মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চলতি বছরটি সউদী আরবের জন্য প্রাচুর্যের বছর হওয়ার কথা ছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যের বিশাল সব প্রকল্প, বিলাসবহুল তাঁবু বিনোদন এবং জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন জানান দিচ্ছিল যে, অতীতের সিলগালা করা দেশটি বিশ্বের জন্য তার দরজা খুলে দিচ্ছে। আমেজটি এতটাই উচ্চতায় গিয়েছিল যে, সউদী আরবের হবু বাদশাহ ও ভারপ্রাপ্ত শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান উচ্ছ¡সিত হয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ‘এই বছরের মধ্যেই আমরা তেল ছাড়া বাঁচতে সক্ষম হব।’
তবে, তেলযুদ্ধ এবং করোনাভাইরাস সউদী যুবরাজের সিংহাসন দখলের বিপজ্জনক খেলাটিকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। তিনি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার সাথে তেলের দর নিয়ে পুরোদস্তুর যুদ্ধে নেমে পড়েছেন যা উত্তরাধিকারের লড়াই হিসাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। সউদী সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকান্ড, ইয়েমেনের যুদ্ধ, মানবাধিকার নিয়ে কেলেঙ্কারীতে জড়িয়ে পড়া সত্তে¡ও মোহাম্মদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবিচল সমর্থন নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। তবে, বর্তমান পরিস্থিতি ৩৪ বছর বয়সী আবেগপ্রবণ বেপরোয়া যুবরাজের বিশাল সব পরিকল্পনাকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।
গত সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দর ৬ শতাংশ হ্রাস পাওয়ায় আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের মধ্য প্রাচ্যের বিশেষজ্ঞ ক্যারেন ইয়ং বলেছেন, এর ফলে চলতি বছরে সউদী আরবের মূল্যস্ফীতি দ্বিগুণ হবে। পাশাপাশি, বেসরকারি খাতের তেলবিহীন নতুন উদ্যোগগুলো সরকারিভাবে বিশাল ব্যয় সঙ্কোচনের মুখোমুখি হবে।
করোনভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সউদী আরবকে একটি নতুন ভ্রমণ গন্তব্য হিসাবে তুলে ধরার সমস্ত কার্যক্রম এবং উৎসবগুলিতে বাদ সেধেছে। ২০১৯ সালের হজযাত্রীদের ওপর সউদী সরকারের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে জানা গেছে, যদি এই সঙ্কট অব্যাহত থাকে, তাহলে দেশটি কেবল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনই নয়, বার্ষিক প্রায় ১ কোটি ওমরাযাত্রী এবং অন্যান্য ধর্মীয় পর্যটকও হারাবে।
করোনাভাইরাস ইতিমধ্যে মধ্যপ্রাচ্য এবং বাকি বিশ্বের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দিয়েছে। এরফলে সৃষ্ট আতঙ্ক ভয়ঙ্কর যুদ্ধের ভয়ের চেয়েও অনেক বেশি। কারণ প্রত্যেকেই জানে যে, তারা সাক্ষাৎ মৃত্যুর প্রথম সারিতে রয়েছে। তবে, মহামারীটি সউদী সিংহাসন দখলের লড়াই ছাপিয়ে গেলেও দ›দ্ব ক্রমেই বাড়ছে।
বাদশাহ সালমানের স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় তিনি বেঁচে থাকাকালে মোহাম্মদ নিজের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে সচেষ্ট হতে পারেন। কাওয়াকবিবি ফাউন্ডেশনের প্রধান এবং দেশটির চিহ্নিত অনলাইন আন্দোলনকারী আইয়াদ বাগদাদি বলেন, ‘যুবরাজের এখনই পদক্ষেপ নেয়া দরকার যাতে নভেম্বরের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন এবং মার্কিন নির্বাচনের আগে সিংহাসনে আসীন হওয়া যায়।’ নইলে মার্কিন নির্বাচনে তার একনিষ্ঠ সমর্থক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে বিজয়ী না হলে যুবরাজের সমস্ত হিসাব-নিকাশ বদলে যেতে পারে।
তবে এ ধরনের পদক্ষেপ সউদী আরবের শাসন ক্ষমতার ইতিহাসে বিশাল একটি পরিবর্তন ঘটাবে। ১৯৫৩ সালের পর থেকে দেশটির প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ ইবনে সউদের পুত্রদের মধ্যে উত্তরাধিকার অনুভ‚মিকভাবে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে যুবরাজের সিংহাসন দখলের কৌশল হিসাবে শাসনতন্ত্রের ক্রমবিন্যাসে রদবদল অনেকেই নেতিবাচক মেরুকরণ হিসেবেই দেখছেন। সূত্র : নিউজ রিপাবলিক, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।