Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাত

মুহাম্মদ আবদুল হামিদ | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

যাকাত আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত জীবন বিধানের অন্যতম বুনিয়াদ। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন কুরআনে কারীমের অনেক জায়গায় ঐাকাত আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। এক আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত দাও।’ সূরা নূর: ৫৬। অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে নবী! আমার যেসব বান্দা ঈমান এনেছে, আপনি তাদের বলে দিন, তারা যেন নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমার দেওয়া রিজিক থেকে আমারই পথে ব্যয় করে, গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে- সে দিনটি আসার আগে, যেদিন কোনো রকম বেচা-কেনা চলবে না, কোনো রকম বন্ধুত্ব কাজে আসবে না।’ সূরা ইবরাহীম: ৩১।
সম্পদ আল্লাহর দান। আল্লাহর দেওয়া সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে হবে। এজন্যই আল্লাহতায়ালা সম্পদের মালিকের উপর অন্যান্য অভাবী মানুষের প্রয়োজন ও সামাজিক প্রয়োজন পূরণার্থে যাকাতের বিধান আরোপ করেছেন। দান-সাদাকাহ’র প্রতি অণুপ্রাণিত করেছেন।
দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কতিপয় মানুষের হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়ে গেলে সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দেয়। জনসাধারণ দরিদ্রতায় নিমজ্জত হয়। অভাবের কারণে মানুষের নৈতিক চরিত্রের বিপর্যয় ঘটে। এর ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি বেড়ে যায়। পদে পদে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার প্রভাবে এক শ্রেণির মানুষ রাতারাতি সম্পদের পাহাড়ের মালিক হয়। আরেক শ্রেণির মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়। ধনীরা অতি ধনী আর গরীবরা অতি গরীব হয়। যদি আমাদের সমাজ ইসলামী অর্থব্যবস্থার আলোকে পরিচালিত হতো তাহলে কেউ রাতারাতি অতি ধনী আর কেউ দৈন্য ও নিগ্রহের শিকার হয়ে অতি গরীব হতো না, অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দিতো না, প্রত্যেকের মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য বিরাজ করতো।
ইসলামী অর্থব্যবস্থায় কেউ রাতারাতি অতি ধনী হওয়ার সুযোগ নেই। এ অর্থব্যবস্থায় উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল-হারামের সীমা চিহ্নিত করে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। লুটপাট, ধোঁকা, প্রতারণা ও জলুমের মাধ্যমে সম্পদ উপার্জনের সকল পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী অর্থব্যবস্থায় সম্পদ উপার্জিত হয় হালাল উপায়ে। অর্জিত সম্পদ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে যাকাত, সদকাতুল ফিত্র ইত্যাদি আদায় করতে হয়। বিত্তবানদের মনে রাখতে হবে, সম্পদ এমনি এমেিতই অর্জিত হয়নি। শ্রমিকের শ্রম, মেধা, ও মহান আল্লাহতায়ালার কৃপায় অর্জিত হয়েছে। অর্জিত সম্পদের মধ্যে সমাজের অন্যান্য অভাবী মানুষের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার সঠিকভাবে গ্রহীতার হাতে পৌঁছে দেওয়া ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম।
ধনীদের সম্পদ থেকে একটি নির্ধারিত অংশ আদায় করাকে ইসলামের পরিভাষায় যাকাত বলা হয়। যাকাত আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে পবিত্রতা, ক্রমবৃদ্ধি, আধিক্য ইত্যাদি। যাকাত কেবল অর্থ-সম্পদের দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলমানদের উপর ফরজ করা হয়েছে। ইসলামের বিধান অনুযায়ী নিত্যদিনের প্রয়োজন পূরণ করার পর যদি করো নিকট সাড়ে ৫২ ভরি রূপা অথবা সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ বা এর সমমূল্যের সম্পদ এক বছরকাল পর্যন্ত জমা থাকে তাহলে সে ব্যক্তি সম্পদশালী। এ ধরনের সম্পদশালী ব্যক্তিদের ঐ সঞ্চিত সম্পদের ৪০ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ শতকরা ২.৫০ টাকা করে যাকাত আদায় করতে হয়। সোনার ক্ষেত্রে সোনার নেসাব এবং রূপার ক্ষেত্রে রূপার নেসাব অনুযায়ী যাকাত আদায় করতে হয়।
নগদ টাকা, ব্যবসার পণ্য, বিচরণশীল গরু, মহিষ ও উৎপন্ন ফসলের হিসাব করে যাকাত আদায় করা জরুরি। নগদ টাকা এবং ব্যবসার পণ্যের যাকাত রূপার নেসাবের হিসাবে আদায় করতে হয়। বিচরণশীল ৩০টি গরু বা মহিষের জন্য কমপক্ষে ১ বছর বয়সের ১টি গরু অথবা মহিষের বাচ্চা যাকাত দিতে হয়। অনুরূপভাবে ৪০ থেকে ১২০টি ছাগলের যাকাত হবে কমপক্ষে ১টি ছাগল। আর যদি গৃহপালিত পশু ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করে রাখা হয় তাহলে ব্যবসায় পণ্য হিসেবে এগুলোর মূল্যের উপর ভিত্তি করে যাকাত আদায় করতে হয়।
জমি থেকে উৎপন্ন ফসলের ‘উশর’ বা ‘নিসফে উশর’ আদায় করা প্রয়োজন। উশর এর অর্থ হলো, দশ ভাগের এক ভাগ। আর নিসফে উশর হলো, বিশ ভাগের এক ভাগ। সেচের প্রয়োজন হয় না; বরং প্রাকৃতিকভাবে নদী বা বৃষ্টির পানি দ্বারা ফসল ফলানো হয়, এরকম জমি থেকে উৎপন্ন ফসলের ‘উশর’ অর্থাৎ- দশ ভাগের একভাগ যাকাত আদায় করতে হবে। আর সেচের প্রয়োজন হয় এরমক জমির ফসলের ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বাদে আহরিত ফসলের ‘নিসফে উশর’ অর্থাৎ- বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হবে।
আল-কুরআনে আল্লাহর তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যাকাত হচ্ছে মিসকীনদের জন্যে, এর (ব্যবস্থাপনার) ওপর নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্যে, যাদের অন্তকরণ (দ্বীনের প্রতি) অনুরাগী (করা প্রয়োজন) তাদের জন্যে, গোলামী থেকে আযাদ করার মধ্যে, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিদের (ঋণমুক্তির) মধ্যে, আল্লাহতায়ালার পথে ও মুসাফিরদের জন্যে (এ সাদাকার অর্থ ব্যয় করা হবে); এটা আল্লাহতায়ালার নির্ধারিত ফরয; আল্লাহতায়ালা বিজ্ঞ ও কুশলী।’ সূরায়ে তাওবা: ৬০। এই আয়াতের আলোকে-ফকীর (গরীব), মিসকীন, যাকাত সংগ্রহকারী কর্মী, অনুরক্ত ব্যক্তি, কৃতদাস, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদরত মুজাহিদ, বিপদগ্রস্ত মুসাফির ও নওমুসলিমকে যাকাত প্রদান করা যাবে।
যাকাত বন্টনের ক্ষেত্রে নিকটাত্মীয় ও প্রতিবেশীর মাঝে যারা গরীব তাদের প্রতি বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে। এছাড়া গরীব ভদ্রলোককে অগ্রধিকার ভিত্তিতে যাকাত প্রদান করা উচিৎ। কেননা, তারা লোক লজ্জার কারণে মানুষের কাছে হাত পাতবে না। গ্রহীতার কাছে যাকাত বা সাদাকাহ’র কথা উল্লেখ না করে মনে মনে আদায়ের নিয়ত করলেই চলবে। কেননা, অনেকে যাকাত বা ফিতরার কথা শুনে বিব্রতবোধ করতে পারেন। যাকাত দিয়ে কোন গরীব রোগীর সম্পূর্ণ ঔষধ খরিদ করে দেওয়া, কোন গরীব ছাত্রের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে। কোন মাদরাসার গরীব, এতীম ফান্ডেও যাকাত, সাদকাহ দিতে পারেন।
কেউ কেউ যাকাত আদায়ের জন্য বিশেষ আয়োজন করে লোকজনকে একত্রিত করেন। একটা বিব্রতকর পরিবেশের মধ্যে অল্প অল্প টাকা বা নিম্নমানের কাপড় বিতরণ করেন, যা মোটেই মানানসই নয়। কেননা, যাকাত, ফিতরা, সাদকাহ ইত্যাদি গোপনে উপযুক্ত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়াই উত্তম। তাছাড়া ভিক্ষার মতো অল্প অল্প করে যাকাত আদায় করলে ফরজ আদায় হবে কিন্তু যাকাতের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। যাকাতের প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো, সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করা। অল্প টাকা বা নিম্নমানের কাপড় দিয়ে সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিমোচন করা সম্ভব নয়। যাকাত যাকে দেবেন, তাকে এমনভাবে দেওয়া ভালো- যাতে এই অর্থ দিয়ে সে ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি করতে পারে এবং পরবর্তী বছর সে নিজেও যাকাত দেওয়ার উপযুক্ত বনে যায়।
যাকাত না দিয়ে সম্পদ পুঞ্জীভূত করে রাখলে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা সোনা-রূপা (ধন-সম্পদ) জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে না, তাদেরকে আপনি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন। কিয়ামতের দিন সেগুলো জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং সে গুলো দ্বারা তাদের মুখমন্ডল, পার্শদেশ এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে। এবং বলা হবে এগুলোই সেই সম্পদ যা তোমরা (যাকাত না দিয়ে) পুঞ্জীভূত করে রেখেছিলে।’ (সুরা তাওবা: ৩৪, ৩৫। অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা সম্পদ পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং বার বার গণনা করে, আর মনে করে যে, তার মাল তাকে চিরঞ্জীব করে রাখবে। কক্ষণই নয়, অবশ্যই তাকে হুতামায় (জাহান্নামে) নিক্ষেপ করা হবে।’ সুরা হুমাজা: ২-৪।
সুরায়ে বাকারার ১৯৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর এবং (সম্পদ জমা করে রেখে) নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ কর না এবং তোমরা মানুষের সাথে অনুগ্রহ করো, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহকারীকে ভালোবাসেন।’ হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, ‘সম্পদের যাকাত আদায় না করলে ঐ সম্পদ বিষধর সাপ হয়ে দংশন করতে থাকে।’ সুতরাং সম্পদ জমা করে রাখার কোন সুযোগ নেই। প্রত্যেকের অর্জিত সম্পদের পরিপূর্ণ যাকাত আদায় করলে আশা করা যায়, সমাজের দরিদ্র শ্রেণির অগণিত মানুষকে দৈন্য ও নিগ্রহের শিকার হতে হবে না। অন্তত নিজের ন্যূনতম প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে পারবে। সম্পদের সুষম বণ্টনের দ্বারা সব মানুষই তার অত্যাবশ্যকীয় চাহিদাগুলো পূরণ করে নিতে পারবে। সমাজে দরিদ্রতার হার ও ধনী-গরীবের তারতম্য কমে আসবে।
বছরের যেকোন সময় যাকাত আদায় করা যায়। যেহেতু রমজান মাসে দান-খয়রাত করলে অন্য সময়ের চেয়ে অধিক সোওয়াব পাওয়া যায়, তাই রমজান মাসে যাকাত আদায় করে অধিক পূন্য লাভের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। এবার ‘করোনাভাইরাস’ মাহামরীর কারণে বিশে্বর বেশির ভাগ এলাকা লকডাউন। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ গৃহবন্দি অবস্থায় সময় কাটাচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষগুলো অর্থের অভাবে আহাজারি করছে। সেহরি বা ইফতারের সময়ও অনেকের ভাগ্যে খাবার জুটছে না। চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছে গরীব লোকেরা। যাদের অল্প রোজগার দিয়ে কোন রকম চলতো- তাদের এই অল্প রোজগার লকডাউনের করণে বন্ধ হয়ে গেছে। দিনমজুর মানুষগুলো বিভিন্নভাবে ত্রাণ সংগ্রহ করলেও গরীব ভদ্রলোকেরা লোক-লজ্জার কারণে কারো কাছে হাত পাততে পারে না। এসব অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর এখনই সময়।
যাকাত তো দিতে হবেই; এমনকি নিজের সাধ্যমত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। টাকা-পয়সা, সম্পদ জমিয়ে কী হবে? কবরে এগুলো নিয়ে যাওয়া যাবে না। সবকিছু রেখে পকেটহীন, সেলাইহীন সাদাকাপড় পরে মাটির নিচে চলে যেতে হবে। টাকা-পয়সা দিয়ে যদি ‘করোনাভাইরাস’ মহামারীকে বিদায় করা যেত তাহলে পৃথিবীর মানুষকে গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হতো না। টাকা দিয়ে ভাইরাস থেকে বাঁচা যাবে না- তাই মৃত্যুপূরী ইতালির ধনাঢ্য পরিবারের লোকেরা টাকা রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে। কয়েকদিন আগে এমন আনেক ফটো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখেছি। করোনার আপৎকালীন সময়ে বাস্তবিকই সন্তান-সন্ততি, সম্পদ কোনো কাজে আসছে না।
লেখক: প্রবন্ধকার ও শিক্ষক, জামেয়া আনওয়ারে মদিনা মাদরাসা, পশ্চিম ভাটপাড়া, ইসলামপুর, সিলেট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যাকাত


আরও
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->