Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মায়েদের অনেক ত্যাগে আজ তারা তারকা

ক্রীড়াঙ্গণে মা দিবস

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

সন্তানের বিকাশে মায়ের অবদান অতুলনীয়। সন্তানের চলার পথ মসৃণ করতেও কত রকম ত্যাগ স্বীকার করেন মায়েরা। ক্রীড়াজগতে এমন কিছু তারকা আছেন, যাঁরা মায়েদের জন্য আজ তার সাফল্যের চূড়ায়। গতকাল ছিল ‘বিশ^ মা দিবস’। বিশেষ এই দিনেটিতে আসুন জেনে নেই ক্রীড়াঙ্গণে সেসব মায়েদের কথা.....


ডেলোরিস জর্ডান
মাইকেল জর্ডানের নাম তো শুনেছেন। ডেলোরিস এই বাস্কেটবল কিংবদন্তির মা। এক তথ্যচিত্রে মার্কিন তারকা বলেছিলেন, প্রথম দফায় তিনি বল ‘বাস্কেট’ করতে পারতেন না। এ বিদ্যাটা শিখেছেন মায়ের কাছ থেকে। ছোটবেলা থেকেই লম্বা হতে চেয়েছেন জর্ডান। রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে একদিন কথাটা বলতেই অদ্ভুত এক পরামর্শ দেন ডেলোরিস। জুতোয় লবণ মেখে প্রার্থনা করো!

১৯৯৩ সালে দুই কিশোরের হাতে খুন হন জর্ডানের বাবা জেমস জর্ডান সিনিয়র। শিকাগো বুলস তারকা এতটাই মুষড়ে পড়েছিলেন যে ছেড়ে দিয়েছিলেন সাধের বাস্কেটবল। তাঁকে আবারও খেলায় ফিরিয়েছিলেন ডেলোরিস।


ডলোরেস আভেইরো
কার মা, তা না বললেও চলে। অন্তত এ দেশের বেশিরভাগ ফুটবলপ্রেমীই জানেন নামটা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাড়ির সঙ্গে জড়িত; তার মা। রোনালদোর শৈশব ছিল সমস্যাসঙ্কুল। পিতা হোসে দিনিস ফুটবলার হলেও ছিলেন মদ্যপ। ২০০৫ সালে তিনি মারা যান। রোনালদোর বয়স তখন ২০ বছর। বড় ভাই হুগো মাদকাসক্ত। এ পরিস্থিতিতে সংসারের হাল ধরেছিলেন ডলোরেস। শক্ত হাতে রোনালদোকে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন স্বপ্নপ‚রণের চ‚ড়ায়। ডলোরেস মমতা দিয়ে আগলে রেখেছিলেন বলেই রোনালদো এতটা উচুঁতে। অনেকের কাছেই তিনি ‘জননী সাহসিকা।’


ডায়না হার্নান্দেজ
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, পিএসজি। তার আগে রোজারিও সেন্ট্রাল, বেনফিকা, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড মাতিয়েছেন আর্জেন্টাইন উইঙ্গার। ডি মারিয়ার ফুটবলার হয়ে ওঠা তার মায়ের কল্যাণে। শৈশবে রিভার তাঁকে সই করাতে চাইলে দ্বিধা করেননি ডায়না। দ‚রত্ব ছিল অনেক। তখন ডি মারিয়ার বাবার গাড়ি ছিল না। ডায়না ‘গ্রাসিয়েলা’য় (সাইকেলের মতো বাহন) করে ছেলেকে নিয়ে যেতেন ট্রেন স্টেশনে। গোটা শহর পার হয়ে যেতে হতো তাঁকে। এভাবে রোজারিও সেন্ট্রালে ডাক পেয়ে যান ডি মারিয়া।ডায়না ওই ত্যাগটুকু স্বীকার না করলে তার উঠে আসার পথটা সহজ হতো না।


আদ্রিয়ানা আগুয়েরো
মা-বাবার দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন সার্জিও আগুয়েরো। মা কিশোরি থাকতেই এসেছিলেন গর্ভে। আগুয়েরোর বয়স ৬ মাস থাকতে তাদের বাসা দ্বিতীয়বারের মতো বন্যায় ভেসে যায়।চুরিও হয়ে যায় সব কিছু। পেটের সন্তানকে বাঁচাতে কাতান থেকে বুয়েনস এইরসে চলে যান আদ্রিয়ানা। আগুয়েরোকে নিরাপদে জন্ম দিতে সেখানে একটি বদ্ধ কামরায় কয়েক সপ্তাহ ছিলেন আদ্রিয়ানা। জন্মের সময় কাঁধের একটি হাড় ভাঙা ছিল আগুয়েরোর। তার বাবার বয়স কম হওয়ায় হাসপাতালের নিবন্ধনে লিখতে হয়েছিল মায়ের নাম। সেখান থেকেই তিনি আজকের সার্জিও আগুয়েরো।


সেলিয়া
বিচ্ছেদের গল্প। লিওনেল মেসি ১৩ বছর বয়সে বাবার হাত ধরে পাড়ি জমান বার্সেলোনায়। তখন আর্জেন্টিনায় থেকে যেতে হয় তার মা সেলিয়া কুচিতিনিকে। এ সময়টা মেসির মায়ের জন্য ছিল ভীষণ কষ্টের।

সেলিয়া অনেকবারই বলেছেন, সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য তখন মাতৃস্নেহ ত্যাগ করতে তার ভীষণ কষ্ট হয়েছে। বিদেশ-বিঁভুইয়ে তার ছোট ছেলেটা কেমন আছে, এ ভাবনাটা কুড়ে কুড়ে খেত তাঁকে। মেসি খ্যাতি কুড়োনোর সঙ্গে সেলিয়ার কষ্টও নিশ্চয়ই লাঘব হয়েছে।


সাকিব-মুশফিকের দৃষ্টিতে মা
মায়ের ভালোবাসা প্রতিটা মুহ‚র্তের। এর জন্য নির্দিষ্ট করে কোনো দিন বেধে রাখা যায় না। সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুই অভিজ্ঞ সেনানী সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের অফিসিয়াল পেজে আলাদা করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই জুটি। চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে মায়েদের বিশেষ যতœ নিতে বলেছেন।

সাকিব লিখেছেন, ‘মায়েরা ছোটবেলা থেকেই আমাদের সর্বাতœক যতœ নিয়ে এসেছেন। আমাদেরকে ভালো-খারাপ, সতর্কতা এবং অসতর্কতার মধ্যে পার্থক্য করতে শিখিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের এই মহামারি চলাকালীন সময়ে তাদের যতœ নেয়া তাই আমাদের দায়িত্ব। মনে রাখতে হবে, বয়সের কারণে তাদের করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই তাদের প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেই সামাজিক দ‚রত্ব এবং পরিষ্কার পরিচ্ছনতার নিয়মগুলো মেনে চলার। এখন আমাদের দায়িত্ব তাদের সর্বাত্মক খেয়াল রাখার।’

মুশফিক তার মা, শাশুড়ী ও স্ত্রীর ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সকল মায়েদের প্রতি ভালোবাসা রইল। এটা বলে বোঝানো যাবে না, প্রতি দিন তারা তাদের পরিবারের জন্য কি পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করে। মা দিবসে সকল মাকে শুভেচ্ছা। আমাদের জীবনের সেরা আর্শীবাদ।’
বিক্রি হলো মুন্না ও বাবুর ঐতিহাসিক জার্সি!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মা দিবস

৬ আগস্ট, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ