Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা আতঙ্ক : ওমরা ও মসজিদে নববীতে ভ্রমণ স্থগিত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৭ পিএম

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে সউদী আরবে ওমরাহ যাত্রী ও মদিনার মসজিদে নববী ভ্রমণকারীদের প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে সৌদি আরব। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সৌদি আরবে যারা ওমরাহ পালন করতে চাচ্ছেন বা মদিনায় মসজিদে নববীতে যেতে চাচ্ছেন তাদের প্রবেশাধিকার অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া যেসব দেশে করোনা ভাইরাস বিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে, ওইসব দেশের পর্যটকদের জন্য ভিসা স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়া জাতীয় আইডি কার্ড ব্যবহার করে সৌদি আরব থেকে জিসিসি দেশগুলোতে যাতায়াতও স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানানো হয় এতে। প্রতি বছর ওমরাহ করতে সৌদি আরব ভ্রমণে যান প্রায় ৭০ লাখ লোক। তাদের বেশির ভাগই জেদ্দা ও মদিনায় অবতরণ করেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর তিন মাসের মধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯ নামের ভাইরাসটি। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে ২৮শ’র বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাসটি। এতে আক্রান্তের সংখ্যাও ৮০ হাজারের বেশি।
ইতোমধ্যে চল্লিশটিরও বেশি দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর চীনের পর এ ভাইরাসটি সবচেয়ে বেশি ব্যক্তির প্রাণ কেড়েছে সৌদি আরবেরই প্রতিবেশী ইরানে।

এদিকে সউদী সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা ছাড়া বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এ সিদ্ধান্ত বলবত থাকবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ, সউদী আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ ও হাব সভাপতি এম. শাহাদাত হোসাইন তসলিম বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সউদী সরকারের এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাংলাদেশের এজেন্সি ও ওমরা যাত্রীরা। ভিসা ফি, হোটেল ও বিমান ভাড়া বাবদ এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে হাব। তাদের মতে, ওমরার জন্য ভিসা ফির পুরোটাই চলে যায় সউদী সরকারের তহবিলে, এ অর্থ ফেরত আনার কোনো সুযোগ নেই। হোটেল ভাড়াও ফেরত পাওয়া যাবে না। বিমান ভাড়ারও বড় একটি অংশ ফেরত পাওয়া যাবে না।

তবে বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমরাও প্রস্তুত ছিলাম না। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের কারণে শুধু বাংলাদেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বিশ্বের সব রাষ্ট্র থেকে ওমরা ও ভিজিটরদের সউদী আরব প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের টাকা যাতে ফেরত আনা যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক।

এ বিষয়ে সউদী আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, সউদী সরকার নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের মানতে হবে। কবে ওমরা যাত্রীরা পুনরায় সউদীতে ঢোকার সুযোগ পাবেন, সেটা দেশটির সরকারের ওপর নির্ভর করছে।

প্রায় অভিন্ন তথ্য দিয়ে হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়ে ওমরা যাত্রী ও মসজিদে নববী ভ্রমণকারীদের জন্য সউদী আরব প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সউদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। আকস্মিক এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন সকালে সউদী দূতবাসের সঙ্গেও কথা বলেছি। যাদের ভিসা আছে তারা যেতে পারবেন কিনা বিষয়টি অস্পষ্ট। সকালে বিমানবন্দরে যেসব যাত্রী গেছেন সবাই অপেক্ষমাণ আছেন, কারও বোর্ডিং পাস হয়নি। আপাতত মনে হচ্ছে, ভিসা তো নতুন করে ইস্যু হবেই না। যাদের ভিসা করা আছে তারাও যেতে পারবেন না।
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার এএইচএম তৌহিদ-আল-আহসান বলেন, ওমরা যাত্রীরা সউদীতে ঢুকতে পারবেন না বলে শুনেছি। তাই তাদের বাংলাদেশেই রাখা হচ্ছে। বিমানবন্দর এপিবিএন সূত্র জানায়, সকাল থেকে অনেকেই ওমরা করার প্রস্তু নিয়ে এসে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কেউ আবার বিমানবন্দরেই অবস্থান করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ