Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনির্দিষ্ট কালের জন্য নির্ভয়ার ধর্ষক-খুনিদের ফাঁসি স্থগিত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২০, ৯:০০ পিএম

আবারও পিছিয়ে গেল নির্ভয়াকাণ্ডের দোষীদের ফাঁসির দিন। ‘পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত’ মৃত্যুদণ্ডে স্থগিতাদেশ দিয়েছে দিল্লির পাটিওয়ালা কোর্ট। নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতদের মধ্যে তিন জনের সমস্ত আইনি বিকল্পই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল একমাত্র পবন গুপ্ত। যে আজ সোমবার ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছে। তবে এখনও তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি প্রেসিডেন্ট ভবন।

একই আর্জি সোমবার খারিজ করেছে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টও। দিল্লি পাটিয়ালা কোর্টের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোরেই ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল চার দোষীর। কিন্তু, এত আইনি ‘জটিলতা’র মধ্যেই এবার তাও অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল। আর এর জেরেই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।

গত ১৭ জানুয়ারিতে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে ফাঁসির জন্য ১ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছিল আদালত। তবে ৩১ জানুয়ারি সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে দায়রা আদালতই। সব দোষী সমস্ত আইনি বিকল্প ব্যবহারের সুযোগ পাননি বলে এই স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছিল। ২০১২ সালে নির্ভয়াকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত চার দণ্ডিত মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর এবং পবন গুপ্তের মধ্যে পবন বাদে বাকি তিনজনই সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ করে ফেলেছিল। ৫ ফেব্রুয়ারি এক শুনানিতে সব দোষীকেই এক সপ্তাহের মধ্যে আইনি বিকল্পের আবেদন করতে বলেছিল। তবে সে সময় কোনও আবেদন করেনি পবন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পুনর্বিবেচনার আর্জি করে পবন। সেই আর্জি খারিজও করে শীর্ষ আদালত। এরপরই সোমবার প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা জানায় পবন। তার আর্জির পর পরই নিম্ন আদালতে ফাঁসি পিছনোর আর্জি করেন পবনের আইনজীবী। আর পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত এবার স্থগিতাদেশ দিল আদালত।

দিল্লির পাটিওয়ালা কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল ছ'টায় তিহাড় জেলে ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল। আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের আইনি বিকল্প শেষ হওয়ার পরও ১৪ দিন সময় দিতে হয় প্রস্তুতির জন্য। এই সময়ের মধ্যে দোষীদের পরিবারকে আইনি প্রক্রিয়া বুঝিয়ে অন্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করে জেল কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে তা হলে, ফাঁসি পিছিয়ে ২০ মার্চ হতে পারে। আবার আইনজীবীদের একাংশের মতে, যদি প্রাণভিক্ষা প্রেসিডেন্ট খারিজ করেন, তবে সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবার যেতে পারে পবন। যা হলে আরও পিছিয়ে যাবে নির্ভয়ার দোষীদের ফাঁসি।

তবে এই সবের মধ্যেও সোমবার বিকেলে ফাঁসির প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছে জেল কর্তৃপক্ষ। তিহাড় জেলের জল্লাদ পবনকে দিয়ে নকল ফাঁসিও করানো হয়। তবে আপাতত ফাঁসি হচ্ছে না।

একই অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত একাধিক অপরাধীর ফাঁসি একইসঙ্গে দিতে হবে। তবে নানা আইনি ফাঁকফোঁকর খুঁজে বারবার ফাঁসির দিন পিছিয়ে দিচ্ছেন দোষীদের আইনজীবীরা। এর জেরেই দোষীদের পৃথক মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে সম্প্রতি আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। খারিজ হওয়ার পর শীর্ষ আদালতে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনজীবীরা। সেই আবেদনের শুনানিই আগামী ৫ মার্চ হবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর ভানুমতির নেতৃত্বাধী বিচারপতির বেঞ্চ।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে দিল্লির নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরমধ্যে তিহাড় জেলের ভিতরেই আত্মহত্যা করে অভিযুক্ত রাম সিংকে। ঘটনায় অভিযুক্ত এক নাবালক তিন বছর সরকারি হোমে কাটানোর পর বর্তমানে মুক্ত। বাকি ৪ দোষীর আগামীকাল স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় ফাঁসি হওয়ার কথা। সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ