Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অসুবিধায় থাকা মানুষদের জন্য প্রণোদনা সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে

কামরুল হাসান দর্পণ | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

পুলিশ স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা থেকে কেউ বের হতে পারবে না, ঢুকতেও পরবে না। মানুষ ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর আনন্দিত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ঈদের ছুটির আবহ তৈরি হয়েছিল। লাখ লাখ মানুষ যে যেভাবে সম্ভব ঢাকা ছেড়েছে। আর ঢাকায় যারা রয়ে গিয়েছিল, সরকারের তরফ থেকে তাদের ঘরের বাইরে বের না হতে অনুরোধ করা হয়েছিল। স্বভাবগতভাবে মানুষ অনেক দিন ঘরবন্দি হয়ে থাকতে চায় না। তারা ফাঁকা রাস্তায় ঘোরাফেরা শুরু করে। পাড়া-মহল্লার অলি-গলি, চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে থাকে। সরকারের বিনয়ী আচরণকে অনেকেই তেমন গ্রাহ্য করনি। অথচ তারা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে চলছিল। ফলে সরকার কিছুটা কঠোর অবস্থান নেয়। পুলিশ, সেনাবাহিনী দিয়ে ঘরে ঢোকানোর পদক্ষেপ নেয়। তবে এমতাবস্থায় মানুষ মূল সড়ক থেকে সরে অলি-গলিতে ঠিকই আড্ডা দিতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত তাদের নিবৃত্ত করা যায়নি। দেশে যে এক ভয়াবহ মরণ ব্যাধি বিস্তার লাভ করছে, এ নিয়ে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা যেন পণ করে বসেছে, আড্ডা ছিল, আছে এবং থাকবে। এটা কেউ বন্ধ করতে পারবে না। এ হলো এক শ্রেণির মানুষের কথা। আরেক শ্রেণি ঘর থেকে বের হচ্ছে বাধ্য হয়ে। আসলে ঘরে যখন খাবার থাকে না, পরিবারের লোকজন না খেয়ে থাকে, তখন উপার্জনক্ষম ব্যক্তির পক্ষে বসে থাকা সম্ভব নয়। নিজের জীবনের চেয়ে না খেয়ে থাকা মানুষগুলোর কষ্ট বড় হয়ে উঠে। কর্মহীন হয়ে পড়ার ভয় তাকে পেয়ে বসে। এ কারণেই আমরা দেখেছি সাধারণ ছুটি ঘোষণার মধ্যেও গার্মেন্ট খোলা রাখার ঘোষণায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মজীবীদের ঢাকায় ছুটে আসতে। জীবন-জীবিকা ও ক্ষুধার কাছে কখনো কখনো মৃত্যুভয়ও তুচ্ছ হয়ে যায়। দেশে ধাপে ধাপে ছুটি বাড়ানো হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটির প্রথম ধাপ। বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, এরপরই দেশের করোনা পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা বোঝা যাবে। বাস্তবিক দেখা গেল, ৫ এপ্রিলের আগে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে টুকটুক করে চলছিল তা এক লাফে ৯ থেকে ১৮তে পৌঁছে যায়। মৃতের সংখ্যাও বাড়ে। অবশ্য করোনার লক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকে। এ ধরনের মৃত্যু এখনও হচ্ছে। এসব মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন থকলেও তা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ৫ এপ্রিল সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা প্রত্যেকে এ কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে চাই। তবে সরকারের এ ঘোষণার বাইরে যেসব আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে, তাতে পরিস্থিতি ভালো, এমন মনে করা যাচ্ছে না। তারপরও দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেকেই কায়মনোবাক্যে এ পরিস্থিতির দ্রæত অবসান কামনা করছে। করোনা পরিস্থিতি যে দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘ মেয়াদে টানাপোড়েন সৃষ্টি করবে, তাতে সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ০.৪ শতাংশ কম হবে বলে এডিবি প্রেডিক্ট করেছে। সরকারের তরফ থেকেও আমদানি-রপ্তানি খাতসহ অন্যান্য খাত ক্ষতির শিকার হবে বলে বলা হয়েছে। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পিছিয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ সার্বিক অর্থৈনতিক পরিস্থিতি মন্দাবস্থার মধ্যে পড়বে। নিশ্চিতভাবে এর বড় শিকার হবে দেশের প্রায় চার কোটি দরিদ্র জনগোষ্ঠি। সবচেয়ে বিপাকে পড়বে কারো কাছে হাত পাততে না পারা নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষগুলো। এ মানুষগুলো গুমরে মরলেও কারো কছে হাত পাততে পারে না। সরকার ইতোমধ্যে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বৃহৎ এবং ক্ষুদ্র শিল্পে ফিফটি পার্সেন্ট ভর্তুকি সুদে ঋণ সুবিধা রয়েছে। গার্মেন্ট খাতে ইতোমধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সামাজিক সুরক্ষামূলক যেসব কার্যক্রম রয়েছে সেগুলো জোরদারের কথা বলা হয়েছে। তবে এসব উদ্যোগ ভালো হলেও তা আপৎকালীন। শিল্প-কারখানা ঘুরে দাঁড়ানো এবং পুনরায় কাজ শুরু না করা পর্যন্ত এ ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। বলা বাহুল্য, সরকারের এ প্রণোদনার সুবিধা সমস্যায় থাকা মানুষগুলো কতটা পাবে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। কারণ আমাদের দেশের অপসংস্কৃতিই হচ্ছে সরকারি সাহায্যের লুটপাট। যাদের বণ্টন করতে দেয়া হয়, তাদের বেশির ভাগই এ কাজটি করে। বিষয়টি বেড়ায় ক্ষেত খেয়ে ফেলা বা শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দেয়ার মতো হয়ে দাঁড়ায়। মহামন্দা, অভাব-অনটন, দুর্ভিক্ষের সময় একটা শ্রেণির জন্য অত্যন্ত সুসময় হয়ে উঠে। তাদের পোয়াবারো হয়ে দাঁড়ায়। অতীতের দিকে তাকালে তা দেখা যাবে। সামনে যে মন্দাবস্থা ধেয়ে আসছে, তা এখনই টের পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এ মন্দা ছড়িয়ে পড়বে। ২০০৭-২০০৮ সালে বিশ্ব সর্বশেষ অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছিল। সে সময় বাংলাদেশ তা বেশ ভালোভাবে সামাল দেয়। সে সময়ের বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার আর এ সময়ের অর্থনীতির আকার এক নয়। এ সময়ের বাজেটের আকার সে সময়ের পাঁচ গুণ। আবার সে সময়ের মন্দা আর অনাগত মন্দার চিত্রও এক হবে না। এ মন্দা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্বের অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলোকে এ মন্দা সামাল দিতে বেগ পেতে হবে। আমাদের পরিস্থিতি কী হবে তা টের পাওয়া যাবে আমাদের অর্থনীতির অন্তর্গত ভিত্তি বা শক্তি কতটা মজবুত তার চিত্র দেখে। বিগত প্রায় এক যুগ ধরে সরকার বলে আসছে, আমরা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। পৃথিবীর অনেক দেশ আমাদের ফলো করে। এমনও বলা হয়, আমরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া হয়ে গেছি। ভারত-পাকিস্তানকে তো অনেক আগে পেছনে ফেলেছি। তবে আমরা সার্কের সবচেয়ে ছোট দেশ মালদ্বীপ, যেটি ঢাকার চেয়েও ছোট, অর্থনীতিতে তাকে পেছনে ফেলতে পেরেছি কিনা তা বলি না। যেসব দেশের সাথে আমরা নিজেদের তুলনা করি বা যাদের ছাড়িয়ে গেছি বলে বলছি, করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের সহযোগিতায় সেসব দেশের সরকার যে সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছে, আমাদের সরকার কি সে সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়িয়েছে? পাঠকরা তুলনামূলক চিত্র দেখলেই তা অনুধাবন করতে পারবেন। সামনে আমাদের বেশির ভাগ মানুষের জন্য অত্যন্ত কঠিন সময় যে অপেক্ষা করছে, তা এক প্রকার নিশ্চিত। এ পরিস্থিতি সরকার কোনো দিনও স্বীকার করবে না। এ নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক হবে। টেলিভিশনের টক শোগুলোতে সরকারের সুবিধাভোগী লোকজন পরিসংখ্যানের ফুলঝুরি ছোটাবেন। এ তর্কের আড়ালে কষ্টে থাকা মানুষের দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া কোনো গতি থাকবে না। কারণ আমাদের সরকার পরিসংখ্যানগত উন্নয়ন তুলে ধরতে পছন্দ করে। সরকার উন্নয়নের আগে চলতে পছন্দ করে। সামনে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে তার একটা আংশিক চিত্র দেয়া যেতে পারে। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছিল, তাতে বহু প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়েছিল। বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মন্দা হয়েছিল ১৯২৯ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত, যাকে মহামন্দা বলে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী কয়েক মাসে করোনাভাইরাস হয়তো নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে, তবে এর অর্থনৈতিক প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও একই কথা বলছে। যেমন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার হিসাবে করোনাকারণে বিশ্বজুড়ে আড়াই কোটি মানুষ কাজ হারাতে পারে। বাংলাদেশও এর বাইরে থাকবে না। বিপাকে পড়তে পারে বেসরকারি খাতের শ্রমিক, চাকরিজীবী, ছোট ব্যবসায়ী, হকার, রিকশা-অটোরিকশাচালক ও শ্রমজীবী মানুষ। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু এখন ভালো আয় করতে পারছে না, সেহেতু বেতন বিলম্বে হতে পারে। কেউ কেউ বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক ছুটির মুখেও পড়তে পারেন। কেউ কেউ চাকরি হারাতে পারে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের মন্দার সময় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকার হয়তো নানা সহায়তা দেয়। কিন্তু এত দিন যাঁরা মোটামুটি ভালো একটি চাকরি বা ব্যবসা করে স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করেছে, সেই চাকরিজীবী ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে বিপাকে পড়তে হতে পারে। যারা বেসরকারি খাতে কাজ করে, তাদের ঝুঁকি বেশি। নানা উছিলায় লোকজন ছাঁটাই করতে পারে। সাধারণত মহামন্দার সময় এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, সরকারের সুবিধাভোগী শ্রেণি এবং দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকরীদের কোনো সমস্যা হবে না।

দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি এবং কর্মসংস্থানের চিত্র বেশ কয়েক বছর ধরেই ঋণাত্মক। দিন দিন বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছে। এক নম্বর রফতানি খাত গার্মেন্টে বিগত কয়েক বছরে শত শত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা পরবর্তী সময়ে মন্দার ধাক্কায় আরো অনেক কারখানা বন্ধের আশঙ্কা রয়েছে। যদি তাই হয় তবে, বেকারের সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা মুশকিল। অর্থনীতিতে যে তা প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করবে, তা বলা বাহুল্য। শুধু গার্মেন্ট খাতই নয়, অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ প্রবাসীদের আয়ে বড় ধরনের ধসের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। যে কয়েক লাখ প্রবাসী দেশে ফিরেছে তারা আবার ফিরে যেতে পারবে কিনা তা অনিশ্চিত। যারা এখন প্রবাসে রয়েছে তাদের অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাদের অনেককে হয়তো দেশে ফিরতে হতে পারে। যদি তাই হয় তবে, প্রবাসী আয়ে যেমন ধস নামবে, তেমনি দেশে বেকারত্বের হারও বাড়বে। ঢেউয়ের মতো আসতে থাকা একের পর এক এই চাপ আমাদের অর্থনীতি কতটা সামাল দিতে পারে, তাই এখন দেখার বিষয়। বলা যায়, সরকারের কথা মতো, আমাদের অর্থনীতির যে শৈনেশৈনে উন্নতি তার একটি বড় পরীক্ষা এখন দিতে হবে। সরকার বিগত অর্থনৈতিক মন্দা সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করেছে বলে এতদিন শুনেছি। প্রকৃতপক্ষে তা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার মোকাবেলা করেছে। এখন দেখার বিষয়, আশঙ্কিত মন্দা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার কতটা পারঙ্গমতা দেখাতে পারে। এ পরিস্থিতি সরকারের জন্য রিয়েল টেস্ট। কারণ বিগত প্রায় অর্ধ যুগের বেশি সময় ধরে অর্থনীতি ব্যাহত হয়, এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি সরকারকে হতে হয়নি। ফলে এ সময়ের মধ্যে দেশের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী হয়েছে, তার পরীক্ষা হয়ে যাবে। তবে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি যে হয়নি, তা নয়। এক শ্রেণির মানুষের এতই উন্নতি হয়েছে যে, দেশের মোট সম্পদের সিংহভাগই তাদের হাতে। অর্থাৎ উন্নতি সুষমভাবে হয়নি। অল্প সংখ্যক মানুষ আকাশে উঠেছে, বেশির ভাগ মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি, কিংবা প্রান্তিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। বলা যায়, সরকারের প্রশ্রয়েই এই আয় বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে যে বেশুমার লুটপাট হয়েছে, তা কারা করেছে সরকার ভালো করেই জানে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন দেখার বিষয়, দেশের মন্দাবস্থায় সরকারের প্রশ্রয় এবং সুবিধাভোগীরা কী ভূমিকা পালন করে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার সক্ষম বা অক্ষম, যেমনই হোক না কেন দেশের ক্রান্তিকলে সবার আগে তাকেই হাল ধরতে হবে। সরকার প্রাথমিকভাবে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। আসন্ন মন্দা মোকাবেলায় এ প্যাকেজ যথেষ্ট কিনা তা করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বোঝা যাবে। যদি যথেষ্ট না হয়, তবে সরকারের এত বছরের উন্নয়নের কঙ্কাল বের হয়ে পড়বে। আমরা অবশ্যই এমনটা আশা করছি না। আমরা চাইব, দেশ কোনো ধরনের মন্দা পরিস্থিতিতে না পড়ুক। পড়লেও সরকার যাতে তা মোকাবেলা করে দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে এবং দেশের সকল স্তরের মানুষকে ভালো রাখতে পারে। সরকারের উচিত হবে, সরকারি-বেসরকারি খাত ভাগ করে সংশ্লিষ্ট মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এ ব্যাপারে সরকারকে আন্তরিক ও জনদরদী হতে হবে। কেবল প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করে দায়িত্ব শেষ করলে হবে না, প্যাকেজের সুবিধা যাতে প্রকৃত অর্থে অসুবিধায় থাকা মানুষ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে হয়, তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সরকারি সেফটিনেটের বাইরে থাকা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার। তিনি এ বিষয়ে তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যাদেরকে আমরা সামাজিক নিরাপত্তায় সাহায্য দিচ্ছি তার বাইরে যারা আছে, যারা হাত পাততে পারবেন না তাদের তালিকা করে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে না, কাজ করে খেতে পারছে না, অনেকের জীবন-জীবিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম, যারা দিন এনে দিন খায়- ছোটখাটো ব্যবসা করে যারা খেতো তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের মানুষকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে এখন। অর্থাৎ সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার বাইরে যারা উপার্জন করে খেত কিন্তু সেই উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে তারা যেন ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্ট না করে। প্রধানমন্ত্রীর জনদরদী এ উপলব্ধি অত্যন্ত সাধুবাদযোগ্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রণোদনা


আরও
আরও পড়ুন