পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
২০২১-২০২২ সালের বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৩ জুন বাজেটটি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছিল। গত ৯ জুন ২০২২ উত্থাপিত হলো ২০২২-২৩ সালের প্রস্তাবিত বাজেট। এবারের বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ৭ জুন ২০২১ সালে বাজেট বিষয়ে দৈনিক ইনকিলাব আমার লিখিত একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল। প্রবন্ধটির শিরোনাম ছিল ‘বাজেটে যাকাতকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে’। উক্ত প্রবন্ধে আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এ দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ মুসলিম। তাদের ধর্মবিশ্বাস হলো ইসলাম। আর যাকাত হলো ইসলামী অর্থব্যবস্থার অন্যতম প্রধান উৎস। সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দরিদ্র ও নিঃস্বদের মধ্যে বণ্টন করাকে যাকাত বলে। দরিদ্রের প্রতি দায়িত্বশীল হবার বড় ধরনের এক মাধ্যম এটি। এটি কালোটাকা গড়ে তোলার বিপক্ষে প্রাক্টিক্যাল প্রশিক্ষণ। লোভ নিয়ন্ত্রণের বড়ো এক হাতিয়ার এ যাকাত। এর মাধ্যমে একটি দেশের দারিদ্র্য ও কৃপণতা উচ্ছেদ হতে পারে। সঠিক তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে জাতিকে স্বনির্ভর ও উন্নত করা যেতে পারে। সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করবার বাস্তবধর্মী এক পদক্ষেপ হতে পারে যাকাত। আয়বৈষম্য দূর হবার বিশেষ মাধ্যম হিসেবেও কাজ করতে পারে এটি। বিত্তশালীদের প্রতি বঞ্চিতদের ক্ষোভ ও হিংসা দূর হওয়ার বাস্তব এক অনুশীলনের নাম হলো যাকাত। আর এর দর্শন হলো, অর্থ শুধুমাত্র ধনীদের মধ্যে আবর্তিত না হওয়া। (সূরা: আল হাশর ৭)। জানা যায়, বাংলাদেশে ১১ জন শীর্ষ ধনী আছেন, যাদের মোট টাকার পরিমাণ এক লাখ ১৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এ টাকা থেকে শতকরা ২.৫০% হারে যাকাত আদায় করলে যাকাত আদায় হবে দুই লাখ ৯২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। উন্নত ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এ টাকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের ইউনিয়ন সংখ্যা ৪৫৭১টি। উল্লেখিত দুই লাখ ৯২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ৪৫৭১টি ইউনিয়নে ভাগ করে দেয়া যেতে পারে। এতে প্রতিটি ইউনিয়ন ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার ১৭৭ টাকা করে পাবে। প্রাপ্ত এ টাকার মাধ্যমে একটি ইউনিয়নকে এক বছরের মধ্যেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা সম্ভব। অন্যদিকে খবরে প্রকাশ, দেশে সোয়া ২ কোটি টাকার মালিক আছেন এমন লোকের সংখ্যা ১৩ হাজার জন। এদের সকলের মোট টাকার যোগফল ২৯ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা থেকে শতকরা ২.৫০% হারে যাকাত আদায় করলে যাকাত আদায় হবে ৭৩ হাজার একশত ২৫ কোটি টাকা। বাজেট নির্ধারণ, বাস্তবায়ন এবং ঘাটতি বাজেট পূরণে এ টাকা একটি বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে সক্ষম। রাষ্ট্রকর্তৃক এ টাকা আদায়ের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য অনেকাংশে দূর করা সম্ভব। বর্ণিত সমীক্ষা দু’টি শুধুমাত্র ১৩ হাজার ১১ জন ব্যক্তির উপরে পরিচালিত। কিন্তু প্রকৃত হিসেবে যাকাতযোগ্য টাকা হবে আরও অনেক বেশি। কারণ, দেশে করদাতার সংখ্যা ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার জন। ২০২১-২২ সালে দেশে কর থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ লাখ ২৬৭ কোটি টাকা। তবে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। (বিডিনিউজ২৪.কম, ১২/৯/২০২১) উল্লেখিত ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার জনের মধ্য হতে অমুসলিম ব্যতীত সকলের উপরই যাকাত ফরজ। যাদের কাছ থেকে সরকার যাকাত আদায়ের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কর আদায়ের মতো যাকাত আদায়ের ব্যাপারেও সরকার আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে পারে। করের মতো সরকার যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করতে পারে। দেশে এবার করমুক্ত টাকার পরিমান নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু যাকাতমুক্ত টাকা আল্লাহর পক্ষ থেকেই নির্ধারিত রয়েছে। সেই হিসেবে বাংলাদেশে যাকাতদাতার সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে কয়েক কোটির উপরে। এ বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে যাকাত আদায় করলে সরকারের আয় কোটিগুণ বৃদ্ধি পাবে। আর এর মাধ্যমে সরকারের বাজেটখাত নিশ্চিতভাবে সমৃদ্ধ হবে। উল্লেখিত সমীক্ষাগুলো ত্রুটিযুক্ত হতে পারে। প্রকৃত হিসেব কমবেশি যা-ই হোক না কেন, বাজেটে যাকাতকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। আর এর সুষ্ঠু ব্যবস্থপনার মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়া যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন, যাকাত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশকে স্বাবলম্বী করতে ৫ বছরের বেশি সময় লাগবে না।
বাংলাদেশ সবেমাত্র এলডিসি অতিক্রম করলেও এখানে এখনও ৪০ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন পরিবার রয়েছে। রয়েছে ১৩ লাখ পথশিশু। আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা (আইএলও) বলেছে, দেশে বেকার তরুণ-তরুণীর সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। বস্তিতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। ঢাকাতে বসবাসকারী লোকের সংখ্যা দেড় থেকে দুই কোটি। ঈদের সময় ঢাকা থেকে সবাই বাড়ি গেলেও ৫০ লাখ মানুষ কোথাও যেতে পারে না। কারণ তারা ভূমিহীন। তাদের জায়গা-জমি নাই, বাড়িঘর নাই। তাই তাদের যাবার জায়গাও নাই। ঈদের সময়ও তারা কোথাও যেতে পারে না। তারা ঢাকার কোনো বস্তি অথবা রেল লাইনে কিংবা রাস্তার পাশে পলিথিন দিয়ে ঘর বানিয়ে বসবাস করে। স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স ৫১ বছর চলমান। বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি। জনমিতিক দৃষ্টিকোনে বাংলাদেশ এক অভাবিত সময় পার করছে। কারণ বাংলাদেশে এখন কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। যাদের বয়স ১৫ বছর থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। তার মানে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশই কর্মক্ষম। ২০৩০ সালে কর্মক্ষম জনসংখ্যা পৌঁছোবে ১৩ লাখে। নিশ্চয়ই কর্মক্ষেত্রে জনসংখ্যার এ চিত্র বাংলাদেশের কর্মশিল্পের জন্য এক বড়ো সুযোগ। এ বিশাল জনশক্তিকে কাজে লাগানো সময়ের অনিবার্য দাবি। আর এজন্য জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করা বিশেষ প্রয়োজন। প্রতিবছর বাংলাদেশে ২২ লাখ তরুণ-তরুণী কর্ম বাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তু সে তুলনায় কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির মতে, দেশে এক বছরে কর্মসংস্থান তৈরী হয় সর্বোচ্চ ৩ লাখ! সে হিসেবে প্রতি বছর ২১ লাখ কর্মীর মধ্যে মাত্র ৩ লাখ কর্মী কর্মবাজারে প্রবেশ করতে পারে। বাকী ১৮ লাখ তরুন-তরুণী বেকার জীবন যাপন করে। বেকারত্বের অভিশাপের কারণে অভিভাবকরা তাদেরকে বোঝা মনে করে। তারা সময় মত বিবাহের পীড়িতে বসতে পারে না। ফলে অনেকে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। সমাজে মারাত্নক অবক্ষয় সৃষ্টি হয়।
উল্লেখিত তথ্য প্রমান করে যে, দেশে প্রতি বছর ১৮ লাখ বেকার তরুণ-তরুণী বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দেড় দশকে দেশে এ সংখ্যাটি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বলাই যায়, বাংলাদেশ এখন বেকারের দেশে পরিণত হয়েছে। অর্থনীতি সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আবুল বারাকাতের মতে, করোনা মহামারীতে দেশে এক কোটি ১৪ লক্ষ মানুষ কর্ম হারিয়েছে, যার মধ্যে ৪৬ লক্ষ মানুষ কাজে ফিরতে পারেনি। শিল্পখাতে প্রায় ৯৩ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়েছে। যাদের মধ্যে ৩৭ লাখ মানুষের কাজে ফেরা বন্ধ হয়ে গেছে। সেবা খাতে চাকরি হারিয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ মানুষ, এদের মধ্যে ৬১ লাখ মানুষ পুর্ণ বেকার হয়ে গেছে। মানুষগুলো নিরঙ্কুশ দরিদ্র থেকে হতদরিদ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। গত দুই বছরে ১ কোটি মানুষ শহর থেকে গ্রামে প্রবেশ করেছে, যাদের এখনও কোনও কর্মসংস্থান হয়নি। ফলে বাংলাদেশের দারিদ্র্য বহুমাত্রিকতায় রূপ নিয়েছে। এ দারিদ্র্য দূর করতে প্রস্তাবিত বাজেটে সুস্পষ্ঠ কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় নি। ২০২১-২২ অর্থ সালের বাজেটে দরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। কিন্তু প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ সালে এ খাতে বরাদ্দ কমিয়ে রাখা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। একদিকে করোনার ধাক্কা সামলানো, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের জীবনযাত্রায় কোনো উন্নতি ঘটে নি। তাই সরকারের উচিত এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
বাজেটে অর্থ পাচার বন্ধের কোনো উদ্যোগ গ্রহনের কথা বলা হয়নি। টাকা পাচার বন্ধ ও দুর্নীতি দমনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া বর্তমান সময়ের এক অপরিহার্য দাবী। সময় টিভির ভাষ্য মতে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত টাকার পরিমান ৬৪ হাজার কোটি টাকা। আর গত ১০ বছরে দেশ থেকে পাচারকৃত টাকার পরিমান ছিল ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা! (বাংলা ট্রিবিউন, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৯) অর্থনীতি সমিতির মতে, বিগত ৫০ বছরে দেশে কালো টাকার পরিমান ৮৮ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা! অভিজ্ঞ মহলের মতে, রাষ্ট্র পরিচালকদের কেউ না কেউ এসব অনৈতিক কাজের সাথে সরাসরি জড়িত আছে। এমতাবস্থায় দেশ পরিচালকদের শুধু মুখে ও চেতনায় নয় বরং বাস্তব জীবনে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতিকে অনুশীলন করতে হবে। টাকা পাচার রোধ ও যাকাত ব্যবস্থাপনা চালু করতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। সুষ্ঠু যাকাতব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বেকারত্ব দূর করতে হবে। এক্ষেত্রে বৃহত্তর জেলাগুলোতে একটি করে কারখানা নির্মাণ করা যেতে পারে। শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের যোগ্যতানুযায়ী সেখানে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। স্বল্পপমেয়াদী কর্মমুখী প্রশিক্ষণ হাতে নিয়ে বাকিদেরকেও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এভাবে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষগুলোর অভাব দূর করা যেতে পারে। আর এভাবেই পারস্পারিক সমঝোতামূলক একটি বাজেট দেশের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে।
এবারের ঈদুল ফিতরের অর্থনীতির অন্যতম খাত ছিল ফিতরা ও যাকাত। এ ঈদে ধনীদের কাছ থেকে ফিতরা ও যাকাত বাবদ দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা। দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হওয়া এ টাকাটা নি:সন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। কিন্তু সমস্যা হলো, এ বিশাল অর্থ যথাযথ পন্থায় আদায় হয়নি। আবার বিতরণের সময়ও যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। বাংলাদেশে একটি যাকাত বোর্ড আছে। ১৯৮২ সালের ৫ জুন তৎকালীন সরকার এক অধ্যাদেশ বলে এ বোর্ড গঠন করেন। বোর্ডটি পরিচালনার জন্য ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। পদাধিকার বলে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। সদস্যসচিব নিযুক্ত হন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক। কিন্তু বর্তমানে এ বোর্ডটি স্পন্দনহীন একটি অকার্যকর বোর্ডে পরিণত হয়ে আছে। বাংলাদেশে যে একটি সরকারী যাকাত বোর্ড আছে, এটি দেশের জনগণ মোটেই জানে না। মৃত প্রায় এ বোর্ডটি জনগণের কোনো উপকারেও আসে না। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এটি মৃত ব্যক্তির ন্যায় নির্জীব অবস্থায় পড়ে আছে। এমতাবস্থায় মৃত এ বোর্ডটিকে সচল করা সময়ের অপরিহার্য দাবী। সারাদেশের জেলাগুলোতে আয়কর অফিস রয়েছে। এ অফিসে কমবেশি জনবল নিয়োগ দেয়া আছে। আয়করের মতো করে সারাদেশের প্রতিটি জেলাতে যাকাত বোর্ডের অফিস খোলা যেতে পারে। আয়কর অফিসের মতো এখানেও জনবল নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। আয়করের মতো আইন পাহ করে এ বোর্ডের মাধ্যমে যাকাত কালেকশনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বোর্ডটি আলাদা করলে এর গুরুত্বটা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের বিশ্বাস।
পূর্বেই বলা হয়েছে, গত রমজানের ঈদে বাংলাদেশে ফিতরা ও যাকাত খাত থেকে আদায় হয়েছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা। যাকাত বোর্ডের মাধ্যমে আদায় করা হলে যাকাত আদায় হতো আরো অনেকগুন বেশি। আর আদায়কৃত ৪০ হাজার কোটি টাকাও যদি এ বোর্ডের মাধ্যমে ৪৫৭১টি ইউনিয়নের মধ্যে বিতরণ করা হতো তাহলে প্রকৃত অভাবী জনগণের অভাব দূর হতো। কারণ উক্ত টাকা উল্লেখিত ইউনিয়নগুলোর মধ্যে ভাগ করে দিলে প্রত্যেকটি ইউনিয়ন বরাদ্দ পেতো পৌনে ৯ কোটি টাকা। আর এ টাকা দিয়ে একটি ইউনিয়ন পরিপূর্ণভাবে দারিদ্র্যমুক্ত হওয়া সম্ভব ছিল। তাই এ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একদিকে জনগন দরিদ্রমুক্ত হবে। অন্যদিকে দেশ উন্নত রাষ্ট্রের মহাসড়কে পা রাখতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশ সবেমাত্র উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কাতারে নাম লিখিয়েছে। স্বপ্ন এখন উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নাম লেখানো। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন ২০৪১ সাল প্রকল্প’ হাতে নিয়েছেন। নিঃসন্দেহে এটি সাধুবাদ পাওয়ার মতোই একটি প্রকল্প। তবে তাঁর এই প্রকল্পের যথার্থ ও পর্যাপ্ত যোগানদাতা হিসেবে যাকাত ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আর এ লক্ষ্যে যাকাত বোর্ডকে যথাযথ সচল ও কার্যকর করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
লেখক: কলামিস্ট ও অধ্যাপক, দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
Email: [email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।