মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
‘দাঙ্গাবাজ মুর্দাবাদ, অমিত শাহ মুর্দাবাদ’— শ্লোগানে কেঁপে উঠল ভারতের সংসদ। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষেই বিরোধীদের সম্মিলিত বিক্ষোভে নাজেহাল হতে হল সরকার পক্ষকে। উত্তেজনা গড়াল দুই পক্ষের হাতাহাতি পর্যন্ত। তুমুল শোরগোলের জেরে অধিবশন স্থগিত করতে বাধ্য হলেন স্পিকার।
ভারতের সংসদে হইচই বা শোরগোল নতুন কিছু নয়। কিন্তু, সংসদ কক্ষে সরকার ও বিরোধী পক্ষের সাংসদদের ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতির ঘটনা নজিরবিহীন। ঘটনার পর উক্ষয় পক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে সংসেদ মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা। যাকে নিয়ে এত কাণ্ড, সেই অমিত শাহ অবশ্য লোকসভায় আসেননি।
অধিবেশন শুরু হওয়া মাত্র লোকসভায় ওয়েলে নেমে শ্লোগান দিচ্ছিলেন বিরোধী দলগুলির সাংসদরা। প্রথমে একবার সভা মুলতুবি করেন স্পিকার। পরে সভার কাজ আবার শুরু হতেই আবার শুরু। এরই মধ্যে শোরগোল উপেক্ষা করে জরুরি কিছু সরকারি নথি পেশ করা হয় সংসদে। তারপর ‘ডাইরেক্ট ট্যাক্স- বিবাদ সে বিশ্বাস ২০২০’ নামক প্রস্তাবিত আইন নিয়ে ভাষণ দিতে ওঠেন ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ সঞ্জয় জয়সওয়াল। বিল নিয়ে আলোচনা হলেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীদের নাম নিয়ে উস্কানিমূলক ভাষণ দেয়ার অভিযোগ তুলছিলেন। টেনে আনছিলেন সোনিয়ার জামাই রবার্ট ভদ্র(নাম না করে)-র প্রসঙ্গ। তখন বিরোধীদের প্রতিবাদ চলছে।
বক্তব্যের একেবারে শেষ অংশে বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘কংগ্রেসিদের তথাকথিত মা সোনিয়া গান্ধী এসপার নয় ওসপার-এর কথা বলেছেন। তিনি হিংসা ছড়িয়েছেন। ওর মন্তব্যের পর হিংসা ছড়িয়েছে।’ ঠিক এই সময় দেখা যায় কংগ্রেসের গৌরব গগৈ-সহ কয়েকজন সাংসদ ব্যানার ও পোস্টার নিয়ে জয়সওয়ালের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। বিজেপি সাংসদের আশেপাশে তখন জড়ে হয়েছেন আরও কয়েকজন। তারা পোস্টার, ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিজেপির এক সাংসদ রমেশ বিধুরি অতিসক্রিয় হয়ে কংগ্রেস সাংসদদের ধাক্কা দিতে শুরু করেন। ওদিকে, ব্যানার হাতে ওয়েলে দাঁড়িয়ে ছিলেন কংগ্রেসের রামাইয়া হরিদাস। তার হাত থেকে টেনে হিঁচড়ে ব্যানার কেড়ে নিতে দেখা গেল এক বিজেপি সাংসদকে। রমাইয়াও ততোধিক জোরে তা আবার ছিনিয়ে নিলেন। মাঝে এসে পড়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি উভয়কে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। এরপর আরও এক বিজেপি সাংসদ জসকৌর মিনা রমাইয়াকে ধাক্কা দিয়ে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। আবার রুখে দাঁড়ান রমাইয়া। ধাক্কাধাক্কি চোড়ে পড়ে। এতসবের মধ্যেই ভীষণ উত্তেজিত ভঙ্গিতে বিরোদীদের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায় সত্তরোর্ধ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্মিনী চৌবেকে। এর ফাঁকে সভা মুলতুবি করেছেন স্পিকার। কিন্তু, কংগ্রেস ও বিজেপি সাংসদরা পরস্পরের সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়ে পড়েন। পরে রামাইয়া বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তোলেন। লিখিত অভিযোগ জানান স্পিকারকে। তার অভিযোগ, দলিত(অনগ্রসর) মহিলা বলেই এমন করা হয়েছে। পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ মিনা।
সোমবার ছিল বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিন। অনুমান মতোই দিল্লির সহিংসতা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেন বিরোধী কংগ্রেস, তৃণমূল, শিবসেনা, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, আরজেডি, ওয়াইএসআর (কংগ্রেস)-সহ সবকটি রাজনৈতিক দলের সাংসদরা। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলে। বিক্ষোভরত কংগ্রেস সাংসদদের হাতে ছিল ‘শাহ মাস্ট কুইট’ লেখা বড় দুটি ব্যানার। যা নজিরবিহীন। প্রায় সবাই পোস্টার হাতে নিয়েছিলেন। তাতে লেখা, ‘স্টপ হেট স্পিচ’, ‘সেভ আওয়ার কানট্রি’ ইত্যাদি। মুখে শ্লোগান, ‘প্রধানমন্ত্রী জবাব দো, গৃহমন্ত্রী ইস্তফা দ ‘। এই বিক্ষোভের জেরে বার বার মুলতুবি করতে হয়েছে সভার কাজ। সবমিলিয়ে উত্তাল ছিল সংসদের দুই কক্ষ।
অন্যদিকে, অধিবেশন শুরু আগে দিল্লিতে হিংসার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জবাব চেয়ে সংসদ ভবন চত্বরে মহাত্মা গান্ধী মূর্তির পাদদেশে পৃথক ভাবে ধর্ণায় বসেন কংগ্রেস, আপ ও তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূল সাংসদরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে রেখেছিলেন। রাজ্যসভার ভেতরেও মুখে কালো কাপড় বেঁধে রেখেছিলেন তারা। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাহুল গান্ধী, অধীর চৌধুরি, শশী থারুররা অংশ নিয়েছিলেন। সবার দাবি, ‘পদত্যাগ করুন অমিত শাহ।’ সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।