নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) কাপে নিজেদের অভিষেক ম্যাচে আর্জেন্টাইন তারকা হার্নান বার্কোসের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে উড়ন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে বসুন্ধরা ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করে টিসি স্পোর্টসকে। বিজয়ী দলের হয়ে বিশ্ব ফুটবলের বিস্ময় লিওনেল মেসির এক সময়ের সতীর্থ হার্নান বার্কোস হ্যাটট্রিকসহ চারটি ও কোষ্টারিকার বিশ্বকাপ খেলা তারকা ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস একটি গোল করেন। টিসি স্পোর্টসের হয়ে পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোলটি শোধ দেন আলি আশফাক।
এই জয়ের মধ্যদিয়েই আন্তর্জাতিক ম্যাচে রঙিন অভিষেক ঘটল বসুন্ধরার। সেই সঙ্গে দলটির হয়ে হ্যাটট্রিকের মাধ্যমে রাজকীয় অভিষেক হল আর্জেন্টাইন তারকা হার্নান বার্কোসেরও।
এএফসি কাপে নিজেদের অভিষেক ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখার মানসিকতা নিয়েই বুধবার মাঠে নামেন বসুন্ধরার ফুটবলাররা। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় ৪-৩-৩ পদ্ধতিতে খেলা দু’দল। তবে অপেক্ষাকৃত বেশি আক্রমণ চালায় বসুন্ধরাই। যা থেকে গোলের পর গোল আদায় করে নেয় তারা। টিসি স্পোর্টসও পাল্টা আক্রমণে গিয়ে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে। তবে মাত্র একবারই সফল হয় দলটি। ম্যাচের শুরুতে ব্যর্থ হলেও শিগগিরই হতাশা কেটে যায় হার্নান বার্কোসের। শেষ পর্যন্ত চার গোল করে অভিষেকটা রঙিন করে তোলেন তিনি।
১০ মিনিটে প্রথম গোলের সুযোগ নষ্ট করে বসুন্ধরা। এসময় একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে ডান দিক দিয়ে টিসি’র ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নেননি কলিন্দ্রেস। ব্যাক পাস দেন বার্কোসকে। তিনি শট নিলে প্রতিপক্ষ এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল বাইরে যায়। এর আট মিনিট পরেই গোলের দেখা পায় বসুন্ধরা। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বার্কোসের পাসে বিপলু আহমেদের বুলেট গতির শট টিসি স্পোর্টসের গোলরক্ষক সাকিব হানিফ ফিরিয়ে দেন। বল পান কিরগিজ ফরোয়ার্ড দুইশবেকভ বখতিয়ার। বাঁ প্রান্ত দিয়ে তার ডান পায়ের উড়ন্ত ক্রসে লাফিয়ে উঠে চমৎকার হেডে গোল করেন হার্নান বার্কোস (১-০)। উল্লাসে মাতেন গ্যালারিতে থাকা বসুন্ধরার হাজার তিনেক সমর্থক। তবে দু’মিনিট পরেই নীরব হয়ে যান তারা। ২০ মিনিটে নিজেদের বক্সে মালদ্বীপের আলী আশফাককে ফেলে দেন বসুন্ধরার ইয়াসিন। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ইসা ইসমাইল স্পট কিক নিলে প্রথমে তা ফিরিয়ে দেন বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। কিন্তু দৌড়ে গিয়ে ফিরতি শটে গোল করেন ইসমাইল (১-১)। ম্যাচে সমতা আসার পর যেন জ্বলে ওঠে বসুন্ধরা, ঝলসে ওঠেন বার্কোস। ২৬ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে গিয়ে বিপলু আহমেদ একজনকে কাটিয়ে ক্রস করলে বার্কোস হেডে গোল করে দলকে আনন্দে ভাসান (২-১)। এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে বার্কোসের হ্যাটট্রিকের সঙ্গে আরো তিন গোল পায় বিপিএল চ্যাম্পিয়নরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে টিসি স্পোর্টস। ৪৯ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় তারা। ঈসা ইসমাইল ফ্রি কিক নিলে বল পড়ে বক্সের মধ্যে। সেখানে বসুন্ধরার দেলমন্তেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে পড়ে যাবার অভিনয় করেন টিসির ডিফেন্ডার মাহমুদ সাঈদ আবদেল রাহিম। অস্ট্রেলিয়ান রেফারি শন ইভান্স বিভ্রান্ত হয়ে পেনাল্টির বাঁশি দেন। কিন্তু ঈসার নেয়া শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন জিকো। তবে রেফারি জানান শট নেয়ার আগেই জিকো এগিয়ে আসেন। ফলে আবারও শট নেন ঈসা। তার বাঁ দিকে নেয়া শট ফের ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন জিকো! এবার বসুন্ধরার পালা। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে পেনাল্টি পায় তারা। বক্সের মধ্যে কলিন্দ্রেসকে ফেলে দেন আবদেল রাহিম। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দিলে ডান পায়ের গড়ানো শটে গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বার্কোস (৩-১)। ঢাকার মাঠে হ্যাটট্রিক দিয়ে অভিষেক ঘটালেও থামেননি বার্কোস। ম্যাচের শেষ গোলটিও আসে তার পা থেকেই। ৭৫ মিনিটে চতুর্থ গোল পায় বসুন্ধরা। এসময় ডান প্রান্ত থেকে বিশ^নাথ ঘোষের ক্রসে হেডে গোল করেন কলিন্দ্রেস (৪-১)।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে কলিন্দ্রেসের শট টিসির গোলরক্ষক বিপদমুক্ত করার পর বল যায় বার্কোসের পায়ে। দেরী না করে বার্কোস টিসি স্পোর্টসের গোলরক্ষক সাকিব হানিফের মাথায় ওপর দিয়ে বল জালে ফেলেন (৫-১)। আর্জেন্টাইন তারকার এই গোলেই নিশ্চিত হয় বসুন্ধরা কিংসের বিশাল জয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।