Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরিবর্তিত ফুটবলের রূপ কি বদলাবে?

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

প্রাণের মাস এপ্রিল। অন্তত ফুটবলপ্রেমীরা এই অর্থটা ভালোই অনুধাবন করতে পারবেন। ইউরোপিয়ান ফুটবল এ মাসেই পরিবর্তন করে তার গতিপথ। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে কোনো দল থাকে এগিয়ে, আরেক দল ঘাড়ে ফেলতে থাকে নি:শ্বাস। আজ রাতে রিয়াল মাদ্রিদ হেরে গেল। পরদিন বার্সেলোনা জিতে উঠে গেল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। অথবা দু’দলই জিতল। কিন্তু গোল ব্যবধানে কারও অবস্থান প্রথম, কারো দ্বিতীয়। কিন্তু এখন? ইতালির কথায়ই আসি। মার্চের ৮ তারিখে জুভেন্টাস ও ইন্টার মিলানের মধ্যকার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ক্লোজড ডোরে। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিস্তার রোধে নেয়া হয়েছিল এই পদক্ষেপ।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুল ৩০ বছর পর শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে কতটা এগিয়ে ছিল? ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাদের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে লিগে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল। জার্মান বুন্দেসলিগার দল বায়ার্ন মিউনিখ ছিল জয়ের ধারায়। অন্যদিকে দ্বিতীয় সারির দল রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে হেরে পিছিয়ে পড়ল স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। আর্জেন্টাইন প্রিমিয়ার ডিভিশন জিতল বোকা জুনিয়র্স। এরপর ইউরোপিয়ান গেমস হয়ে গেল স্থগিত। কিছু খেলা অবশ্য চলছিল ক্লোজড ডোরে। তাও টেকেনি বেশিদিন।
জুভেন্টাস সেন্টার-ব্যাক দেনিলি রুগানি প্রথম ফুটবলার হিসেবে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হলেন। এরপর তাকে অনুসরণ করলেন তার সতীর্থ ফরোয়ার্ড পাওলো দিবালা। এরপর আর্সেনাল কোচ মিচেল আর্তেতা। গোটা ফুটবলই হয়ে গেল ‘শাটডাউন’। সামাজিক দূরত্বের সূত্র মানতে গিয়ে এই প্রক্রিয়াই ছিল উত্তম। ‘লকডাউন’ হয়ে গেল সারাবিশ্ব। মানুষজনকে নিজঘরে থাকতে বলা হল। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়া সবাই গৃহবন্দী।
ফিফা, উয়েফা এবং ইউরোপিয়ান লিগগুলো ফুটবল ফেরানোর জন্য উপায় খুঁজতে শুরু করে দিল। তবে সবার আগে স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে মাথায় রেখে।
অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত ক্লাবগুলো। তারা দলের খেলোয়াড়দের বেতনে কোপ বসাল। বার্সা, অ্যাটলেটিকো, বায়ার্ন, জুভেন্টাস, রিয়ালসহ কিছু ক্লাবের খেলোয়াড়রা স্বেচ্ছায় কম বেতন নিতে সম্মত হল। উয়েফা ২০২০ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপকে ২০২১ পর্যন্ত স্থগিত করল। কোপা আমেরিকার, এমনকি ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিকের ভাগ্যেও জুটল একই পরিণতি। বসন্তের আগে সেরা যে ম্যাচটি চোখে পড়েছে, তা হল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও লিভারপুলের। মার্চের ১১ তারিখে ক্লপের উড়ন্ত দলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টারে উঠেছিল স্প্যানিশ ক্লাবটি।
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার (উয়েফা) প্রধান আলেকসান্দের চেফেরিন বলেছিলেন, জুলাই-অগাস্টের দিকে প্রয়োজনে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতা দুটি চালু করা হবে। তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে শুরু করতে না পারলে টুর্নামেন্টগুলো বাতিল হওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। জুলাই-আগস্টের মধ্যে ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলো শেষ করার তাড়াও আছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় একই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল রাউন্ডের ম্যাচ আয়োজন অসম্ভব বলে মনে করছেন বায়ার্ন মিউনিখ ডিফেন্ডার এনরিক হার্নান্দেস, ‘সবগুলো প্রতিযোগিতা শেষ করা কঠিন হবেৃবাস্তববাদী হতে হবে। আমি মনে করি, এই সময়ের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ করা অসম্ভব হবে। বিশেষ করে যদি আমরা ঘরোয়া লিগগুলো শেষ করায় গুরুত্ব দেই।’
ইউরোপিয়ান ফুটবলের পরিচালনা পর্যদ গ্রীষ্মকালে পুনরায় খেলা ফেরানোর দিকে মননিবেশ করতে থাকল। অন্যদিকে বেলজিয়াম তাদের লিগ বাতিল ঘোষণা করল। এর ফাঁকে আশার খবর, বুন্দেসলিগা মে মাস নাগাদ মাঠে ফেরার পরিকল্পনায় ব্যস্ত, কঠোর নিয়মের বলয়ে অনুশীলনও চালাচ্ছে জার্মান ক্লাবগুলো। করোনাভাইরাসের প্রকোপ ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে ইউরোপে। ফুটবলও আশা করা যায় ফিরবে অতি শীঘ্রই। তবে গোল বলের খেলাটি কখনোই আর হবে না আগের মতো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ