২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
সারা পৃথিবী করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারিতে আক্তান্ত যা সার্স কোভ২ ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বের বেশীর ভাগ দেশের মানুষ এ ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মোট মৃত মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে হাজারে হাজার।
বাংলাদেশেও দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে নিশ্চিত করছে সরকার, যাদের মধ্যে প্রথম দফায় আক্রান্ত কয়েকজন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন; হাসপাতালে ভতির সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন।
করোনা ভাইরাসের শিকার যে কোন মানুষই হতে পারেন; তবে ডায়াবেটিসের মত দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা লোকদের এ ঝুঁকি অনেক গুন বেশি। হার্ট ফেইলোর, কিডনি ফেইলোর, হাঁপানি ইত্যাদিতে যারা ভুগছেন তারাও অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে চলছেন।
ডায়াবেটিসের রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, রোগ হলে তার সাথে লড়াই করার সক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে একই সাথে বসবাস করা অন্যান্য মানুষের তুলনায় ডায়াবেটিস থাকলে আপনি চট করেই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন। যাঁদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি তারা করোনা ভাইরেসের সহজ শিকার। ভাবতে চেষ্টা করা হচ্ছিল শিশু-কিশোররা মনে হয় করোনায় খুব একটা আক্রান্ত হবে না; কিন্তু তাও আর বলা যাচ্ছে না। অন্য দেশে তো বটেই, বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু।
ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণের মাত্রা (এইচবিএওয়ানসি) সঠিকভাবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বোঝাতে সহায়তা করতে পারে। অর্থাৎ যার ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ যত খারাপ (এইচবিএওয়ানসি যত বেশি) তার রোগে ভোগার সম্ভাবনা তত বেশি। বাংলাদেশের প্রায় ৮০% ডায়াবেটিসের রোগীর রক্তের গ্লুকোজ লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি (তাদের সবাই ভাইরাস সংক্রমনের বাড়তি ঝুঁকিতে)। আবার যারা অনেক বছর ধরে ডায়াবেটিস নিয়েই বেঁচে আছেন, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও পর্যুদস্ত। সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছেন যে সকল ডায়াবেটিসের রোগীর কিডনির কর্মক্ষমতা হ্রাস পেয়ছে, একই সাথে হৃদযন্ত্রও যথেষ্ট রক্ত পরিসঞ্চালনে ব্যর্থ এবং রক্তের গ্লুকোজ বেশি।
বরবরের মতই, সকল ডায়াবেটিসের রোগীর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকে নিয়ে আসা অতীব জরুরী এবং যারা মুখে সেবনের ওষুধ নির্ভরতা কমিয়ে ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করবেন, তারা বেশি সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।
করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯) মহামারিতে ডায়াবেটিস রোগীর আশু করনীয়ঃ
করোনা ভাইরাস সংক্রমনের সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলেও সরকার নির্দেশিত কেন্দ্রগুলোতে রোগ শনাক্তকরণ ও পরবর্তী সেবার জন্যে দ্রুত চলে যাওয়া।
কালক্ষেপন না করে অতি সত্তর রক্তের গ্লুকোজ লক্ষ্য মাত্রায় নিয়ে (এইচবিএওয়ানসি <৭%) যাবার উদ্যোগ নেয়া।
যদি সিম্পটম হয়ে থাকে (জ্বর, কাসি) তাহলে নিজেকে নিজে আলাদা করাই শ্রেয়। শরীর বেশি খারাপ না হলে হাসপাতালে না যাওয়াই ভাল। ৮০% মানুষ কোন হাসপাতাল ভর্তি ছাড়াই ভাল হয়ে যাবে। ১৪ দিন নিজেকে আইসোলেট করে রাখবেন।
বয়স্ক লোকজনের মধ্যে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। বয়স্ক কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভর্তি করার কারন আছে, কারন তাদের অনেকেরই আই-সি-ইউ সাপোর্ট লাগবে
এবারের সবচেয়ে সমস্যা হল লক্ষণহীন রোগীরা। জার্মানিতে অনেকে আছে যাদের পাওয়া গেছে কোন কাসি নেই, কোন জ্বর নেই, কিন্তু পরিক্ষা করে দেখা যায় তাদের করোনা ভাইরাসের সংক্রমন হয়েছে। ইতালিতেও এমন অনেক পাওয়া গিয়েছে, এমনকি যুক্তরাজ্যেও। এ নিয়ে সবচেয়ে বড় ভয় এটাই যে একদম নর্মাল, ফিট মানুষজন করোনা ভাইরাস নিয়ে ঘুরছে। এখন বলা যাচ্ছেনা তাদের কাছ থেকে অন্যদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু।
সাবান দিয়ে হাত ধোন, বেশি বেশি ধোন। অতিরিক্ত করতে চাইলে বরং হেক্সাসল টাইপের কিছু ব্যবহার করুন। ঘরের বাইরে স্যানিটাইজার ব্যবহার করলেও মুখে হাত দিবেন না যতক্ষন না কোথাও গিয়ে হাত ধুতে পারবেন। স্যানিটাইজার ভাল হলেও, মার্কেটের অধিকাংশ স্যানিটাইজারে পর্যাপ্ত পরিমান এলকোহল নাই (যেটা পান করে ওই এলকোহল না)।
বিদেশ ফেরত বন্ধু বা আত্মীয়কে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিন করে দিন। কোন কাশি বা জ্বর হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনে আরও এক সপ্তাহ আইসোলেট করবেন।
বড় সমাবেশ/ লোক সমাগম থেকে দুরে থাকাই ভাল। কোন কনফারেন্স বা পার্টিতে যাবেন না।
সব কিছু এত তাড়াতাড়ি হচ্ছে যে আমরা সব এখনো জানি না। নতুন তথ্য অনেক আসছে। বিশেষজ্ঞদের যাচাই করতে দিন।
অন্য অনেকে কি করছে না করছে সেই সমালোচনা আলোচনায় না গিয়ে সমাজে নিজের অংশটুকু নিজে পরিপালন করুন।
ডাঃ শাহজাদা সেলিম
সহযোগী অধ্যাপক
এন্ডক্রাইনলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়য়, ঢাকা
Email: [email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।