মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাজ্যসভায় তুমুল বিতর্কের মধ্যে সাংসদ হিসাবে শপথ নিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপিত রঞ্জন গগৈ। তাঁকে মনোনীত করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ দিন রঞ্জন গগৈয়ের শপথের সময় ‘সেম সেম’ স্লোগানে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী সাংসদরা। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক তৈরি হয়।
অবসরপ্রাপ্ত সিজেআই রঞ্জন গগৈ বলেছিলেন, শপথগ্রহণের পরই জানাবেন কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গগৈয়ের কথায়, দেশের বিচার ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি সংসদে তুলে ধরার সুযোগ মিলবে আমার উপস্থিতিতে। পারস্পারিক সহাবস্থানে কাজ করবে আইন এবং বিচার স্তম্ভ।
রাজ্যসভায় গগৈয়ের মনোনয়নকে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কংগ্রেস। দলের নেতা তথা আইনজীবী অভিষেক সিঙ্ভি জানান, সংবিধানে বিচার ব্যবস্থা এবং আইন ব্যবস্থা স্বতন্ত্র ক্ষমতা রয়েছে। বিচার ব্যবস্থার উপর বিশ্বাস এবং আস্থা জড়িয়ে। কিন্তু দুই স্তম্ভ একই বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। গগৈয়ের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফও।
২০১৮ সালে জানুয়ারিতে তত্কালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে নজিরবিহীনভাবে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ
অবসর নেওয়ার পর রঞ্জন গগৈয়ের রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার বিষয়টিকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক আঘাত বলে অভিহিত করছেন সমালোচকেরা।রঞ্জন গগৈ সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় প্রধান বিচারপতি, যিনি অবসরের পর রাজ্যসভার সদস্য হলেন। তাঁর আগে রঙ্গনাথ মিশ্র একই কাজ করেন। ১৯৯১ সালে অবসর নেওয়ার সাত বছর পর ১৯৯৮ সালে কংগ্রেসের হয়ে তিনি রাজ্যসভায় আসেন।
রঞ্জন গগৈ অবসর নেওয়ার আট মাস আগে বলেছিলেন, অবসর নেওয়ার পর সরকারি পদে নিয়োগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতার গায়ে ক্ষত। অথচ অবসর নেওয়ার মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য হিসেবে রাজ্যসভায় পা রেখে নিজের কথাই বরখেলাপ করলেন। রঞ্জন গগৈয়ের নিয়োগকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ওপর মারাত্মক, অভূতপূর্ব ও ক্ষমাহীন আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছে কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্টের সাবেক কয়েকজন বিচারপতিও এই নিয়োগের কড়া সমালোচনা করেছেন।
নানা কারণে রঞ্জন গগৈ আলোচিত-সমালোচিত। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে যে চারজন বিচারপতি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন, রঞ্জন গগৈ এর অন্যতম। পরে রঞ্জন গগৈ প্রধান বিচারপতি হন।
২০১৯ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের অফিসের এক নারী কর্মী তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির গুরুতর অভিযোগ আনেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ অভিযোগ তদন্ত করেন। বেকসুর খালাস হন তিনি।
অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে টানা শুনানির নির্দেশ রঞ্জন গগৈয়ের দেওয়া। বহু বছরের বিবাদের মীমাংসা তিনিই করেছিলেন মন্দিরের পক্ষে রায় দিয়ে।
অসম চুক্তি অনুযায়ী এনআরসি তৈরির নির্দেশ রঞ্জন গগৈয়ের দেওয়া। তাঁরই তত্ত্বাবধানে তাঁর মেয়াদ পূর্তির আগে সেই নির্দেশ কার্যকর করে গেছেন তিনি। রাফাল নিয়ে তাঁর আমলে আনা মামলা তিনিই খারিজ করেছেন।
রঞ্জন গগৈয়ের আমলে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ হয়। তাঁর আমলেই দাখিল হয় কাশ্মীর-সম্পর্কিত একের পর এক মামলা। এসব মামলার কোনো সুরাহা করেননি তিনি।
প্রধান বিচারপতি হিসেবে রঞ্জন গগৈয়ের নানা পদক্ষেপ বিজেপিকে রাজনৈতিক সুবিধা দিয়েছে। এ জন্য বিজেপি তাঁকে রাজ্যসভায় এনে পুরস্কৃত করেছে বলে সমালোচনা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।