Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিএএ, দিল্লির দাঙ্গা নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার উদ্বেগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও দিল্লির সা¤প্রতিক দাঙ্গার প্রতিবাদে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় দফায় দফায় বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে আরো টানাপোড়ন তৈরি হয়েছে। দিল্লির দাঙ্গায় ৫৩ জন নিহত হওয়ায় জাকার্তা সরকার আবারো ভারতের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে ভারত সরকার জাকার্তায় ভারতীয় দ‚তাবাস ও মেডানে ভারতীয় কনস্যুলেটের নিরাপত্তা দাবি করেছে। জাকার্তার উইদোদো সরকার যে বার্তাটি দিয়েছে তার দুটি দিক রয়েছে: তারা জাকার্তায় ভারতীয় দ‚তাবাস ও মেডানের ভারতীয় কনস্যুলেটের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়ার জনগণের মধ্যে সৃষ্ট নেতিবাচক ধারণা দ‚র করতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভারতের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় জনসংখ্যার ৮০% মুসলমান হলেও এটি কোন ঘোষিত ইসলামিক রাষ্ট্র নয়। দেশটিতে বৌদ্ধ ও হিন্দুদেরও বাস রয়েছে। একটি স‚ত্র বলে, আমাদের সুশীল সমাজ ও সংস্থার কাছ থেকে একটি বার্তা এসেছে এবং সেগুলো ভারত সরকারের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে। জনগণ উদ্বিগ্ন। তবে ইন্দোনেশিয়ার সরকার আস্থাশীল যে আমরা [ইন্দোনেশিয়া ও ভারত] একই সঙ্গে বহুজাতিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। স‚ত্র আরো জানায় যে, ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়া হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু ভারতের ঘটনাবলী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সাধারণ মানুষের উদ্বেগ তাদের সরকারের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ১ মার্চ ভারতের রাষ্ট্রদ‚ত প্রদীপ কুমার রাওয়াতকে তলব করে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। অন্যদিকে ভারতে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদ‚ত ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে এসব ইস্যু উত্থাপন এবং ভারতীয় মিশনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ইন্দোনেশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মারুফ আমিনের সঙ্গে রাওয়াতের সাক্ষাতের কথা রয়েছে। আমিন একজন ইসলামিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব।
১৩ মার্চ জাকার্তায় আরেকটি বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এর আয়োজন করে প্রধানত ইসলামিক সংস্থা ও সুশীল সমাজের এনজিওগুলো। তারা সিএএ ও দিল্লির দাঙ্গার প্রতিবাদে ভারতীয় দ‚তাবাস লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। গত তিন সপ্তাহ ধরে প্রতি শুক্রবার সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে। দ‚তাবাসের নিরাপত্তায় নজিরবিহীনভাবে ১,১০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতের জন্য সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ান উলেমা কাউন্সিলের (এমইইউ) বৈঠক। এমইইউ জাতিসংঘের প্রতি একটি তথ্য অনুসন্ধানী মিশন পাঠিয়ে ভারতের সিএএ, দাঙ্গা ও কাশ্মিরে দিল্লি সরকারের কার্যক্রম খতিয়ে দেখার আহŸান জানিয়েছে। বৈঠক থেকে ‘ভারতীয় মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দু চরমপন্থীদের’ কর্মকাÐের নিন্দা জানানো হয়। এমনকি ইন্দোনেশিয়া সরকারের প্রতি ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহŸান জানানো হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার এসব ঘটনাবলী নিয়ে ভারত সরকার এখনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। গতবছর লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনের সামনে বিক্ষোভ হলে সেদেশের সরকারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারত। সিএএ ও জম্মু-কাশ্মির পদক্ষেপের সমালোচনা করায় ভারত প্রকাশ্যে মালয়েশিয়া ও তুরস্কের নিন্দা করে। এগুলোকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে ভারত দাবি করে। জাকার্তা ও দিল্লির মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়ন তৈরি হওয়া নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয় যে দিল্লি সহিংসতায় অর্থ জুগিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার একটি ইসলামিক এনজিও – আকশি সেপাট তাঙ্গাপ (এসিটি)। এর সঙ্গে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়েবার যোগ রয়েছে। দিল্লির ঘটনায় বিদেশের হাত আছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করার পর অন্তত দুটি টিভি চ্যানেল ও একটি জাতীয় দৈনিক এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে শুক্রবার এক বিবৃতিতে এসিটির সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্য সুহেলমাইদি সাইয়ুকুর ভারতীয় মিডিয়ার দাবি নাকচ করেন। তিনি বলেন, এই সংগঠন শুধু ওইসব লোকজন যারা দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা তাদের সন্তান হারিয়েছে ও যারা তাদের আয়ের উৎস হারিয়েছে তাদেরকে মানবিক সহায়তা দিচ্ছে। দি হিন্দু,এসএএম।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ