Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মীয় বৈষম্যের অভিযোগে ভারতকে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ মার্কিন কমিশনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ৩:২৩ পিএম

ভারতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কট্টর হিন্দুত্ববাদি দল বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটিতে ইসলামফোবিয়া ও মুসলিমদের উপর নির্যাতন বেড়েছে। এ কারণে মঙ্গলবার ভারতের বিরুদ্ধে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনে কালো তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি প্যানেল।

ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রেলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) নামের ওই প্যানেলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভারতে সংখ্যলঘু নাগরিকদের ধর্মাচার পালনসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে ওই সুপারিশ করা হয়। প্রতিবেদনে ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে মন্তব্য করে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে ব্যর্থ হলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বলা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার মারাত্মক অবনতি ঘটে। সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় আচার পালনে বাধাদান, মানসিক চাপ ও শারীরিক মারধরসহ নানা হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে।

নির্দলীয় এই সরকারি প্যানেলটি তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কোনো দেশের বিরুদ্ধে এরকম ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করলেও সেটা প্রয়োগের ক্ষমতা তাদের নেই। আর ভারতের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র দপ্তর এ ধরনের পদক্ষেপ নেবে, এমন সম্ভাবনাও নেই। কারণ দেশটির সঙ্গে ভারতের মিত্রতা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে জাতিসংঘে ‘মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক’ ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিব্রত অবস্থায় রয়েছে।

তবে গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের নতুন এই আইনটির বিরুদ্ধে টুঁ শব্দও করেননি। সে সময় দিল্লিতে নাগরিক বিক্ষোভে পুলিশের গুলি ও আইনের সমর্থক গোঁড়া হিন্দুদের হামলায় ৫৩ জন নিহত হন। নিহতদের অধিকাংশই মুসলমান।

অবশ্য ইউএসসিআইআরএফ-এর ভাইস-চেয়ার নাদাইন মেনজা বলেন, কমিশনকে বিপরীতে একটি স্বাধীন সালিশি ক্ষমতা দেয়া হয় কেবল বিভিন্ন জাতিদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রেকর্ডের দিকে নজর দেয়ার জন্য। তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রতা আছে কী নেই, সেটা কোনো বিষয় নয়। বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন ছাড়াও এক সাক্ষাৎকারে মেনজা ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে নিগৃহীত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

ভারতে এই পরিস্থিতির অবসান না হলে এর জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ভিসা না দেয়ার এবং যেসব সামাজিক গোষ্ঠীগুলোকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থসাহায্য পাঠানো হয়, তা বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান জানায় কমিশন। তাদের মতে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে পরিচালিত হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আচার আচরণের ওপর অসহনীয় আঘাত হানছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্যানেলের এই প্রতিবেদন নাকচ করে দিয়েছে ভারত। তারা একে নিজেদের বিষয়ে ‘ভুলভাবে উপস্থাপনা’ হিসেবে দাবি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, আমরা এসব প্রতিবেদনকে অগ্রাহ্য করি। কারণ ভারতের বিরুদ্ধে এ সব ষড়যন্ত্রমূলক কথা নতুন কিছু নয়। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওই কমিশন তাদের ভুলভাল উপস্থাপনার আরেক নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। সূত্র: এএফপি।

 

 



 

Show all comments
  • Md. Shamsul Hoq ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ৪:৫৯ পিএম says : 0
    The real picture of India reflected in USCIRF's report. US should pay proper attention om this report.
    Total Reply(0) Reply
  • Shyamal ১ মে, ২০২০, ১:৫৫ এএম says : 1
    ভারতের মুসলিমরা অনেক আরামে আছে হিন্দুরা অমানুষ নয়
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ