Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবৈধ মাটি কাটা চলছে

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় দিন দিন কৃষি জমির উর্বর মাটি কমে যাচ্ছে। কোথাও কৃষি জমি কেটে বানানো হচ্ছে পুকুর ও মৎস্য প্রকল্প। এছাড়া এসব কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটাতে। আবার অনেকে কৃষি জমির মাটি দিয়ে গড়েছেন বসতবাড়িও। এদিকে, একের পর এক কৃষি জমি থেকে এভাবে মাটি কেটে নেয়ায় জমি হারাচ্ছে তার উর্বরতা। আবার অন্যদিকে কমে যাচ্ছে কৃষি জমির পরিমাণও।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন ফসলের মাঠে অন্তত ১০০টি স্থানে অবাধে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। এসব মাটি বিভিন্ন ট্রাকের মাধ্যমে পরিবহন করে নেয়া হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। তবে সবচেয়ে বেশি মাটি যাচ্ছে উপজেলার ইটভাটাগুলোতে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, এভাবে মাটি কাটার বিষয় গুলো একের পর এক স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও রহস্যজনক কারণে এসব মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। তাই বন্ধ হচ্ছে না কৃষি জমির উর্বর মাটি কাটা।
সরেজমিনে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের পল্লী বিদ্যুতের সাব-স্টেশন সংলগ্ন বর্ধনবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় খলিলুর রহমানের ছেলে আব্দুল মান্নান তার ফসলি জমিতে ভেকু দিয়ে মাটি কাটাচ্ছেন। এসব মাটি কেটে কয়েকটি ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে তা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন। তিনি মাটি বিক্রি করতে করতে তার ফসলি জমিটিকে পুকুরে রূপান্তরিত করে ফেলেছেন।
তবে মাটি উত্তোলনকারী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমি নিজস্ব জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছি, এখানে পুকুর করব। আর এসব মাটি বসত বাড়িতে নেয়া হচ্ছে। আমার জমিতে আমি মাটি কাটছি এখানে কার কী?’ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গীত্তাশাল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ এসহাক মিয়া জানান, এতগুলো ভেকু দিয়ে কৃষি জমির মাটি কাটায় অন্যান্য জমিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে কৃষিজমি। এসব মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এতই শক্তিশালী যে স্থানীয় প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এভাবে কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার বা কৃষি জমিতে পুকুর করার কোনো নিয়ম নেই। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। কোনো ব্যক্তি নিজের জমিতেও এই কাজ করতে পারবেন না। আমরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব অভিযোগ পাচ্ছি। আর যেখানেই এই ধরনের অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’ পর্যায়ক্রমে এসব অবৈধ মাটি ব্যবসায়ী এবং মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা দৈনিক ইনকিলাববে বলেন, এরই মধ্যে আমরা মোবাইল কোটের মাধ্যমে ১৫ জনের অধিক ব্যাক্তিকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। থানার অফিসার ইনর্চাজকে বলা হয়েছে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ