Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পটুয়াখালীতে ৪৫৫৩ হেক্টর ফসলী জমি, ৯ কোটি টাকার মৎস সম্পদসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

পটুয়াখালীতে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২২ কিলোমিটার

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০২০, ৬:১০ পিএম

ঘূর্ণিঝড় ‘আমফানের’ প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে পটুয়াখালীর জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪৫৫৩ হেক্টর জমির ফসল, ভেসে গেছে প্রায় ৯ কোটি টাকার মৎস সম্পদ,ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১০ ,৪৭৬ টি বাড়ি-ঘর ।
বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা ঘরবাড়ি সহ গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙ্গে পড়েছে। বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পানির চাপে রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া লঞ্চঘাটের পল্টুন ডুবে গেছে।ভেসে গেছে ৩০ ফুট নতুন সিসি রাস্তা ।রাঙ্গাবালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাশফাকুর রহমান জানান, গতকালের ঝড় শুরুর আগ থেকেই প্লাবিত হতে থাকে রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের চরকাশেম, মাঝের চর, চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের বিবির হাওলা, গরুভাঙ্গা, মধ্য চালিতাবুনিয়া, উত্তর চালিতাবুনিয়া ও লতার চর। এর মধ্যে চরআন্ডা গ্রামের ২ কিলোমিটার ভেড়ীবাধ পুরো ভেংগে প্লাবিত হয়ে যায় । পানিবন্দী ঐ এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষকে সাইক্লোন সেল্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।এ ছাড়াও কলাপাড়ার পায়রা বন্দর সংলগ্ন লালুয়া ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া থেকে পশুরবাড়ীয়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার বেড়ীবাধহীন এলাকায় কমপক্ষে ৫ শতাধিক প্লাবিত হয়। প্রায় ৭-৮ হাজার লোককে ৫ টি সাইক্লোন সেল্টারে নিয়ে আসা হয় ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে এ পর্যন্ত জেলায় ৪ লক্ষ ৮১ হাজার ৯৭০ জন দূর্যোগ কবলিত হয়েছেন। ৮১২১ টি ঘড়-বাড়ি আংশিক এবং ২৩৫৫ টি ঘর-বাড়ি সম্পুর্ণ বিদ্ধস্ত হয়েছে।
পানিতে তলিয়ে জেলায় ৪৫৫৩ হেক্টর জমির বাদাম, ফেলন, বিভিন্ন শাক-সব্জী, মরিচের ক্ষেত ও আউশের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড়টি উপকুল অতিক্রম করার সময় নদীতে পানির উচ্চতা ছিল বিপদ সীমার পৌনে ছয় ফুট উপরে। এর ফলে জেলায় প্রায় ১৭০ মিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ন বিদ্ধস্ত হয়েছে এবং প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। জেলায় মোট ৫৭৫৪ টি পুকুর এবং ৬২৩টি ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৮ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। জেলার ৪০ ভাগ ম্যানগ্রেভ বাগান এবং অন্যান্য ১০ ভাগ গাছপালার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বিভগীয় বন কর্মকর্তা।
এ দিকে পটুয়াখালী অবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক কাজী কেরামত হোসেন জানান,পটুয়াখালীতে গতকাল বিকেল সাড়ে পৌনে ছয়টা থেকে আজ সকাল পৌনে পাচটা পর্যন্ত ১১ ঘন্টা ঝড়ো হাওয়া বিরাজ করে,এর মধ্যে সন্ধ্যা ৭ টা ৫০ মিনিট থেকে ৭-৫১ মিনিট পর্যন্ত বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রেকর্ড করা হয় ১২২ কিলোমিটার পার-আওয়ার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষয়ক্ষতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ