Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিল্লি দাঙ্গার খবর প্রকাশ করায় বন্ধ করে দেয়া ২টি টিভি চ্যানেল খুলে দেয়ার আহ্বান সিপিজের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ৫:৩৩ পিএম

দিল্লি দাঙ্গার খবর প্রকাশ করার কারণে অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া দু’টি সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল অবিলম্বে খুলে দিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। একই সঙ্গে স্পর্শকাতর বিষয়ে খেয়ালখুশিমতো খবর সেন্সর করা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, দাঙ্গার খবর প্রকাশ করার কারণে মালয়ালাম ভাষার নিউজ চ্যানেল এশিয়া নেটনিউজ এবং মিডিয়াওয়ান টিভির ওপর ৪৮ ঘন্টার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার। ৬ই মার্চ এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিপিজে। এতে বলা হয়, এদিন ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দু’টি নির্দেশ দেয়া হয়েছে ওই দু’টি চ্যানেলকে। দিল্লি দাঙ্গার খবর প্রচারের কারণে শাস্তি হিসেবে তাদের যে কোন রকম প্রোগ্রাম পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা সম্প্রচার বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয় এতে। মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, চ্যানেল দু’টি দিল্লির দাঙ্গা নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করেছে এবং তারা সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে। সরকারের নির্দেশ এবং চ্যানেল দু’টির খবর পর্যালোচনা করেছে সিপিজে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারের ওই নিষেধাজ্ঞা স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কার্যকর হওয়ার কথা। নির্দেশে মন্ত্রণালয় বলেছে, এশিয়ানেট নিউজ এবং মিডিয়াওয়ান টিভি দাঙ্গার যে রিপোর্ট প্রচার করছে, তাতে সহিংসতা উস্কে উঠতে পারে এবং এতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে।
সিপিজে’র এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক আলিয়া ইফতিখার বলেছেন, সংবাদ বিষয়ক আউটলেট ও সাংবাদিকদের ওপর দাঙ্গা নিয়ে খবর পরিবেশনের ওপর সেন্সরশিপ আরোপের পরিবর্তে, ওই শহরে সহিংসতার আসল কারণ অনুসন্ধান করা বা সেদিকে দৃষ্টি দেয়া উচিত ভারত সরকার ও দিল্লি পুলিশের। দাঙ্গা একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। কোনো প্রতিশোধ নেয়ার আতঙ্ক ছাড়াই এক্ষেত্রে মিডিয়াকে তাদের দায়িত্ব পালনে অনুমতি দেয়া উচিত। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে এশিয়ানেট নিউজ এবং মিডিয়াওয়ান টিভির সম্প্রচারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে তাদেরকে সম্প্রচার অব্যাহত রাখার অনুমতি দেয়া।
তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের নির্দেশে মিডিয়াওয়ান টিভির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছে, তারা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ওপর জোর দিয়েছে রিপোর্ট করেছে। সহিংসতায় তারা ভারতীয় জনতা পার্টির মূল সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ভূমিকা নিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে প্রশ্ন তুলেছে। নির্দেশে আরো বলা হয়েছে, দিল্লি পুলিশ সহিংসতায় হস্তক্ষেপ করতে এবং দাঙ্গা থামাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অযথা অভিযোগ উত্থাপন করেছে এই নেটওয়ার্ক। অন্যদিকে এশিয়ানেট নিউজের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছে। নেটওয়ার্কটির একজন সাংবাদিক পিআর সুনীলের রিপোর্টকে হাইলাইট করেছে তারা। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, যখন দিল্লিতে মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছিল দাঙ্গাকারীরা তখন তা শুধু দেখেছে দিল্লি পুলিশ। তারা পথচারীকে শুধু তাদের ধর্ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তারা আরো রিপোর্ট করেছে যে, দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কোনো ভূমিকা নেয়নি বলে অযথাযথ অভিযোগ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
তবে সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আইনী চ্যালেঞ্জ জানানোর কথা দু’টি চ্যানেলেরই। মিডিয়াওয়ান টিভির প্রধান সম্পাদক সিএল থমাস বলেছেন, সরকার তার নির্দেশে যে বিবৃতি দিয়েছে তা বৈধভাবে আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করবে তার প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে এশিয়ানেট নিউজের প্রধান সম্পাদক এমজি রাধাকৃষ্ণণ বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার জবাবে কি করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তার প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ই-মেইল করে সিপিজে। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। সিপিজে তার গবেষণায় বলেছে, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দাঙ্গার রিপোর্ট করতে গিয়ে কমপক্ষে এক ডজন সাংবাদিক হয়রানি ও হামলার শিকার হয়েছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ