Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গ্রামমুখী মানুষের ঢল ঠেকানো যাচ্ছে না

পথে পথে চেকপোস্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০২০, ১২:০৫ এএম

ঈদ উপলক্ষে মানুষ যাতে কর্মস্থলে থাকেন সে লক্ষ্যে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে এই পদক্ষেপ। রাজধানী ঢাকা থেকে বের হওয়ার মোড় এবং সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পাশাপাশি নানাভাবে প্রচারণায় মানুষকে বোঝানোর চেষ্টাও চলছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ঘূর্ণিঝড় আমফানে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই গণপরিবহন বন্ধের পরও ছুটছে মানুষ গ্রামের পানে। ঈদ করতে মানুষের এই ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ফেরার দৃশ্য নিয়ে ফেসবুকে আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড় উঠেছে।

রাজধানী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকা থেকে সিলেট, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ এবং ঢাকা টু মাওয়া সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে। মাইকিং করে মানুষকে এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায় না যাওয়ার অনুরোধ করছে। কোথাও কোথাও মানুষকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরও মানুষের ঘরে ফেরার স্রোত যেন থামছে না। পায়ে হেঁটে, রিক্সা, ভ্যান, ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বিকল্প নানা যানবাহনে মানুষ গ্রামে যাচ্ছে। কেউ কেউ পায়ে হেটেই গ্রামের পথ ধরেছেন।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দীর্ঘদিন থেকে গণপরিবহন বন্ধ। খুচরা যানবাহন চলছে। সে সব যানবাহনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠছে মানুষ। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে রডবোঝাই ট্রাকে করে ঢাকা থেকে রংপুর যাওয়ার পথে মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার জুনদহ এলাকায় ট্রাক উল্টে ১৩ জনের নিহত হয়েছেন। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে দূরদূরান্তের গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন মানুষ। যারা সব বাঁধা উপেক্ষা করে নানাপন্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামে যাচ্ছেন ঈদ করতে; তাদের সম্পর্কে ফেসবুকে একজন লিখেছেন, ‘লাল কাপড় পড়ে ঈদ করতে গ্রামে যাওয়ার পথে সাদা কাপড়ে মোড়ানো লাশ হওয়ার খায়েশ’ বন্ধ হওয়া উচিত।’

ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে পাটুরিয়া টু দৌলতদিয়া নৌরুটে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। তারপরও পদ্মা পাড়ি দেয়ার জন্য ঈদে ঘরমুখো মানুষ বিভিন্ন যানবাহনে করে ঘাটে ভিড় করেন ফেরি দিয়ে পদ্মা পাড়ি দেয়ার জন্য। একদিকে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা অন্যদিকে পাটুরিয়া ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাটে যাওয়ার ৩৩ কিলোমিটার আগে মানিকগঞ্জ জেলার প্রবেশ মুখে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে আটকে দিচ্ছে যাত্রীসহ বিভিন্ন যানবাহন। তারপরও মানুষ কৌশল করে পায়ে হেটে ঘাটে যাচ্ছেন। গতকাল গালড়া চেকপোস্টে জেলা পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, করোনা সংক্রামণের ঝুঁকি এড়াতে জেলার প্রবেশ মুখ গোলড়াতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে যাতে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে। মোটরসাইকেল আটকিয়ে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আবার অনেকে আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করে পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়ার সময় তাদের আটকানো হয়। এ রকম পাটুরিয়া, আরিচা, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে থাকা যাত্রীদের ১০টি গাড়িতে করে জেলা পুলিশের অর্থায়নে তাদের পুনরায় ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়। তারপরও মানুষ ছুটছেন। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটেও অভিন্ন দৃশ্য মানুষ নানা পন্থায় পদ্মা পাড়ি দিতে ঘাটে জড়ো হন। স্পিড বোর্ডসহ নানাভাবে নদী পাড়ি দিচ্ছেন।

ঢাকা থেকে বের হওয়ার মহাসড়কগুলোর প্রতিটিতে কয়েক কিলোমিটার পর পর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে চেকপোস্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর। এতো কঠোরতার মধ্যেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামে যাচ্ছে মানুষ ঈদ করতে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডবিøউটিসি) আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, আমফানের কারণে নদীতে বাতাস ও ঢেউ থাকার কারণে জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়ি পারাপার বন্ধ রয়েছে। পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পণ্যবোঝাই কয়েক শতাধিক ট্রাক পারের অপেক্ষায় আছে। তারপরও মানুষ নদী পাড়ি দিতে ঘাটে ভিড় করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ