে। অনেকের ঘরের টিন উড়ে গেছে। গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে বহু ঘর।
এসময় বগী গ্রামের মজিদ তালুকদারের স্ত্রী আকলিমা বেগম (৪৫) জানান, ঝড়ের দুই দিন আগে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ায় তারা বেঁচে গেছেন। ঘরের যা অবস্থা তাতে বসবাস করার কোনো উপায় নেই। আরো একসপ্তাহ তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে হবে।
গাবতলা গ্রামের মো. সোবাহান হাওলাদার, ফুলমিয়া হাওলাদার, কালাম হাওলাদার, বগী গ্রামের আ. সোবাহন জানান, বলেশ্বরের নোনা পানি ঢুকে তাদের তাদের পুকুর, ঘের ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তাদের একেক জনের ৫০-৬০ হাজার টাকার মাছ ভেসে গেছে। তাদের তিন গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। চার-পাঁচ দিনের আগে কেউ ঘরে ফিরতে পারবে না বলে তারা জানান।
খুঁড়িয়াখালী গ্রামের জালাল মোল্লা জানান, তার ঘেরের প্রায় তিন লাখ টাকা মাছ ভেসে গেছে। এভাবে তাদের এলাকার কমপক্ষে ১০-১২টি ঘেরে জোয়ারের নোনা পানি ঢুকে মৎস্য চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধসহ চার ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার কাঁচা ঘর, ৪৫০টি মাছের ঘের, তিনশত একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রাথমিক হিসাব পাওয়া গেছে। অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের জরিপ চলছে।
ইউএনও জানান, জেলা প্রশাসন থেকে সাউথখালীর বগী, গাবতলা, চালিতাবুনিয় ও দক্ষিণ খুড়িয়াখালী গ্রামের বাঁধভাঙা দুর্গত মানুষের জন্য আলাদাভাবে ২০মেট্রিকটনসহ উপজেলায় মোট ৩ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষয়ক্ষতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ