Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমরা প্রতিবেদনের অপেক্ষায় : টামবাডু

ইন্টারনেট পরিষেবা সীমিত করে থাকলে মিয়ানমার আদালতের রায় অমান্য করছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মুসলিম সংস্থা ইউএস কাউন্সিল ফর মুসলিম অর্গানাইজেশন গ্যাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবু বকর টামবাডুর সম্মানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। বিশ্বের নেতারা এই বর্বর হামলার কথা শুনেছেন। আফ্রিকার ছোট একটি দেশ গ্যাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী প্রথম যিনি আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন। আবু বকর টামবাডু বলেন, এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা বিষয়ে তিনি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে তিনি সন্তুষ্ট। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার পর, আদালত রায় দিয়েছে যে মিয়ানমারে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করবে ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বিচারমন্ত্রী আবু বকর টামবাডু বলেন,’আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছিলাম এবং অনুরোধ করেছিলাম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদালত যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আদালত সে অনুরোধ মঞ্জুর করেছে। একটি পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। রায় ঘোষণা হওয়ার চার মাস পর মিয়ানমারকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এবং প্রথম প্রতিবেদন জমার পর প্রতি ছয় মাস অন্তর একটি করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এই প্রতিবেদনে বোঝা যাবে মিয়ানমার আদালতের রায় মেনে চলছে কিনা। আমরা এখন এই প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি। স¤প্রতি খবর পাওয়া গেছে মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা রোধ করতে ইন্টারনেট পরিসেবা সীমিত করেছে। এই সম্পর্কে বিচারমন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারনেট পরিসেবা সীমিত করা মানে হচ্ছে যোগাযোগ ব্যাহত করা এবং যেহেতু আমার জানা নেই তারা করে থাকলেও কি কারণে তা করেছে তবে মিয়ানমার যদি এই পদক্ষেপ নিয়ে থাকে তাহলে এটি ঠিক হবেনা। সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে তারা আদালতের রায় অমান্য করছে। রায়ে বলা হয়েছে মিয়ানমার সরকার যেন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং সে জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে’। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার ফিরে পাবার লড়াই অনেক পুরনো। নির্যাতন, নিপীড়নের সহনীয় মাত্রা ছারিয়ে যাওয়ার পর ২০১৭ সালে সাত লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে পালিয়ে যাওয়ার চিত্র পুরো বিশ্ববাসী দেখেছে। স্তম্ভিত হয়েছে, ভাষাহীন হয়েছে। গত নভেম্বর মাসে দায়েরকৃত মামলার শুনানি হয় এ বছরের জানুয়ারি মাসে। ফেব্রুয়ারির শেষে মালদ্বীপ গ্যাম্বিয়ার সঙ্গে যোগ দেয় এবং বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী আমাল ক্লুনিকে আন্তর্জাতিক আদালতে প্রতিনিধিত্ত করার জন্য নিয়োগ করে। অন্যান্য দেশসম‚হের কাছ থেকে কি ধরণের সাহায্য সহযোগিতা আবু বকর টামবাডু পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার দেশসম‚হ অসাধারণ সমর্থন জানিয়েছে। বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা স¤প্রদায়ের সঙ্গে ওআইসি ভুক্ত দেশগুলো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাধ্যমে অনেক ধরণের মানবিক সহায়তা প্রদান করছে।এই সংকট সমাধানের লক্ষ্যে বহু রাজনৈতিক ও ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আশা করছি এই মামলা পুরোপুরি নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত ওআইসি ভুক্ত দেশগুলো আমাদের পাশে থাকবে। জানুয়ারি মাসে রায় ঘোষণা করার পর থেকে এই মামলা সম্পর্কিত কি কি কাজ করেছে গ্যাম্বিয়া জানতে চাইলে আবু বকর টামবাডু বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতের রায় আমরা পেয়েছি, কিন্তু এখানেই এর শেষ নয়। আমাদের এই মামলা প্রমান করতে হবে, প্রমান করতে হবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা চালিয়েছে। এবং তা প্রমান করার অর্থ হচ্ছে অনেক গবেষনা করা, অনেক তথ্য উপাত্ত যোগাড় করা, অনুসন্ধান করা, প্রমাণাদি সংগ্রহ করা এবং আরও অনেক ধরণের প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে।আমরা এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে অক্লান্ত পরিশ্রম করছি। অন্যান্য দেশসম‚হ যারা আমদের সঙ্গে এই প্রচেষ্টায় রয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য আবু বকর টামবাডুকে যুক্তরাষ্ট্রের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ধন্যবাদ জানিয়েছে।তারা সবাই এখন সামনে মিয়ানমারের প্রতিবেদনের অপেক্ষায়। ভয়েস অফ আমেরিকা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ