Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাঠে নেই বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতা

ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২০, ১২:০৩ এএম

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনার পরও করোনাভাইরাস মোকাবেলা দুস্থ্য অসহায়দের পাশে দাড়াতে মাঠে নেই আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা। একেকটি মহানগর, জেলায় অসংখ্য নেতা থাকলেও দেশের এ কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকা মহানরে হাজার হাজার নেতা থাকলেও দেখা যাচ্ছে না তাদের। এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা।

ঢাকা মহানগনর আওয়ামী লীগ, কেন্দ্রীয় যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাদে হাতে গোনা কয়েকজন নেতা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে গরীব দুঃখীদের পাশে দাড়িয়েছেন। দলের পদ পাবার জন্য যেখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাসা-অফিসে গভীর রাত পর্যন্ত পদপ্রত্যাশীদের ভীড় থাকতো, গুটিকয়েক বাদে এই লোকদের দেখাই যাচ্ছে না। শুধু রাজধানীতে নয় সারা দেশেই আওয়ামী লীগ নেতাদের এই হাল। বেশিরভাগ জায়গায় এমপি মন্ত্রীদের পাওয়া যাচ্ছে না এমন অভিযোগ নিতান্তই স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। মন্ত্রী, এমপিদের দেখাদেখি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দও নিষ্ক্রীয় ভূমিকা পালন করছেন।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একটি অংশের সভাপতি বলেন, এতো শত শত নেতা কোথায় এখন তা খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। কমিটি না থাকার কারণে কাউকে জোরও করতে পারছি না। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদের জন্য একজনের পক্ষে কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি, কেন্দ্রীয় নেতা তদবির করেছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিতে হিমশিত খাচ্ছিলাম কি করবো, কাকে রাখবো, কাকে বাদ দিব। এখন করোনার পরিস্থিতিতে এমন হয়েছে যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার মত নেতা খুঁজে পাচ্ছি না। হাতে গোনা কয়েকজনকে শুধু মাঠে দেখছি।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষক করে দেখা গেছে সাবেক মহানগর কমিটির কোন নেতাই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাশে থাকছেন না। অনেক হেভিওয়েট নেতার কারণে যেখানে মহানগরে মঞ্চে বসার চেয়ার থাকা থাকতো না, সেখানে এখন কেউ নেই।

ঢাকা দক্ষিণের আবু আহমেদ মন্নাফি বয়সের বাধা না মেনে নিয়মিত ত্রাণ কার্যকম পরিচালনা করছেন। তার পাশে নিয়মিত থাকছেন, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, মনসুরুল আবেদিন মুকুল। মহানগরের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সাথে থাকছেন ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এর বাইরে নগর বা ছাত্রলীগের সাবেক কাউকে দেখা যাচ্ছে না।

ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির পাশে নিয়মিত থাকছেন নগরের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক আজিজুল হক রানা ও যুবলীগের সাবেক শিক্ষা সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু। এর বাইরে নগরের সাবেক নেতাদের দেখা যাচ্ছে না। স্বেচ্ছাসেবক লীগে সভাপতি নির্মল রঞ্জনগুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সাথে ঢাকা উত্তরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ কয়েকজন নেতা মাঠে রয়েছেন।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিলের পাশাপাশি সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু, এন আই আহমেদ সৈকত, ঢাকা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, ঢাকা দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সরোয়ার হোসেন বাবুকে ত্রাণ কার্যক্রমে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে দেখা যাচ্ছে।

করোনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কোন ভূমিকাই লক্ষ্য করা যায়নি, তবে ঢাকার বাইরে অনেক জেলায় ছাত্রলীগ কৃষকের পাশে থেকে প্রশংসনীয় কাজ করেছে। মাঝে মধ্যে সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ঢাকার বাইরে ধান কাটতে ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন। এর বাইরে শুধু উপ-সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদারের কর্মকান্ড ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। লকডাউনে গ্রামে কাজ করছেন শাহাদাত হোসেন রকি, খাদেমুল বাশার জয়। এছাড়া বেশিরভাগ নেতাকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

শ্রমিক লীগের কাউকে এখন পর্যন্ত মাঠে দেখা যায়নি। কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ ঢাকার বাইরে কৃষকদের ধান কাটার ভালো কিছু কর্মসূচী নিয়েছেন কিন্তু কৃষক লীগের অন্য কোন কেন্দ্রীয় নেতার কার্যক্রম দেখা যায়নি।
নেতারা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়াতে এ সংকট বিরাজ করছে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও কাউকে জোর করতে পারছেন না কারণ কারোরই কোন পদ নেই।

এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মী ও বিত্তবানদের গরীব দুস্থ্যদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল থেকে দলের ত্রাণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষক করছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। ত্রাণ উপ-কমিটির দেয়া তথ্য মতে, এক কোটি বিশ লাখ পরিবারকে এ পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • Gazi Alsaf Habib ১৬ মে, ২০২০, ১:০৫ এএম says : 0
    তাদের মাঠে নামা উচিত।কারণ ওরা করোনার চাইতে শক্তিশালী।
    Total Reply(0) Reply
  • Saima Chowdrey Misso ১৬ মে, ২০২০, ১:০৫ এএম says : 0
    সত্যি কথা
    Total Reply(0) Reply
  • MD Rashadul Hasan ১৬ মে, ২০২০, ১:০৬ এএম says : 0
    দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের বিপদের দিনে টাকাওয়ালাদের বেশিরভাগই পাশে নেই। নামিদামি এনজিও, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক ও ট্রাস্ট, মোবাইল কোম্পানি এবং ব্যাংকিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সিংহভাগই দেশবাসীর অসহায় দিনগুলোতে কোনো মানবিক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসেনি।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ মোশাররফ ১৬ মে, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
    দেশের মানুষের দুর্দিনে পাশে নেই অনেক জনপ্রতিনিধি। যার মধ্যে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এমনকি অনেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানও রয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই মাঠে অনুপস্থিত।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ মোশাররফ ১৬ মে, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
    আওয়ামী লীগ নেতাদের এখন সবচেয়ে আরাম-আয়েশের জীবন কাটছে। বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে ওদের ভালোই মাস্তি চলছে। যত কষ্ট সাধারণ মানুষের।
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ১৬ মে, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
    সব স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন। আপাতত জনগণের খোঁজ নেওয়ার মতো সময় নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • শওকত আকবর ১৬ মে, ২০২০, ৯:৫০ এএম says : 0
    শুধুকি আঃলীগ? বি এন পি,জাপা,বামদল,ইসলামিদল,এরা সবাই করোনায় আতংকিত।তাই এরা মাঠে নামছেননা। এদের নির্বাচনের মাঠে ঠিকই পাবেন।তখন এরা মাঠে নামতে ভুল করবেন।এই চুড়ান্ত দুঃসমনরাই সেদিন গরিব মেহনতী মানুষের দরদী বন্ধ বনে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১৬ মে, ২০২০, ১০:০২ এএম says : 0
    They become leader because they can loot our tax payer money, now they are enjoying nice holiday in the safety in their home, eating nice food, listening muslim, watching movies, living in an air-conditioned room. If our PM come out and distribute then may be all the big/small will come out from their hiding place to help the needy people.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৬ মে, ২০২০, ৯:২৩ পিএম says : 0
    সাংবাদিক ইয়াছিন রানা তাঁর প্রতিবেদনে যতটুকু এলাকা ওনার নজরে এসেছে তারউপর আওয়ামী লীগ নেতাদের কর্মকাণ্ডের একটা চিত্র তুলে ধরেছেন। আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাই ওনার এই সাহসীপূর্ন লেখার জন্যে। এরপূর্বে সাংবাদিক স্টালিনও আমাদেরকে আওয়ামী লীগ নেতাদের করোনা পরিস্থিতির উপর করা কর্মকাণ্ড নিয়ে লিখেছিলেন। এখন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যদি ওনাদের এই সাহসীপূর্ন লিখা মোতাবেক দলের নেতাদেরকে বিচারের আওতায় আনেন তাহলে দেশের ও দশের মঙ্গল হবে এটাই বিজ্ঞজনেরা মনে করেন। এখানে অবশ্যই বলতে হবে যে, সাংবাদিকদ্বয় তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেছেন এটা পরিষ্কার ভাবেই ফুটে উঠেছে। এখন আমাদের নেত্রী হাসিনা এই সাহসীপূর্ন প্রতিবেদনের উপর কি পদক্ষেপ নেন সেটাই আমাদের দেখার বিষয়। আল্লাহ্‌ আমাকে সহ সবাইকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দান করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ