মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বৈশ্বিক একটি নজরদারী প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারকে মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেতে তালিকাভুক্ত করেছে। ফলে দেশের অস্বচ্ছ আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের জন্য স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু কির সরকারের উপর বাড়তি আন্তর্জাতিক চাপ নতুন করে বাড়লো। প্যারিস-ভিত্তিক ফিনান্সিয়াল অ্যাকশান টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) গত মাসে এক বিবৃতিতে বলেছে যে, নতুন আইন প্রণয়ন ও শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে মিয়ানমার অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে, এফএটিএফ এটাও বলেছে যে, মিয়ানমারকে এখনও ‘বিভিন্ন প্রধান খাতগুলোতে মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁকি সম্পর্কে’ উপলব্ধি বাড়াতে হবে এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন মজবুত করতে হবে।
মিয়ানমারকে ‘গ্রে লিস্টে’ অন্তর্ভুক্ত করায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন ও ব্যাংক হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সু কির সরকারকে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হবে, যেখানে এই মুহ‚র্তে সরকার আরও বেশি বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে। মিয়ানমারের তালিকাভুক্তি ও অন্যান্য ঝুঁকির কারণে বিদেশী ব্যাংকগুলো এই দেশে লেনদেনের ব্যাপারে আগ্রহ হারাবে বলে নির্বাহী ও বিনিয়োগকারীরা বলেছেন। ২০১৮ সালে, নজরদারি প্রতিষ্ঠানটি এক রিপোর্টে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল যে, মিয়ানমারে ‘চরম মাত্রার প্রক্রিয়াজনিত অপরাধ’ ঘটছে যেটার কারণে দেশটি বড় ধর।এর মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে’।
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও তথাকথিত অ-আর্থিক ব্যবসায়ী ও পেশাদার প্রতিষ্ঠানগুলো (ডিএনএফবিপি) – যেমন ক্যাসিনো, রিয়েল স্টেট এজেন্ড এবং রত্ম ডিলার – এটা মানি লন্ডারিং ঝুঁকির বিষয়টি যথাযথভাবে বোঝেনি। এতে আরও বলা হয়েছে যে, মিয়ানমারের খুব কম সংখ্যক ব্যাংকই ব্যবসায়ের ব্যাপারে ঝুঁকি-ভিত্তিক কৌশল গ্রহণ করেছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিএনএফবিপি’র উপর নজরদারির ব্যাপারে তারা উদ্বেগ জানিয়েছে।
এটা সত্য যে, বিভিন্ন খাতে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যাংক পরিচালনা ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন ও কোম্পানির মালিকানাসহ কর্পোরেট তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পুনর্গঠন করেছে সরকার।
সা¤প্রতিক ধুসর তালিকাভুক্তি প্রসঙ্গে সু কির বিনিয়োগ মন্ত্রী থুয়াং তুন এফএটিএফ প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাতের পর টুইটারে লিখেছেন যে, তারা ‘মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সদিচ্ছার স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে শক্তিশালি কার্যকর পদক্ষেপের স্বীকৃতি দিয়েছে”।
মন্ত্রী লিখেছেন, এফএটিএফ স্বীকার করেছে যে, মিয়ানমার নিজ থেকেই নজরদারি প্রতিষ্ঠানটির এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং- এর কাছ থেকে সুপারিশ নিয়ে সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছে, যাতে টেকনিক্যাল কমপ্লায়েন্স ও কার্যকারিতা বাড়ানো যায়। এরপরও, মিয়ানমারের ধুসর তালিকাভুক্তি থেকে বোঝা গেছে যে, সু কি প্রশাসনের সুশাসন ও পুনর্গঠনের মাত্রা এখনও দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারী, নির্বাহী এবং নাগরিক সমাজের গ্রুপগুলো এ বিষয়গুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা করে আসছে। ব্রিটেন-ভিত্তিক পরিবেশবাদী নজরদারী সংস্থা গ্লোবাল উইটনেসের সিনিয়র ক্যাম্পেইনার হান্না হিন্ডস্টর্ম বলেছেন, “সা¤প্রতিক মাসগুলোতে মিয়ানমার সরকার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো খুবই সামান্য”।
তিনি বলেন, “মিয়ানমার এটা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে যে, দুর্নীতি মোকাবেলার ক্ষেত্রে তারা সিরিয়াস, বহ বছরের সামরিক শাসনের সময় অর্থনীতিতে এ সব অবৈধ কর্মকান্ড প্রবেশ করেছে”। মিয়ানমারের বহু দশকের জান্তা শাসনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “পুঁজিপতি-সামরিক বাহিনীর সম্পর্কটা নষ্ট করে দেয়াটা এই প্রক্রিয়ার একটা অংশ”। সূত্র : এশিয়া টাইমস
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।